Pages

Powered by Blogger.

Pages

Pages

Pages

facebook twitter instagram pinterest bloglovin Email
Career CLASS 11 (XI) Class XI 1st Semester CLASS XI 2nd Semester H.S. 3rd SEM H.S. 4th SEM H.S. EDUCATION H.S. HISTORY HS SOCIOLOGY HS SUGGESTION INDIAN HISTORY NCERT POLITY PROJECT Sociological Studies Teaching & Education TEST PAPERS SOLVE TEST PAPERS SOLVE 2020 WORLD HISTORY XI EDUCATION XI HISTORY XI POL SC XI SOCIOLOGY XII Bengali XII Sanskrit

Pages

Nandan Dutta

School project and education news.

Pages

বাংলা প্রকল্প : পুঁইমাচা গল্পের নাট্যরূপ। 

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : পুঁইমাচা গল্পের নাট্যরূপ। 


বাংলা প্রকল্প : পুঁইমাচা গল্পের নাট্যরূপ। 

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : পুঁইমাচা গল্পের নাট্যরূপ। 


চরিত্রবর্গ :- 
সহায়হরি 
অন্নপূর্ণা 
ক্ষেন্তি 
পুঁটি 
রাধী 
কালীময়
সদ্য বিবাহিত পাত্র 
ঠানদিদি 
কয়েকজন গ্রামবাসী   
বিষ্ণু সরকার 

প্রথম দৃশ্য :-

মঞ্চসজ্জা : মঞ্চে একটি সাধারণ গ্রামীণ পরিবারের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে হবে। মঞ্চে সর্বপ্রকার আধুনিকতা বর্জন করতে হবে। একটি তক্তপোশ বা খাটিয়া , দড়ির উপর ইতস্ততঃ জামা - কাপড় মেলা আছে। সাধারণ কিছু আসবাব এদিক - ওদিক ছড়িয়ে আছে। অন্নপূর্ণা মাটিতে বসে চুলে তেল মাখছেন। সহায়হরি মঞ্চে প্রবেশ করলেন। 

সহায়হরি ( স্ত্রী অন্নপূর্ণার উদ্দেশ্যে ) : একটা বড় বাটি কি ঘটি যা হয় কিছু দাও তো , তারক খুড়ো গাছ কেটেছে , একটু ভাল রস আনি। 

[ অন্নপূর্ণা সহায়হরির দিকে বড় বড় চোখ করে রাগত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন এবং নিজের চুল বাঁধতে শুরু করলেন ; কিন্তু সহায়হরির আদেশ পালন করার জন্য কোনো উদ্যোগ দেখালেন না। ] 

সহায়হরি : কি হয়েছে , বসে রইলে যে ? দাও না একটা ঘটি ! আঃ , ক্ষেন্তি - টেন্তি সব কোথায় গেল এরা ? তুমি তেল মেখে বুঝি ছোঁবে না ? 

[ অন্নপূর্ণা হঠাৎ করে চুল বাঁধা থামিয়ে আবার সহায়হরির দিকে প্রচন্ড রাগত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন। কিছুক্ষন কোনো কথা বললেন না। তাঁর এই রূপ দেখে সহায়হরি একটু যেন ঘাবড়ে গেলেন। ] 

অন্নপূর্ণা : ( শান্ত কিন্তু তীক্ষ্ণ স্বরে ) - তুমি মনে মনে কী ঠাউরেছ বলতে পার ? 

সহায়হরি : ( থতমত খেয়ে এবং আমতা আমতা করে ) - কেন  ......... কি আবার  .......... কি  ........  

অন্নপূর্ণা : দেখ , রঙ্গ কোরো না বলছি। ন্যাকামি করতে হয় অন্যসময় কোরো। তুমি কিছু জান না ? কি খোঁজ রাখ না ? অত বড় মেয়ে যার ঘরে , সে মাছ ধরে আর রস খেয়ে দিন কাটায় কি করে তা বলতে পার ? গাঁয়ে কি গুজব রটেছে জান ? 

সহায়হরি ( আশ্চর্য হয়ে ) : কেন ? কী গুজব ? 

অন্নপূর্ণা ( মুখ ঝামটা দিয়ে ) : কী গুজব জিজ্ঞাসা করো গিয়ে চৌধুরীদের বাড়ি। কেবল বাগদী , দুলে পাড়ায় ঘুরে ঘুরে জন্ম কাটালে ভদ্দরলোকের গাঁয়ে বাস করা যায় না। সমাজে থাকতে হলে সেই রকম মেনে চলতে হয়। [ কিছুক্ষণ নিজের চুল নিয়ে আবার ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন ] একঘরে করবে গো , আমাদের একঘরে করবে। কাল চৌধুরীদের চন্ডীমন্ডপে এসব কথা হয়েছে। 

সহায়হরি : তাই না'কি ! 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

অন্নপূর্ণা : আশীর্বাদ হয়ে মেয়ের বিয়ে হলো না  ............ ও নাকি উচ্ছুগ্গু করা মেয়ে  ............ গাঁয়ের কোন কাজে তোমাকে আর কেউ বলবে না  ........... যাও ভালোই হয়েছে তোমার। এখন গিয়ে দুলে বাড়ি , বাগদী বাড়ি উঠে - বসে দিন কাটাও। 

সহায়হরি ( তাচ্ছিল্যের স্বরে ) : এই ! আমি বলি , না জানি কী ব্যাপার ! একঘরে ! একঘরে করবে ওই কালীময় ঠাকুর ! ওঃ ! 

অন্নপূর্ণা ( তেলে - বেগুনে জ্বলে উঠে ) : কেন , তোমাকে একঘরে করতে বেশি কিছু লাগে নাকি ? তুমি কি সমাজের মাথা , না একজন মাতব্বর লোক ? চাল নেই , চুলো নেই , এক কড়ার মুরোদ নেই , চৌধুরীরা তোমায় একঘরে করবে তা আর এমন কঠিন কথা কি ? 

[ একটু গলা নামিয়ে ] ক্ষেন্তির বয়স তো পনের বছর হল ; বাইরে কমিয়ে বলে বেড়ালে কি হবে , লোকের চোখ নেই ? 

[ পুনরায় মুখ ঝামটা দিয়ে ] না আছে বিয়ে দেবার গা , না কিছু ! আমি কি যাব পাত্তর ঠিক করতে ?  

সহায়হরি : বলি , তোমার কি বুদ্ধি হরে গেছে ? কালীময় যে পাত্র ঠিক করে দিয়েছিল তার কথা মনে নেই ? বলি , বিয়ে কি আমি সাধ করে ভেঙে দিয়েছি ? সেই পাত্র এক কুম্ভকার বধূ ও তার আত্মীয় স্বজনদের হাতে বেদম প্রহার খেল। এমন দুশ্চরিত্র পাত্রের সঙ্গে কি কেউ মেয়ের বিয়ে দেয় ? 

[ এরপর সহায়হরি নিজেই একটু এগিয়ে এসে একটি বড় বাটি নিয়ে নিলেন। ] 

সহায়হরি : যাই , এই বড় বাটি ভর্তি রস আনিগে। 

[ এমন সময় ক্ষেন্তি , পুঁটি ও রাধী প্রবেশ করল। বড় মেয়ে অর্থাৎ ক্ষেন্তির হাতে পাতা জড়ানো কিছু একটা ; ছোট মেয়ে অর্থাৎ রাধীর হাতে অনেকটা পুঁই শাক। ] 

সহায়হরি : ( মেয়েদের হাতের পুঁই শাক ও পাতার মোড়ক লক্ষ্য করে ) - এ সব কি রে ? ক্ষেন্তি মা , এসব কোথা থেকে আনলি ?    

