HS Bengali Project Narayan Debnath.
সাহিত্য সৃষ্টি ও বাংলা সাহিত্যে নারায়ণ দেবনাথের অবদান -
Narayan Debnath Bengali Project Work for class 11 and 12.
নির্বাচিত সাহিত্যিকদের সাহিত্য অবদান সম্পর্কিত প্রকল্প নির্মাণ -
সাহিত্য সৃষ্টি ও বাংলা সাহিত্যে নারায়ণ দেবনাথের অবদান -
ভূমিকা -
বাংলা সাহিত্য ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে প্রতিটি সাহিত্যিকের লেখনীর ছোঁয়ায়। প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যার বিচারে সাহিত্যিকের প্রতিভা , মনন বা অবদান এর মূল্যায়ন করা যায় না। তাঁদের রচনার বৈশিষ্টেই চিত্রিত হয় সাহিত্যের ক্ষেত্রে তাঁদের অসামান্য অবদানের কথা। দ্বাদশ / একাদশ - শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের প্রকল্প হিসেবে এখানে নারায়ণ দেবনাথের সাহিত্য অবদানের কথা আলোচনা করা হলো।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য -
যে সকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি রূপায়িত হয়েছে সেগুলি হলো -
১. বাংলা সাহিত্যে নারায়ণ দেবনাথের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানার্জন।
২.বাংলা সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে নারায়ণ দেবনাথের রচনা শৈলী ও বিশিষ্টতা অনুধাবন।
৩.নারায়ণ দেবনাথের রচনাবলী বাংলা সাহিত্য ও জনজীবনে কিরূপ প্রভাব বিস্তার করেছে সে সম্পর্কে অনুসন্ধান।
৪.বর্তমান সমসাময়িক কালে নারায়ণ দেবনাথের রচনাগুলি কতটা প্রাসঙ্গিক - সে সম্পর্কে আলোচনা করা।
৫.নারায়ণ দেবনাথের রচনা গুলি ছাত্রসমাজের উপর কিরূপ প্রভাব বিস্তার করেছে এবং ছাত্র জীবনে তার গুরুত্ব নির্ধারণ করা।
প্রকল্পের বর্ণনা - সাহিত্য সৃষ্টি ও বাংলা সাহিত্যে নারায়ণ দেবনাথের অবদান :-
সাহিত্যিক নারায়ণ দেবনাথ বাংলা সাহিত্যে মূলতঃ কার্টুন শিল্পী হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু তাঁর সৃষ্ট হাঁদা - ভোঁদা , বাটুল বা বাহাদুর বেড়াল বা গোয়েন্দা কৌশিক - শুধুমাত্র কার্টুন জগতেই সীমাবদ্ধ নেই। বাঙালি তথা ভারতবাসীর সাহিত্য তৃষ্নার নিবারণ ঘটিয়ে তিনি সহজ ও চমকপ্রদভাবে চরিত্রগুলির উপস্থাপনের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে পুষ্ট করেছেন।২০১৩ সালে তিনি '' সাহিত্য একাডেমী '' ও '' বঙ্গবিভূষণ '' সম্মানে ভূষিত হন।একনজরে নারায়ণ দেবনাথ সৃষ্ট চরিত্র সমূহ -
# হাঁদা - ভোঁদা - ১৯৬২ থেকে শুকতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে।# বাটুল দি গ্রেট - ১৯৬৫ থেকে শুকতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে।
# নন্টে - ফন্টে - ১৯৬৯ থেকে কিশোর -ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে।
# গোয়েন্দা কৌশিক - ১৯৭৬ থেকে শুকতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে।
# বাহাদুর বেড়াল - ১৯৮৩ থেকে শুকতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে।
# ডানপিটে খাদু আর তার কেমিক্যাল দাদু - ১৯৮৩ থেকে ' ছোটদের আসরে ' পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়ে আসছে।
নারায়ণ দেবনাথ কমিকস সমগ্র -