ক্ষেন্তি ( পাতার মোড়কটি খুলে মেলে ধরে ) : চিংড়ি মাছ , বাবা। গয়া বুড়ির কাছ থেকে রাস্তায় নিলাম , দিতে চায় না , বলে - তোমার বাবার কাছে আর - দিনের দু'টো পয়সা বাকি আছে। আমি বললাম - দাও গয়া পিসি , আমার বাবা কি তোমার দু'টো পয়সা নিয়ে পালিয়ে যাবে ! ............... আর এই পুঁই শাকগুলো ঘাটের ধারে রায় কাকা দিয়ে বললে , নিয়ে যা  ........... 

অন্নপূর্ণা ( ঝাঁঝের সঙ্গে ) : উমম  .... নিয়ে যা  ......... আহা কি অমর্তই তোমাকে তারা দিয়েছে ! পাকা পুঁই ডাঁটা কাঠ হয়ে গিয়েছে , দু'দিন পরে ফেলে দিত  ......... নিয়ে যা  ......... আর উনি আগাছা উঠিয়ে নিয়ে এসেছেন  .......... ভালোই হয়েছে , তাদের আর নিজেদের কষ্ট করে কাটতে হলো না  ........... যত পাথুরে বোকা সব এসে জুটে আমার ঘাড়ে। ........ 

সহায়হরি : আহা এমন করে বলার কী আছে ? ও কি আর অত জেনে বুঝে  ........ বাচ্চা মেয়ে  ........ 

অন্নপূর্ণা : তুমি থামো  ........ বাচ্চা মেয়ে  ......... বিয়ে হলে যে চার ছেলের মা হত ! খাওয়ার নামে আর জ্ঞান থাকেনা। একজন সারাদিন ধরে কোথায় শাক , কোথায় বেগুন করে বেড়াচ্ছেন এবং আরেকজন কোথায় রস , কোথায় ছাই , কোথায় পাঁশ করে বেড়াচ্ছেন। ( মেয়েদের উদ্দেশ্যে ) ফেল , ফেল বলছি ওসব  ...... ফেল। 

[ ভয়ে মেয়েদের হাত থেকে পুঁই শাক পড়ে গেল। ] 

অন্নপূর্ণা : যা তো রাধী , ও আপদগুলো টেনে খিড়কীর পুকুরের ধারে ফেলে দিয়ে আয় তো  ........... ফের যদি বাড়ির বার হতে দেখেছি , তবে ঠ্যাং খোঁড়া না করি তো  ............. । 

[ রাধী পড়ে যাওয়া পুঁই শাকগুলিকে গুছিয়ে নিয়ে প্রস্থান করতে উদ্যত। ] 

সহায়হরি ( আমতা আমতা করে ) : তা থাক না , এনেছে ছেলেমানুষ খাবে বলে  ........ তুমি আবার  ........ 

[ রাধী আশা নিয়ে থমকে দাঁড়াল। একবার বাবার দিকে , একবার মায়ের দিকে তাকাল। ] 

অন্নপূর্ণা ( ঠান্ডা মেজাজে ) : না ,না , নিয়ে যা , খেতে হবে না  ........ মেয়ে মানুষের আবার অত নোলা কিসের ! যা , যা ফেলে দিয়ে আয়। 

[ রাধী বাবার দিকে তাকাল। বাবা মাথা নীচু করে নিলেন। আর কোনো আশার কারণ নেই দেখে রাধী ধীরে ধীরে মঞ্চ থেকে প্রস্থান করল। আলো ধীরে ধীরে কমে এল। ]    

দ্বিতীয় দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : প্রথম দৃশ্যে উপস্থিত সকল প্রকার আসবাবগুলিকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এই দৃশ্যে মঞ্চ সম্পূর্ণ ফাঁকা থাকবে। তবে , বেশ কয়েকজনের বসার জন্য বেঞ্চ , তক্তপোশ বা খাটিয়া - এই ধরণের কিছু উপকরণ রাখতে পারলে ভাল হয়। 

[ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী সহ কালীময় মঞ্চে উপবিষ্ট। তাঁরা নিজেদের মধ্যে কিছু কথাবার্তা বলছেন। ধীরে ধীরে মঞ্চে সহায়হরির প্রবেশ। সকলের লক্ষ্য তাঁর দিকে। ] 

কালীময় : আরে , আরে , .......... সহায়হরি যে  ........... এস এস ভায়া , এদিকে এস। তা আছ কেমন ? 

সহায়হরি ( আমতা আমতা করে ) : এই আছি একরকম  ......... ঈশ্বর যেমন রেখেছেন। 

কালীময় : আর আমাদের ভাল থাকা ! সেই সব ভাল থাকার দিন কি আর আছে ভায়া ! এই  ......... এই যেমন ধর , কেষ্ট মুখুয্যে  ........... স্বভাব নইলে পাত্র দেব না করে কী কান্ডটাই করলে  .......... অবশেষে কিনা হরির ছেলেটাকে ধরে পড়ে মেয়ের বিয়ে দেয় , তবে রক্ষে ! তার কী স্বভাব ? রাম বলো , ছ'সাত পুরুষে ভঙ্গ , পচা শ্রোত্রিয় ! 
[ একটু সুর নরম করে ] 
তা সমাজের সে - সব শাসনের দিন কি আর আছে ? দিন দিন চলে যাচ্ছে। বেশি দূর যাই কেন , এই  ...... এই যে তোমার মেয়েটি তেরো বছরের  ............ 

সহায়হরি ( কালীময়কে বাধা দিয়ে ) : এই শ্রাবনে তেরোয়  .......... 

কালীময় ( সহায়হরিকে থামিয়ে দিয়ে ) : আহা - হা , তেরোয় আর ষোলোয় তফাৎ কীসের শুনি ? আর সে তেরোই হোক , চাই ষোলোই হোক , চাই পঞ্চাশই হোক , তাতে আমাদের দরকার নেই , সে তোমার হিসেবে তোমার কাছে। কিন্তু পাত্তর আশীর্বাদ হয়ে গেল , তুমি বেঁকে বসলে কী জন্য শুনি ? ও তো এরকম উৎসর্গ করা মেয়ে। আশীর্বাদ হওয়াও যা বিয়ে হওয়াও তা , সাত পাকের যা বাকি , এই তো ? ........ সমাজে বসে এসব কাজগুলো তুমি যে করবে আর আমরা বসে বসে দেখব - এ তুমি মনে ভেবো না। সমাজের বামুনদের যদি জাত মারবার ইচ্ছে না থাকে , মেয়ের বিয়ের বন্দোবস্ত করে ফেল। 
[একটু থেমে , রাগে গজগজ করতে করতে ]
পাত্তর - পাত্তর  ......... রাজপুত্তর না হলে পাত্তর মেলে না ? গরীব মানুষ , দিতে - থুতে পারবে না বলেই শ্রীমন্ত মজুমদারের ছেলেকে ঠিক করে দিলাম। লেখাপড়া নাই বা জানলো , জজ মেজেস্টার না হলে কি মানুষ হয় না ? দিব্যি বাড়ী বাগান পুকুর , শুনলাম এবার নাকি কুঁড়ির জমিতে চাট্টি আমন ধানও করেছে , ব্যাস - রাজার হাল ! দুই ভায়ের অভাব কী ? 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

সহায়হরি ( আমতা আমতা করে , কিন্তু দৃঢ়ভাবে ) : না কালীময় , অমন দুশ্চরিত্র পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া সঙ্গত নয়। 

কালীময় : দুশ্চরিত্র ! কীভাবে জানলে তুমি যে পাত্র দুশ্চরিত্র ? 