'' নারায়ণ দেবনাথ কমিকস সমগ্র '' গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে। প্রকাশক - লালমাটি পাবলিকেশন। চারটি খন্ডে বিভক্ত এই কমিকস সমগ্রটিতে নারায়ণ দেবনাথের বিগত ৫০ বছরের অমর সৃষ্টিদের একসঙ্গে স্থান দেওয়া হয়েছে। নারায়ণ দেবনাথের এই আজীবন সৃষ্টির জন্য এই কমিকস সমগ্রটির পরিপ্রেক্ষিতে সাহিত্য একাডেমির প্রশাসনিক কমিটি ২০১৩ সালে তাঁকে '' বাল সাহিত্য পুরস্কার '' এ ভূষিত করে।
প্রথম জীবন -
নারায়ণ দেবনাথ জন্মগ্রহণ করেন হাওড়া জেলার শিবপুরে। জীবনের প্রায় পুরো সময়টাই তিনি এখানে কাটিয়েছেন। যদিও তাঁদের পারিবারিক স্বর্ণ ব্যবসা ছিল ; তবুও তিনি চিত্রকলা শেখার জন্য '' ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ '' - এ ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে তিনি তাঁর পুরো পাঠ সম্পূর্ণ করতে পারেন নি। কলেজের শেষ বর্ষ থেকেই তিনি বিভিন্ন বিজ্ঞাপন এজেন্সির পক্ষ থেকে প্রচুর কাজ পেতে থাকেন এবং একটা সময় পর্যন্ত তিনি চলচিত্রের পোস্টারের ছবি , লোগো - ইত্যাদি তৈরিতে ব্যাস্ত থাকেন।
দেব - সাহিত্য কুটির ; নারায়ণ দেবনাথের জীবনের নতুন অধ্যায় -
১৯৫০ সালে তিনি দেব সাহিত্য কুটিরের সাথে পরিচিত হন। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন গল্প উপন্যাসের ছবি এঁকেছিলেন। কিন্তু এই ১৯৬২ সাল থেকেই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তাঁর সৃষ্ট এবং রচিত '' হাঁদা - ভোঁদা '' - র প্রথম প্রকাশ ঘটে দেব সাহিত্য কুটিরের '' শুকতারা '' নামক পত্রিকাতে। এই কমিক চরিত্রটি অভাবনীয় সাফল্য লাভ করে এবং শুকতারার প্রতিটি সংখ্যায় এটি চাপা হতে থাকে। তারপর তাঁর হাতেই জন্ম নেয় বাংলা কমিকসের জগতের প্রথম সুপার হিরো - বাটুল দি গ্রেট। এই কমিক চরিত্রটিও অসম্ভব জনপ্রিয় হয় এবং আজও শুকতারার প্রতিটি সংখ্যায় বাঁটুলের ১ টি নতুন কীর্তি ছাপা হয়।কিশোর ভারতী ও নারায়ণ দেবনাথ -
এরপর তিনি কিশোর ভারতী নামক পত্রিকাটির সাথে পরিচিত হোন। যখন দীনেশ চন্দ্র চ্যাটার্জী কিশোর ভারতীর সম্পাদক ছিলেন তখন তাকে একটি কমিক চরিত্র তৈরী করতে বলা হয়। সেখানে তিনি দীনেশ চন্দ্র চ্যাটার্জীর লেখা ''কালো হীরে ইন্দ্রজিৎ রায় '' গল্পটির কমিক চরিত্র তৈরী করেন। তারপর তিনি জন্ম দেন '' পটলচাঁদ - দ্য ম্যাজিশিয়ান '' এর। এই কমিক চরিত্রটিও কিশোর ভারতীতে ছাপা হতে থাকে। কিন্তু এই কমিক চরিত্রটি মাত্র তিনটি সংখ্যায় ছাপা হয়। আসলে কিশোর ভারতীয় সম্পাদক হাঁদা - ভোঁদা চরিত্রের মত স্থায়ী জনপ্রিয় চরিত্র খুঁজছিলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণ দেবনাথের হাতে জন্ম নেয় আরো একটি কালজয়ী কমিক চরিত্র '' নন্টে - ফন্টে ''।এই চরিত্রটিও অসম্ভব জনপ্রিয় হয় এবং আজও এটি ছাপা হয়। এছাড়াও তিনি '' টারজানের '' বহু গল্পের কার্টুন এঁকেছেন।রচনাশৈলী -