সহায়হরি : কে না জানে ! তোমার শ্রীমন্ত মজুমদারের ছেলে ওই কুম্ভকার বধূর আত্মীয়দের কাছে বেদম প্রহার খেয়েছিল কেন - তা বলতে পার ? 

কালীময় ( থমকে গেলেন ; কিন্তু প্রসঙ্গ পাল্টে অত্যন্ত মেজাজের সঙ্গে ) : আমরা অতশত বুঝিনে বাপু , তুমি তোমার বড় মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা কর - এই হল আমাদের সকলের কথা। 
[ মঞ্চ থেকে প্রস্থান করতে করতে ] 
এই গ্রামে থেকে এমন অনাচার আমরা সইবো না , এত বড় ধিঙ্গি মেয়ে  ...... তার বিয়ে না দিয়ে বাড়িতে বসিয়ে রাখে  ......... কেমন বাপ্ রে বাবা ! 

[ কালীময় প্রস্থান করলেন। অন্যান্য সকলে সহায়হরিকে ঘিরে গুঞ্জন শুরু করল। সহায়হরি মাথা নীচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল। ] 

তৃতীয় দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : প্রথম দৃশ্যের অনুরূপ। 

[ সহায়হরি মঞ্চের সম্মুখে উপবিষ্ট। একমনে কিছু একটা করতে ব্যাস্ত। ক্ষেন্তি চুপি চুপি মঞ্চে প্রবেশ করে। সহায়হরির দিকে এগিয়ে যায়। খুব সচেতন হয়ে চারিদিক দেখে নেয় একবার। ] 

ক্ষেন্তি : বাবা , যাবে বরোজপোতার জঙ্গলে ? মা ঘাটে গেল  .............. । 

সহায়হরি ( সন্তর্পনে চারদিকে দৃষ্টি বুলিয়ে ; নিম্নস্বরে ) : যা শিগগির , শাবলখানা নিয়ে আয় দিকি !  

[ সহায়হরি আরেকবার সন্তর্পনে চারদিকে দৃষ্টি বুলিয়ে নেয়। ইতিমধ্যে ক্ষেন্তি দৌড়ে গিয়ে চৌকির তলা থেকে একটি শাবল বের করে এনে সহায়হরির হাতে দেয়। সহায়হরি ক্ষেন্তিকে ইশারা করে। দুজনে মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যায়। মঞ্চ অন্ধকার হয়ে আসে। দু - এক মুহূর্ত পর আবার আলো জ্বলে ওঠে। এবার মঞ্চে অন্নপূর্ণা উপস্থিত। একটি বালতির মধ্যে কিছু কাপড়। অন্নপূর্ণা সেই বালতি থেকে কাপড় গুলিকে একটি একটি করে তোলে এবং একটি দড়ির উপর মেলতে থাকে। ] 

অন্নপূর্ণা (রাগে গজগজ করতে করতে ) : এই সকাল সকাল বাপ - মেয়েতে কোথায় যে গেল ! কোনো কান্ডজ্ঞান নেই। যেমন বাবা তার তেমন মেয়ে। 

[ অন্নপূর্ণার এইসব কথার মাঝেই সহায়হরি ও ক্ষেন্তি দ্রুতপায়ে মঞ্চে প্রবেশ করে। হাতে একটি বড় আকারের মেটে - আলু। কিন্তু মঞ্চে প্রবেশ করেই তারা থতমত খেয়ে যায় অন্নপূর্ণাকে দেখে। অন্নপূর্ণা অগ্নিমূর্তিতে সহায়হরি ও ক্ষেন্তির দিকে তাকিয়ে। ] 

অন্নপূর্ণা ( অত্যন্ত কড়া গলায় ) : এই সকাল সকাল বাবা মেয়েতে কোন ষড়যন্ত্র করছ শুনি ? ক্ষেন্তি  ....... হাতে ওটা কী ? 

সহায়হরি ( ক্ষেন্তিকে আড়াল করে ) : ও , ওটা ! ........ ওটা তো মেটে আলু। ...... ওই ও পাড়ার ময়শা চৌকিদার রোজই বলে - কর্তা ঠাকুর , তোমার বাপ থাকতে তবু মাসে মাসে এদিকে তোমাদের পায়ের ধুলো পড়ত , তা আজকাল তো তোমরা আর আস না , এই বেড়ার গায়ে মেটে আলু করে রেখেছি , তা দাদাঠাকুর বরং  ............. 

অন্নপূর্ণা ( সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে ) : বটে , চৌকিদার দিয়েছে ? চৌকিদার কি তোমাদের শাবল নিয়ে যেতে বলেছিল ? [ ক্ষেন্তি খুব ভয় পেয়ে হাতের শাবলটি আড়াল করার চেষ্টা করে ] কী রে ক্ষেন্তি , কোথায় গিয়েছিলি - সত্যি করে বলতো ? ওই বরোজপোতার জঙ্গলে ? 

সহায়হরি ( অন্নপূর্ণার কথাতে যেন আকাশ থেকে পড়ল ) : বরোজপোতার জঙ্গলে ? কক্ষনো না। বললাম তো চৌকিদার  .......... 

অন্নপূর্ণা ( সহায়হরিকে থামিয়ে দিয়ে ) : থাক , তিন কাল গিয়েছে এক কাল আছে , মিথ্যা কথাগুলো আর এখন বোলো না। আমি সব জানি। মনে ভেবেছিলে আপদ ঘাটে গিয়েছে আর কি  .......... তা তুমি বরোজপোতার জঙ্গলে মেটে আলু চুরি করতে গিয়েছিলে - যাও ; কিন্তু মেয়েটাকে আবার এর মধ্যে নিয়ে গিয়ে ওর মাথা খাওয়া কিসের জন্য ? 
[একটু থেমে ] 
ক্ষেন্তি এদিকে আয়। 
[ক্ষেন্তি অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে অন্নপূর্ণার দিকে এগিয়ে যায় ] 
এই মেটে আলুটা দুজনে মিলে তুলে এনেছিস না ? 
[ ক্ষেন্তি চুপ করে থাকে ] 
কথা বলছিস নে যে বড় ? এই মেটে আলু তুই তুলে এনেছিস কি না ? 

ক্ষেন্তি ( মৃদুস্বরে ) : হ্যাঁ। 

অন্নপূর্ণা ( তেলে - বেগুনে জ্বলে উঠে ) : পাজী , আজ তোমার পিঠে আমি আস্ত কাঠের চেলা ভাঙব তবে ছাড়ব। বরোজপোতার বনে গিয়েছে মেটে আলু চুরি করতে ! সোমত্ত মেয়ে , বিয়ের যুগ্যি হয়ে গেছে কোন কালে , ........... সেই একগলা বিজন বন , যার মধ্যে দিনদুপুরে বাঘ লুকিয়ে থাকে , তা মধ্যে থেকে পরের আলু নিয়ে এল তুলে ? যদি গোঁসাইরা চৌকিদার ডেকে তোমায় ধরিয়ে দেয় ? তোমার কোন শ্বশুর এসে তোমায় বাঁচাত ? আমার জোটে খাব , না জোটে না খাব , তা বলে পরের জিনিসে হাত ? এ মেয়ে আমি কী করব মা ? .......... [ কপাল চাপড়াতে থাকে ]    

চতুর্থ দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : প্রথম দৃশ্যের অনুরূপ।  

[ মঞ্চে অন্নপূর্ণা , ক্ষেন্তি , পুঁটি ও রাধী উপস্থিত। ক্ষেন্তি নারকেল কুড়ছে। অন্নপূর্ণা একটি  মাটির হাঁড়িতে পিঠে তৈরী করছেন ও ময়দার গোলা মাখছেন। ]

পুঁটি ( ডানহাত সামনের দিকে এগিয়ে দিয়ে ) : মা আমায় একটু ক্ষীর দেবে ? 

রাধী ( সে'ও পুঁটির দেখাদেখি তার হাত মায়ের দিকে বাড়িয়ে দেয় ) : মা , আমাকেও একটু ! 

[ অন্নপূর্ণা দুজনকেই ছোট ছোট বাটিতে করে ক্ষীর দিলেন। ] 

অন্নপূর্ণা : ক্ষেন্তি মা , তোকে একটু দিই ! 

[ ক্ষেন্তির সম্মতির অপেক্ষা না করেই অন্নপূর্ণা ক্ষেন্তিকেও একটি বাটিতে করে ক্ষীর দিলেন। ] 

পুঁটি : জেঠাইমারা অনেকখানি দুধ নিয়েছে , রাঙাদিদি ক্ষীর তৈরী করছিল , ওদের অনেক রকম হবে। 

ক্ষেন্তি : হ্যাঁ , ও-বেলা ওদের তো পায়েস , ঝোল - পুলি , মুগতক্তি - এইসব হয়েছে। ওরা তো নেমন্তন্নও করেছিল সুরেশ কাকাকে আর ও - পাড়ার তিনুর বাবাকে। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

অন্নপূর্ণা ( খুন্তি দিয়ে হাঁড়ির ভেতর জোরে নাড়াতে নাড়াতে ) : ওরে , তোরা সব এক এক টুকরো পাতা পেতে বোস তো দেখি , গরম গরম দিই। 

[ ঠিক এই সময় সহায়হরি মঞ্চে প্রবেশ করলেন। মন উৎফুল্ল। ] 

সহায়হরি : এই শুনছো ক্ষেন্তির মা , খুব ভাল একটা খবর নিয়ে এসেছি। 

অন্নপূর্ণা ( মেয়েদেরকে পিঠে পরিবেশন করতে করতে ) : তা কী এমন ভাল খবর শুনি ? 

সহায়হরি ( উচ্ছাসের সঙ্গে ) : ক্ষেন্তির বিয়ে ঠিক করে এলাম গো  .......... 

অন্নপূর্ণা (অবাক হয়ে ) : বলো কী ! বিয়ে ! সত্যি ! ( আনন্দিত ) 

সহায়হরি : তাহলে আর বলছি কি ! শোনো , শহরে আমাদের যে দূর সম্পর্কের আত্মীয় আছে না , তার ঘটকালিতেই বিয়ে ঠিক করে ফেললাম। 

অন্নপূর্ণা : তা  ..... পাত্রের পরিচয় ? 

সহায়হরি : পাত্রের বয়স চল্লিশের বেশি নয়। তবে  .........

অন্নপূর্ণা : তবে ? 

সহায়হরি : পাত্রের এটি দ্বিতীয় পক্ষ। 

অন্নপূর্ণা : না , না , দ্বিতীয় পক্ষের পাত্রে মেয়ে দেওয়ার ইচ্ছে আমার নেই। 

সহায়হরি : আরে , অমত কোরো না। পাত্রটি বেশ সঙ্গতিসম্পন্ন। শহর অঞ্চলে বাড়ি , চুন ও ইটের ব্যবসায়ে বেশ পয়সা করেছে। এমন পাত্র হঠাৎ করে পেতে কপালের জোর লাগে। 

অন্নপূর্ণা : দেখো , যা ভালো বোঝো করো।         

পঞ্চম দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : মঞ্চ সম্পূর্ণ ফাঁকা থাকবে। অথবা , নাট্যপরিচালক নিজ ইচ্ছানুযায়ী বিবাহের আবহ তৈরী করতে পারেন। 

[ মঞ্চে সহায়হরি এবং তাঁর পরিবারের সকলে , ক্ষেন্তির সঙ্গে সদ্য বিবাহিত পাত্র - উভয়ই বিবাহের সাজে। সেইসঙ্গে ঠানদিদি উপস্থিত। সকলের মধ্যে খুশি ও ক্ষেন্তির বিদায়ের কষ্ট মিশ্রিত এক ভাব। ] 

সহায়হরি : যাক , বিয়ে সুসম্পন্ন হল। এবার তোমরা দুজনে ভালো থেকো ; দুজনে দুজনের পাশে থেকো। 

অন্নপূর্ণা ( ক্ষেন্তিকে আলিঙ্গন করে ) : ভালো থাকিস মা , এই গরীব মা'কে ভুলে যাসনে কিন্তু ! ওখানে একটু গোছানো হয়ে গেলে আসিস একবার। 

ক্ষেন্তি ( আলিঙ্গন মুক্ত করে ) : মা , আষাঢ় মাসেই আমাকে এনো  ......  বাবাকে পাঠিয়ে দিও  .......... দু'টো মাস তো  ........ 

ঠানদিদি ( রসিকতা করে ) : তোর বাবা বাড়ী কেন যাবে রে , আগে নাতি হোক - তবে তো  .......... 

ক্ষেন্তি ( লজ্জায় রাঙা হয়ে ) : থামো তো তুমি  ........... 

সহায়হরি ( জামাইয়ের হাত ধরে ) : একটু মানিয়ে গুছিয়ে নিও বাবা ; যেটুকু পেরেছি - শিক্ষে দিয়েছি। কোনো অসুবিধে হলে বোলো। 

জামাই ( সহায়হরির হাত ধরে আস্বাসের সঙ্গে ) : আপনি কোনো চিন্তা করবেন না বাবা , ও'কে আমি ভালো রাখবো। 

[ জামাই ও ক্ষেন্তি অন্নপূর্ণা ও সহায়হরিকে প্রণাম করে ] 

জামাই : আসি তবে মা  .......... 

[ ক্ষেন্তি ও জামাই ধীরে ধীরে মঞ্চ পরিত্যাগ করে। ক্ষেন্তি বারবার মুখ ঘুরিয়ে পেছনে ফিরে দেখতে থাকে। অন্নপূর্ণা ও সহায়হরিও সেই দিকে তাকিয়ে থাকে। আলো ধীরে ধীরে কমে আসে। ] 

ষষ্ঠ দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : প্রথম দৃশ্যের অনুরূপ। 

[ ক্ষেন্তি বাদে সহায়হরির পুরো পরিবার মঞ্চে উপস্থিত। সহায়হরি উদাস মনে তামাক সেবন করছেন। মঞ্চে বিষ্ণু সরকারের প্রবেশ। ] 

বিষ্ণু সরকার : সহায়হরি , ও সহায়হরি  ....... বাড়িতে আছ না'কি হে ? 