নারায়ণ দেবনাথের রচনাশৈলী অনন্য ; অন্যান্য সাহিত্যিকদের তুলনায় কিছুটা স্বতন্ত্র। তাঁর রচিত কথোপকথন গুলির মধ্যে ঘরোয়া আড্ডার মেজাজ লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত যে যে শব্দ বা কথাগুলি আমরা প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় ব্যবহার করে থাকি সেই ধরণের উক্তি বা বাচ্য তাঁর রচনাশৈলীর প্রধান বৈশিষ্ট।
রচনাগুলির মধ্যে শিশু ও কিশোর সুলভ গল্প ও তার অগ্রগতি এবং যা সমস্ত বয়সের মানুষকে ছুঁয়ে যায় - এমন ভাষা প্রয়োগ করতেন। একেবারে চরিত্রগুলির শুরু থেকে বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত তাঁর ভাষার নিজস্বতা ও মান কখনো পরিবর্তিত হয় নি।
এছাড়া তাঁর গল্পগুলির মধ্যে ও সেই সঙ্গে সঙ্গে চিত্র বা কার্টুনগুলির মধ্যে অদ্ভুদ এক শক্তি আছে যা আমাদের সহজেই কল্পনার জগতে নিয়ে গিয়ে তার সাথে নিজের একাত্মবোধ জাগিয়ে তোলে।
টেলিভিশন ও ইন্টারনেট-এ নারায়ণ দেবনাথ -
নারায়ণ দেবনাথের প্রায় বেশিরভাগ সৃষ্টিগুলিই বর্তমানে টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে কার্টুন হিসেবে প্রদর্শিত হয় এবং সেগুলি সর্বপ্রকার বয়সের মানুষের মধ্যে সমান জনপ্রিয়। তবে তাঁর কমিকস গুলির মধ্যে টেলিভিশনে সবচেয়ে জনপ্রিয়তালাভ করেছে নন্টে - ফন্টে।
ইন্টারনেট ব্যবস্থায় বাংলা কার্টুনের প্রচলন যদিও খুব কম তবুও নারায়ণ দেবনাথের কার্টুন চরিত্রগুলি ইন্টারনেটে খুব জনপ্রিয়। কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
বর্তমান প্রজন্ম ও নারায়ণ দেবনাথ -
বর্তমান প্রজন্মে যেখানে শৈশব ও কৈশোর দিনে -দিনে অত্যন্ত অসুরক্ষিত ও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সেখানে নারায়ণ দেবনাথের সৃষ্ট চরিত্রগুলির প্রচন্ড জনপ্রিয়তা এ কথা প্রমান করে যে , আজও শিশু ,কিশোর ও আরও অন্যান্য বয়সের মানুষেরা সেই সহজ সরল কল্পনার জগতে ভেসে যেতে পছন্দ করেন। বর্তমান প্রজন্ম যেখানে ইন্টারনেট, ভিডিও গেম - ইত্যাদিতে অত্যন্ত ব্যস্ত সেখানে মানুষ আজও নারায়ণ দেবনাথের সহজ ঘরোয়া ভাষা সমন্বিত অমর চরিত্রগুলিকে আপন করে নিয়েছে। আজও মানুষের কাছে - বাটুল দি গ্রেট , হাঁদা -ভোঁদা ,বাহাদুর বেড়াল , নন্টে ফন্টে - র জনপ্রিয়তা একটুও কমে নি বরং দিনে দিনে এই জনপ্রিয়তা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।পরিশেষে বলা যায় যে , আমাদের মত ছাত্র ছাত্রীদের অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করে নারায়ণ দেবনাথের চরিত্রগুলি। যখন পর্বতসম পঠন পাঠনের চাপ জীবনকে ঘিরে ধরে ; শিক্ষার ইঁদুর দৌড় ও জীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার লক্ষ্যে আমরা সমস্ত রকম ন্যায়- নীতি বোধ ত্যাগ করে অন্ধের মতো স্বীয় লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছি - তখন বাটুল , হাঁদা - ভোঁদা , নন্টে - ফন্টে বা বাহাদুর বেড়াল আমাদেরকে ক্ষনিকের জন্য হলেও শান্তি যোগায় এবং আমাদের জীবনী শক্তিকে অনুপ্রাণিত করে তোলে।