সহায়হরি ( নিরুত্তাপ কণ্ঠে ) : ও বিষ্ণু , এস , বস। 

[ বিষ্ণু সরকার খাটিয়ার একপাশে বসে পড়ে। ] 

বিষ্ণু : তোমার মেয়েটির হয়েছিল কী ? 

সহায়হরি : বসন্ত হয়েছিল শুনলাম। [ একটু থেমে ] ব্যাপার কি দাঁড়াল , বুঝলে ? মেয়ে তো কিছুতে পাঠাতে চায় না। আড়াইশো টাকা আন্দাজ বাকি ছিল , বললে , ও টাকা আগে দাও , তবে মেয়ে নিয়ে যাও। 

বিষ্ণু : এ - তো একেবারে চামার  ........ 

সহায়হরি : তারপর বললাম , টাকাটা ক্রমে ক্রমে দিচ্ছি। শুনেই ওরা মেয়ের নানারকম নিন্দে শুরু করল। পৌষ মাসেও দেখতে গেলাম , মেয়েটাকে ফেলে থাকতে পারতাম না বুঝলে  ........ 

[ কিছুক্ষন দুজনেই চুপ ] 

বিষ্ণু : তারপর ? 

সহায়হরি : আমার স্ত্রী অত্যন্ত কান্নাকাটি করাতে সেই পৌষ মাসে গেলাম। কি আর বলবো , মেয়েটার যা অবস্থা করেছে ওরা ! তার উপর আবার শাশুড়ি শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে শুরু করল যে তারা ছোটলোকের সঙ্গে কুটুম্বিতা করেছে। 
[বিষ্ণুর দিকে তাকিয়ে ] 
বলি আমরা ছোটোলোক কি বড়লোক তোমার তো সরকার খুড়ো জানতে বাকি নেই। বলি , পরমেশ্বর চাটুয্যের নামে নীলকুচির আমলে এ অঞ্চলে বাঘে গরুতে একঘাটে জল খেয়েছে - সে কথা ওদের আর কী বলব ! 

[ বিষ্ণু সরকার সমর্থনসূচক ঘাড় নাড়লেন ] 

সহায়হরি : তারপর ফাল্গুন মাসেই তার বসন্ত হল। এমন চামার , বসন্ত গায়ে বেরুতেই টালায় আমার দূর সম্পর্কের বোনের কাছে ওকে পাঠিয়ে দিলে। আমায় একটা সংবাদ পর্যন্ত দিলে না। 

বিষ্ণু : দেখতে পাওনি ? 

সহায়হরি : নাঃ ! এমনি চামার - গহনাগুলো অসুখ অবস্থাতেই গা থেকে খুলে নিয়েছিল। 
[ একটু থেমে ]  থাক , বাদ দাও এসব কথা , মাছ ধরতে যেতে হবে , দেরি হয়ে গেল ; চার এনেছো তো ? 

বিষ্ণু : হ্যাঁ। 

সহায়হরি : তা তুমি এগোও , আমি একটু পরে আসছি। 

[ বিষ্ণু সরকার মঞ্চ থেকে প্রস্থান করলেন। এর কিছুক্ষন পর অন্নপূর্ণা সহায়হরির দিকে এগিয়ে গেলেন। ] 

অন্নপূর্ণা : এবার কী শীত পড়েছে না ! আমার জ্ঞানে তো এরকম শীত আমি কখনো দেখিনি। 
[একটু থেমে ] একটা জিনিস দেখবে ? 

সহায়হরি : কী ? 

অন্নপূর্ণা : আরে , এদিকে এসই না। 

[ অন্নপূর্ণা মঞ্চের একেবারে সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন। সহায়হরি ধীরে ধীরে অন্নপূর্ণার পাশে এসে দাঁড়ালেন। দুজনের দৃষ্টিই দর্শকদের দিকে। যেন অদৃশ্য কোনো কিছুকে তারা দুজনেই দেখছে। ] 

অন্নপূর্ণা : ওই দেখো , পুঁই মাচা। ক্ষেন্তি কত যত্ন করে , আমার সঙ্গে ঝগড়া করে পুঁইয়ের চারাটি লাগিয়েছিল। আজ সেই পুঁইগাছটিকে দেখ , গোটা মাচায় ছড়িয়ে পড়েছে। সুপুষ্ট , নধর। প্রবর্ধমান জীবনের লাবণ্যে ভরপুর। ঠিক যেন  ......... ঠিক যেন  ..........

সহায়হরি : ক্ষেন্তির মত। 

[ দুজনেই স্থির হয়ে একই দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। পর্দা ধীরে ধীরে নেমে এল। ]   

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের নাট্যরূপ। 

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের নাট্যরূপ। 




প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত '' তেলেনাপোতা আবিষ্কার '' গল্পের নাট্যরূপ প্রকাশিত হল। নাট্যরূপ প্রদানের প্রয়োজনে গল্পের কিছু দৃশ্য , বর্ণনা - ইত্যাদির পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে চরিত্র এবং গল্পের মূল ঘটনাপ্রবাহ অপরিবর্তিত রয়েছে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রকল্প এবং বি এ বাংলা বিভাগের অ্যাসাইনমেন্টের কাজে এই নাট্যরূপ সহায়ক হতে পারে। 

নাট্যরূপ : তেলেনাপোতা আবিষ্কার [ লেখক : প্রেমেন্দ্র মিত্র ] 


চরিত্রবর্গ :- 
তিন বন্ধু 
যামিনী 
যামিনীর মা 
ডাক্তারবাবু  

প্রথম দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : মঞ্চে আলো খুব কম থাকবে। মঞ্চের তিনদিকের দেওয়ালে কাপড় , পর্দা ও আলো দিয়ে খুব পুরোনো ও ভাঙাচোরা একটি ঘরের আবহ তৈরী করতে হবে। দৃশ্যটিকে যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলতে প্রয়োজনে কার্ড বোর্ড বা থার্মোকল সিটের ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের মধ্যে একটি লণ্ঠন জ্বলবে। তবে মঞ্চে আলোর ব্যবস্থা এমনভাবে করতে হবে যাতে মঞ্চে উপস্থিত তিনজনকে স্পষ্ট দেখা যায়। এক্ষেত্রে আলোর ফোকাসের ব্যবস্থা করতে হবে। 

[ তিন বন্ধু ঘরে প্রবেশ করল। প্রত্যেকের হাতে একটি করে স্যুটকেস বা ঐধরণের ব্যাগ থাকবে। মঞ্চে প্রবেশ করে তিনজন তাদের হাতের ব্যাগ লণ্ঠনের একপাশে রাখবে। ] 

প্রথম বন্ধু : [ রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ] যাক শেষ পর্যন্ত তেলেনাপোতায় এসে পৌঁছলাম। 

দ্বিতীয় বন্ধু : [ খুব ক্লান্ত ভঙ্গিমায় ] যেভাবে আমরা এলাম , তাতে পৌঁছতে পারবোনা বলেই ভেবেছিলাম। 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , প্রথমে বাস , আর তারপর সেই গরুর গাড়ি ! ওফফ , যা গেল কয়েকটা ঘন্টা ! মনে হচ্ছে কত যুগ যেন পার করে এসেছি ! 

প্রথম বন্ধু : ঠিক তাই। যেমন ছিল গরুগুলো , তেমনি ছিল গাড়িটা ! দুটোই যেন কোনো বামন দেশ থেকে উঠে এসেছে। 

[ তিনজনই হেঁসে উঠল। ] 

দ্বিতীয় বন্ধু : যাক , তেলেনাপোতায় যখন এসে পৌঁচেছি , তখন আরাম করে প্রচুর মাছ ধরবো আর খাবো। 

[ আবার সকলে হেঁসে উঠল। ] 

প্রথম বন্ধু : এই তোরা ছিপ - টিপগুলো ঠিকমত নিয়ে এসেছিস তো ? 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , হ্যাঁ ; এই তো ঘরের বাইরে রেখে এলাম। 

[ তিন বন্ধু কথা বলতে বলতে মাঝে মাঝেই মশা তাড়ানোর অঙ্গভঙ্গি করছে। ] 

দ্বিতীয় বন্ধু : ঘরটার অবস্থা দেখ। 

প্রথম বন্ধু : হ্যাঁ , একেবারে ধ্বংসপ্রাপ্ত। তাও ও গরুর গাড়ির গাড়োয়ান ছিল বলে রক্ষে। কমসেকম এই জলের কলসি আর লণ্ঠনটাতো দিয়ে গেল। 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , এটাই অনেক। তবে ঘরে কিন্তু মশা অনেক। 

প্রথম বন্ধু : কি আর করা যাবে ! এক কাজ কর , চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড় , রাত অনেক হয়েছে। 

দ্বিতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , সেই ভালো। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

[ তিনজনে মিলে ব্যাগ থেকে কিছু চাদর ইত্যাদি বের করে শোয়ার উপক্রম করতে শুরু করল। তারপর তিনজনই শুয়ে পড়ল। মঞ্চের আলো আরো কমে এল। লণ্ঠনটি এখনো জ্বলছে। নেপথ্যে ঝিঁঝি পোকার ডাক। এই রকম ভাবে ১০ - ১৫ সেকেন্ড কাটবে। তারপর হঠাৎ প্রথম বন্ধু মশার আক্রমণে ব্যাস্ত হয়ে উঠে পড়বে। ] 

প্রথম বন্ধু [ উঠে পড়ে এবং মশা তাড়ানোর অঙ্গভঙ্গি করতে করতে ] : বাপ রে বাপ ! এত মশা এখানে ! ( হঠাৎ যেন একটি মশাকে ধরেছে এমন ভঙ্গি করে ) বাব্বাঃ , এতো মশাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো কুলীন , ম্যালেরিয়া দেবীর অদ্বিতীয় বাহন অ্যানোফিলিস ! ( একটু থেমে ) নাহঃ , আর এভাবে শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে না ; একটু হাঁটাহাঁটি করি  ............ 

[ প্রথম বন্ধু উঠে পড়ল এবং মঞ্চের মধ্যেই ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করল। ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে প্রথম বন্ধু মঞ্চের সামনে এসে দাঁড়াবে। এমনভাবে দাঁড়াবে যাতে প্রথম বন্ধুর মুখ মঞ্চের উত্তরে বা দক্ষিণে থাকে এবং প্রথম বন্ধু হঠাৎ করে মঞ্চের পেছনে অর্থাৎ পশ্চিমে তাকাবে। ] 

প্রথম বন্ধু : [ একটু অবাক , কিছুটা আশ্চর্য ] কী ওটা ? একটা বাড়ি না ? ইশ , একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়িটার জানলাগুলোকে মনে হচ্ছে চক্ষুহীন কোটর। 

[ এইবার মঞ্চের পিছনের পর্দায় অর্থাৎ পশ্চিমে ধীরে ধীরে একজন নারীর আবছা ছায়াময় অবয়ব দেখা যাবে। প্রথম বন্ধু সেটি দেখে সচকিত হয়ে উঠবে। নেপথ্যে ভয়ের আবহসঙ্গীত। ] 

প্রথম বন্ধু : কে ? কে ওখানে ? কে ওখানে ? 

[ এই কথা বলতে বলতেই ছায়ামূর্তিটি পর্দা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। ] 

প্রথম বন্ধু : এইখানেও মানুষ থাকে ! এই ধ্বংসপ্রাপ্ত , জীর্ণ অট্টালিকাতেও মানুষ ! একজন নারী ! 

[ ধীরে ধীরে আলো নিভে এল। ]  

দ্বিতীয় দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : এবার মঞ্চে দিনের উজ্জ্বল আলো। নেপথ্যে পাখির কিচির - মিচির শব্দ। এবার ঘরে কিছু ভাঙাচোরা আসবাব দেখা যাবে। 

[ তিন বন্ধু চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। প্রথম বন্ধুর ঘুম ভেঙে গেল। সে আড়মোড়া ভাঙলো। তারপর একটু সচকিত হয়ে গতরাতে যেখানে একজন নারীর আবছায়া অবয়ব দেখা গিয়েছিল - সেদিকে একবার তাকালো। তারপর বন্ধুদের দিকে ফিরে তাদেরকে ঘুম থেকে তুলতে শুরু করল। একটু ডাকাডাকিতে বাকি দুই বন্ধু ঘুম থেকে উঠল। তারাও আড়মোড়া ভাঙলো। ] 

তৃতীয় বন্ধু [ একটু ঘুমের ঝোঁক এখনও আছে ] : তবে তোরা যাই বল , শেষ পর্যন্ত ঘুমটা খারাপ হয়নি। 

প্রথম বন্ধু : হ্যাঁ , যা খাটনি গেছে গতকাল ! ঘুম তো ভালো হওয়ারই ছিল। ....... ( একটু থেমে ) ....... জানিস কাল একটা আশ্চর্য ব্যাপার ঘটেছে ! 

দ্বিতীয় বন্ধু : কখন ? 

প্রথম বন্ধু : এই  .......... তোরা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর। 

তৃতীয় বন্ধু : সে'কি , তুই তারপরে ঘুমোসনি ? 

প্রথম বন্ধু : না রে , ঘুম আসছিল না। ওই সামনের দিকে একটু পায়চারি করছিলাম। হঠাৎ একটা আশ্চর্য ব্যাপার লক্ষ্য করলাম।  

তৃতীয় বন্ধু : আশ্চর্য ব্যাপার ! সেটা কী ? 

প্রথম বন্ধু : ওই উল্টোদিকের ভাঙাচোরা বাড়ির জানলাটায় হঠাৎ দেখি একটা আবছায়াযুক্ত নারী অবয়ব ! 

দ্বিতীয় বন্ধু : [ অত্যন্ত অবাক ] তাই না'কি ! [ ভয় পেয়ে ] ভুত নয়তো ? চল চল , আমরা আজকেই এখান থেকে চলে যাই। ভুতের খপ্পরে পড়ে কী লাভ ! 

তৃতীয় বন্ধু [ যেন অপর দুই বন্ধুর কথায় খুব মজা পেয়েছে। হো হো করে হাঁসতে হাঁসতে ] : আরে ভুত নয় রে ভুত নয়। ও যামিনী ছিল। 

প্রথম বন্ধু [ আরো বেশি অবাক ] : যামিনী ! কে যামিনী ? 