বর্তমান প্রজন্মে অপসংস্কৃতির বিস্তার ঝড়ের গতিতে এগিয়ে চলেছে। ছাত্র ছাত্রীরা ক্রমাগত সেই অপসংস্কৃতির শিকার হয়ে চলেছে। শিশুসুলভ রচনা শিশু ও কিশোর মনকে উজ্জীবিত করে এবং তার কল্পনাশক্তিকে প্রসারিত করে। অন্যদিকে অপসংস্কৃতি শিশু ও কিশোর মনের কল্পনা শক্তিকে বাধাপ্রাপ্ত করে দিয়ে তাকে অশুভ পথে পরিচালিত করে। তাই বর্তমান প্রজন্মে নারায়ণ দেবনাথের সাহিত্য সৃষ্টি তথা তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলি বর্তমান ছাত্রসমাজ ও পাঠকদের অনাবিল আনন্দে ভরিয়ে তুলবে ও তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করবে - একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ -
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে সেগুলি হলো -১. শুধুমাত্র কার্টুন চরিত্রের সৃষ্টিকর্তা হিসাবে নারায়ণ দেবনাথের ভূমিকাকে সীমাবদ্ধ দৃষ্টিতে দেখলে চলবে না। তিনি কার্টুন চরিত্রগুলির মধ্যে দিয়েও বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন।
২. তাঁর সহজ সরল উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে তিনি পাঠকবৃন্দের মন জয় করেছেন।
৩. প্রথম জীবনে নারায়ণ দেবনাথ তথাকথিত সাহিত্য সৃষ্টির প্রতি মনোনিবেশ করেন নি। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল আকর্ষণীয় কার্টুন চরিত্র তৈরী করা এবং তার মধ্যে দিয়ে বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা।
৪. নারায়ণ দেবনাথের পূর্বসূরিরা কেউই সাহিত্য সৃষ্টির সাথে যুক্ত ছিলেন না। তাঁরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন। এই লাভজনক ব্যবসায়ে মনিবেশ না করে সাহিত্য ও কার্টুন জগতে নাম মাত্র আয়ের বিনিময়ে আত্মনিয়োগের ঘটনাটি নারায়ণ দেবনাথের নিঃস্বার্থ সাহিত্য প্রীতির পরিচয় বহন করে।
৫. বর্তমান বাঙালি পাঠকদের মধ্যে নারায়ণ দেবনাথ আজও অসম্ভব জনপ্রিয়। তাঁর সৃষ্টি করা চরিত্রগুলি বয়সের বেড়াজাল পার করে সমস্ত বয়সের পাঠকদের মধ্যে সমাদৃত হয়েছে।
৬. নারায়ণ দেবনাথের রচনাশৈলী অন্যান্য সাহিত্যিকদের তুলনায় কিছুটা স্বতন্ত্র। তাঁর রচিত কথপোকথনগুলির মধ্যে ঘরোয়া আড্ডার মেজাজ লক্ষ্য করা যায়।
৭. সাধারণত যে সকল শব্দ বা ভাষা আমরা প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় ব্যবহার করে থাকি সেই ধরণের উক্তি বা বাচ্য তাঁর রচনাশৈলীর অন্যতম বৈশিষ্ট।
৮. রচনাগুলির মধ্যে শিশু ও কিশোরসুলভ গল্প থাকলেও তা সমস্ত বয়সের মানুষকে সমানভাবে ছুঁয়ে গেছে।
৯. তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলির মধ্যে এমন অদ্ভুত এক ক্ষমতা আছে যা আমাদের সহজেই কল্পনার জগতে নিয়ে গিয়ে তার সাথে নিজেদের একাত্মবোধ গড়ে তোলে।
২. তাঁর সহজ সরল উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে তিনি পাঠকবৃন্দের মন জয় করেছেন।