তৃতীয় বন্ধু : ওই সামনের বাড়িতে থাকে। আমারই দূর সম্পর্কের জ্ঞাতি। আমাকে মণিদা বলে ডাকে। ও আর ওর মা এই সামনের ভাঙাচোরা বাড়িটাতে থাকে। বড় দুঃখী মেয়ে। 

প্রথম বন্ধু : কেন ! দুঃখী কেন ? 

তৃতীয় বন্ধু : ছোটবেলাতেই ওর বাবা মারা যায়। তারপর থেকে মা'ও শয্যাশায়ী। যামিনী একার হাতেই সংসার চালায়। বিয়ের বয়স অনেকদিন আগেই হয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ে হয়নি। বুড়ি , মানে যামিনীর মা , নিরঞ্জন নামে তাঁর এক দূরসম্পর্কের বোনপোর সঙ্গে যামিনীর বিয়ে দিতে চেয়েছিল। ছেলেটার নাম নিরঞ্জন। সে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। বিদেশে চাকরি করতে যাচ্ছি বলে পালিয়েছে। কিন্তু বুড়ি এখনো সেই আসতেই বসে আছে যে , নিরঞ্জন এসে তাঁর মেয়েকে বিয়ে করবে। 

[ সকলেই কিছুক্ষন চুপচাপ ] 

তৃতীয় বন্ধু : বাদ দে এসব কথা , আজ যে যা পারিস মাছ ধরে নে ; তেলেনাপোতায় এসেছিস যখন ; তখন কি আর মাছ না ধরলে চলে ! আর কাল দুপুরে কোথাও যাওয়া হবে না , যামিনীর বাড়িতে দুপুরের খাওয়ার নেমন্তন্ন আছে। 

প্রথম বন্ধু : তাই নাকি ! যাবি তুই ? 

তৃতীয় বন্ধু : যাবো না তো কি এমনি বলছি ? সবারই নেমন্তন্ন আছে ; সবাইকেই যেতে হবে। 

[ আলো ধীরে ধীরে নিভে এল। ] 

তৃতীয় দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : এই দৃশ্যে দিনের উজ্জ্বল আলো থাকবে। মঞ্চের মধ্যে কোনোপ্রকার আসবাব থাকবে না। মঞ্চে বিভিন্ন গাছপালার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয়। নেপথ্যে পাখির কিচির - মিচির আর মাঝে মাঝে উদাস ঘুঘুর ডাক। প্রথম বন্ধু যখন যখন জলে ছিপ ফেলবে তখন জলে ছলাৎ ছলাৎ শব্দের ব্যবস্থা নেপথ্যে রাখতে হবে। 

[ প্রথম বন্ধু মঞ্চে প্রবেশ করল। হাতে ছিপ ; অপর হাতে একটি ব্যাগ। চারদিক দেখতে দেখতে সে মঞ্চে প্রবেশ করবে। তারপর একটি জায়গা হঠাৎ পছন্দ হয়ে গেছে এমন ভঙ্গি করবে। ] 

প্রথম বন্ধু : যাক , এই একটা ভালো জায়গা পেলাম। মাছ ধরার জন্য এই জায়গাটা উপযুক্ত। 

[ এই বলে প্রথম বন্ধু দর্শকদের দিকে মুখ করে মঞ্চের একেবারে সামনের দিকে বসে পড়বে। ছিপ তৈরী করবে। ব্যাগ থেকে টোপ বের করে বঁড়শিতে গাঁথার ভঙ্গি করবে। তারপর ছিপের বঁড়শিটিকে মঞ্চের নীচে এমনভাবে ফেলবে যেন মনে হবে সে ছিপ জলে ফেলেছে। ] 

প্রথম বন্ধু : [ উৎসাহিত ] এই তো মাছ টোপ গিলেছে। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

[ এই বলে সে ছিপটাকে টান দেবে ; কিন্তু মাছ উঠবে না। এই একই প্রক্রিয়া আরও দুই - তিন বার চলবে। কিন্তু কোনোবারই মাছ উঠবে না। ] 

প্রথম বন্ধু : [ হতাশ ] শুনেছিলাম , তেলেনাপোতায় মাছের না'কি ধরা দেওয়ার জন্য বসে থাকে ! এখানে তো দেখছি তার উল্টো। মাছগুলো বড়ই চালাক। শুধু শুধু টোপ খেয়ে পালাচ্ছে। 

[ এই কথা চলতে চলতেই মঞ্চে যামিনী প্রবেশ করবে। কোমরে ধরা আছে একটি পেতলের কলসি। যামিনী মঞ্চে প্রবেশ করেই প্রথম বন্ধুর অসফল মাছ ধরা ও হতাশ অঙ্গভঙ্গি দেখে মুচকি মুচকি হেসে প্রথম বন্ধুর দিকে তাকাতে তাকাতেই মঞ্চের একেবারে সামনের দিকে চলে আসবে। তার অবস্থান এখন প্রথম বন্ধুর সমান্তরালে। যামিনী কলসিটি নিয়ে পুকুর থেকে জল নেওয়ার ভঙ্গি করবে। ঠিক এই সময় প্রথম বন্ধু যামিনীকে দেখতে পাবে। ঠিক সেই সঙ্গে সঙ্গেই নেপথ্যে মিষ্টি সুর বেজে উঠবে। প্রথম বন্ধু যামিনীর দিকে অবাক চোখে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। ] 

যামিনী : [ একটু হাসি , একটু চটুলতা। প্রথম বন্ধুর ছিপের দিকে তাকিয়ে ] : বসে আছেন কেন , টান দিন ! 

[ প্রথম বন্ধু এই কথা শুনে তাড়াহুড়ো করে ছিপে টান দেয় এবং এবারও বঁড়শিতে কোনো মাছ ছিল না। তার অবস্থা দেখে যামিনী খিলখিল করে হেসে ওঠে এবং চলে যাওয়ার উপক্রম করে। প্রথম বন্ধু আরও অবাক হয়ে যামিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চলে যাওয়াটাও হাঁ করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। নেপথ্যে মিষ্টি সুর বাজতেই থাকে। আলো ধীরে ধীরে নিভে আসে। ]   

চতুর্থ দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : মঞ্চে মাঝারি আলো। ঘরে কিছু সাধারণ ভাঙাচোরা আসবাব। এই দৃশ্যে অবশ্যই আলোর ফোকাস ব্যবহার করতে হবে।  

[ মঞ্চে তিনবন্ধু উপস্থিত। তারা সকলেই খেতে বসেছে। যামিনী খাবার পরিবেশন করছে। মঞ্চের অন্য এক দিকে একটি খাটিয়া। তাতে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে যামিনীর মা। আলোর ফোকাস তিনবন্ধু এবং যামিনীর দিকে। এখন কোনো অবস্থাতেই যামিনীর মায়ের দিকে আলোর ফোকাস যাবে না। যতক্ষণ খাবার পর্ব চলবে ততক্ষন মঞ্চে যামিনীর মায়ের উপস্থিতি টেরই পাওয়া যাবে না। খাওয়া - দাওয়া চলছে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : তা হ্যাঁ রে যামিনী , হঠাৎ আজ আমাদের নেমন্তন্ন কেন ? বিশেষ কিছু আছে না'কি ? 