৩. প্রথম জীবনে নারায়ণ দেবনাথ তথাকথিত সাহিত্য সৃষ্টির প্রতি মনোনিবেশ করেন নি। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল আকর্ষণীয় কার্টুন চরিত্র তৈরী করা এবং তার মধ্যে দিয়ে বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা।
৪. নারায়ণ দেবনাথের পূর্বসূরিরা কেউই সাহিত্য সৃষ্টির সাথে যুক্ত ছিলেন না। তাঁরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন। এই লাভজনক ব্যবসায়ে মনিবেশ না করে সাহিত্য ও কার্টুন জগতে নাম মাত্র আয়ের বিনিময়ে আত্মনিয়োগের ঘটনাটি নারায়ণ দেবনাথের নিঃস্বার্থ সাহিত্য প্রীতির পরিচয় বহন করে।
৫. বর্তমান বাঙালি পাঠকদের মধ্যে নারায়ণ দেবনাথ আজও অসম্ভব জনপ্রিয়। তাঁর সৃষ্টি করা চরিত্রগুলি বয়সের বেড়াজাল পার করে সমস্ত বয়সের পাঠকদের মধ্যে সমাদৃত হয়েছে।
৬. নারায়ণ দেবনাথের রচনাশৈলী অন্যান্য সাহিত্যিকদের তুলনায় কিছুটা স্বতন্ত্র। তাঁর রচিত কথপোকথনগুলির মধ্যে ঘরোয়া আড্ডার মেজাজ লক্ষ্য করা যায়।
৭. সাধারণত যে সকল শব্দ বা ভাষা আমরা প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় ব্যবহার করে থাকি সেই ধরণের উক্তি বা বাচ্য তাঁর রচনাশৈলীর অন্যতম বৈশিষ্ট।
৮. রচনাগুলির মধ্যে শিশু ও কিশোরসুলভ গল্প থাকলেও তা সমস্ত বয়সের মানুষকে সমানভাবে ছুঁয়ে গেছে।
৯. তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলির মধ্যে এমন অদ্ভুত এক ক্ষমতা আছে যা আমাদের সহজেই কল্পনার জগতে নিয়ে গিয়ে তার সাথে নিজেদের একাত্মবোধ গড়ে তোলে।
উপসংহার :-
নারায়ণ দেবনাথের সৃষ্ট চরিত্রগুলির প্রচন্ড জনপ্রিয়তা একথা প্রমান করে যে , এই ব্যাস্ত ইন্টারনেট ও অপসংস্কৃতির যুগে আজও শিশু , কিশোর ও অন্যান্য বয়সের মানুষেরা সেই সহজ ,সরল কল্পনার জগতে ভেসে যেতে পছন্দ করেন। আজ অবধি নারায়ণ দেবনাথের জীবনধারাকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তিনি তাঁর সারা জীবন বাংলা সাহিত্যকে দান করেছেন। অহেতুক জটিল রচনাশৈলীর আশ্রয় গ্রহণ না করে তিনি সাধারণভাবে বিষয়বস্তুর উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে পাঠক বৃন্দের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দের সমাবেশ ঘটিয়েছেন।
নারায়ণ দেবনাথের সৃষ্ট চরিত্রগুলির প্রচন্ড জনপ্রিয়তা একথা প্রমান করে যে , এই ব্যাস্ত ইন্টারনেট ও অপসংস্কৃতির যুগে আজও শিশু , কিশোর ও অন্যান্য বয়সের মানুষেরা সেই সহজ ,সরল কল্পনার জগতে ভেসে যেতে পছন্দ করেন। আজ অবধি নারায়ণ দেবনাথের জীবনধারাকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তিনি তাঁর সারা জীবন বাংলা সাহিত্যকে দান করেছেন। অহেতুক জটিল রচনাশৈলীর আশ্রয় গ্রহণ না করে তিনি সাধারণভাবে বিষয়বস্তুর উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে পাঠক বৃন্দের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দের সমাবেশ ঘটিয়েছেন।