যামিনী : না মণিদা , বিশেষ কিছুই নেই ; তুমি এতদিন পর এখানে এলে তাই সামান্য একটু সেবা করার সুযোগ পেলাম। 

[ তৃতীয় বন্ধু এবং যামিনীর কথোপকথনের সময় তৃতীয় বন্ধু খেতে খেতেই যামিনীর সঙ্গে কথা বলবে , দ্বিতীয় বন্ধু কোনো দিকে না তাকিয়ে খেয়েই যাবে। কিন্তু প্রথম বন্ধু খাবে খুব ধীর গতিতে। সে খেতে খেতে তৃতীয় বন্ধু ও যামিনীর কথোপকথন মনোযোগ দিয়ে শুনবে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : তা যামিনী , মাসিমা এখন কেমন আছেন ? 

যামিনী : [ হতাশ ও উদাস ] ওই  ............ একই রকম। সবসময় আমার বিয়ে হল না - এই চিন্তাই তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এখনো নিরঞ্জনের আশায় বসে আছেন। 

[ এই সময় হঠাৎ যামিনীর মায়ের কাতর ও করুন স্বর শোনা যাবে। তিনি যামিনীকে কাতরভাবে ডাকছেন। তার ডাক শোনার পর যামিনী সচকিত হয়ে ওঠে। ] 

যামিনী : তোমরা খাও মণিদা ; আমি এক্ষুনি আসছি। 

[ এই বলে যামিনী সেখান থেকে চলে যাওয়ার উপক্রম করে। যামিনী ধীরে ধীরে মঞ্চের সেই দিকে হাঁটতে থাকে যেদিকে একটি খাটিয়ার উপর তার মা শুয়ে আছে। যামিনীর হেঁটে যাওয়ার সময় আলোর ফোকাস যামিনীকে অনুসরণ করবে। যামিনী তার মায়ের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলার অঙ্গভঙ্গি করবে। এখানে কোনো সংলাপের প্রয়োজন নেই। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে যামিনী আবার ফিরে যেতে শুরু করবে তিন বন্ধুর দিকে। আলোর ফোকাস এবারও যামিনীকে অনুসরণ করবে। যামিনী আবার তিন বন্ধুর সামনে এসে দাঁড়াবে। এবার তার মুখ উদ্বিগ্ন। ] 

যামিনী : মণিদা , একটু এখানে শুনে যাও। 

[ যামিনী তিন বন্ধুর থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াবে। তার মুখ অনেকটা দর্শকদের দিকে ফেরানো। মণিদা অর্থাৎ তৃতীয় বন্ধু খাওয়া ছেড়ে যামিনীর দিকে এগিয়ে যাবে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : কী হয়েছে যামিনী ? 

যামিনী : [ কাতর এবং বিপন্ন স্বর ] : মা তো কিছুতেই শুনছেন না। তোমাদের আসার খবর পাওয়া অবধি কী যে অস্থির হয়ে উঠেছেন কী বলব ! 

তৃতীয় বন্ধু : [ একটু অবাক একটু বিরক্তি ] : ওঃ , সেই খেয়াল এখনো ! নিরঞ্জন এসেছে , ভাবছেন বুঝি ? 

যামিনী : হ্যাঁ , কেবলই বলছেন , সে নিশ্চই এসেছে। শুধু লজ্জায় আমার সঙ্গে দেখা করতে পারছে না , আমি জানি। তাকে ডেকে দে। কেন তুই আমার কাছে লুকোচ্ছিস ! 

তৃতীয় বন্ধু : সত্যি , ভাবা যায়না। 

যামিনী : কী যে আমি করব ভেবে পাচ্ছি না। অন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে আজকাল এত অধৈর্যতা বেড়েছে যে , কোনো কথা বোঝালে বোঝেন না , রেগে মাথা খুঁড়ে এমন কান্ড করেন যে , তখন ওঁর প্রাণ বাঁচানো দায় হয়ে ওঠে ! 

তৃতীয় বন্ধু : হুঁম , এ তো বড় মুশকিল দেখছি। চোখ থাকলেও নাহয় দেখিয়ে দিতাম যে , যারা এসেছে তাদের কেউ নিরঞ্জন নয়। 

[ হঠাৎ যামিনীর মায়ের তীব্র চিৎকার ; চিৎকার করে তিনি যামিনীকে ডাকছেন। তাঁর ডাক শুনে যামিনী ও তৃতীয় বন্ধু দুজনেই চমকে ওঠে। ] 

যামিনী [ কাতর অনুরোধ ] : তুমি একবারটি চলো মণিদা , যদি একটু বুঝিয়ে - শুঝিয়ে ঠান্ডা করতে পার। 

তৃতীয় বন্ধু : আচ্ছা , তুই যা , আমি আসছি। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

[ এবার যামিনী ধীরে ধীরে তার মায়ের দিকে ফিরে যাবে। কিন্তু আলোর ফোকাস এবার থাকবে তৃতীয় বন্ধুর উপর। তৃতীয় বন্ধু অপর দুই বন্ধুর কাছে আসলো। আলোর ফোকাস তিন বন্ধুর উপর। ] 

প্রথম বন্ধু : [ উদ্বিগ্ন ] কী হয়েছে রে ? 

তৃতীয় বন্ধু : কী আবার হবে ! ....................... এ এক আচ্ছা জ্বালা হয়েছে যা হোক। বুড়ির হাত - পা পড়ে গেছে , চোখ নেই , তবু বুড়ি পণ করে বসে আছে কিছুতেই মরবে না। 

প্রথম বন্ধু : ব্যাপারটা কী ? 

তৃতীয় বন্ধু : ব্যাপার আর কী ! নিরঞ্জন বলে যে ছেলেটার কথা তোদের বলেছিলাম , মানে মাসির ওই দূর সম্পর্কের বোনপো , তার সঙ্গে বুড়ি ছেলেবেলায় যামিনীর সম্বন্ধ ঠিক করেছিলেন। বছর চারেক আগেও সে ছোকরা এসে ওঁকে বলে গিয়েছিল বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে ওঁর মেয়েকে সে বিয়ে করবে। সেই থেকে বুড়ি এই অজগর - পুরীর ভেতর বসে সেই আশায় দিন গুনছে। 

প্রথম বন্ধু : নিরঞ্জন কি এখনো বিদেশ থেকে ফেরেনি ? 

তৃতীয় বন্ধু : আরে , সে বিদেশে গিয়েছিল কবে যে ফিরবে ! নেহাত বুড়ি নাছোড়বান্দা বলে তাঁকে এই ধাপ্পা দিয়ে গিয়েছিল। এমন ঘুঁটে - কুড়ুনীর মেয়েকে উদ্ধার করতে তার দায় পড়েছে ! সে কবে বিয়ে - থা করে দিব্যি সংসার করছে। কিন্তু সেকথা বুড়িকে বলে কে ? বললে বিশ্বাসই করবেন না , আর - বিশ্বাস যদি করেন তা হলে এখুনি তো দম ছুটে অক্কা ! কে মিছিমিছি পাতকের ভাগী হবে ? 

প্রথম বন্ধু : যামিনী নিরঞ্জনের কথা জানে ? 

তৃতীয় বন্ধু : তা আর জানে না ! কিন্তু মা'র কাছে বলবার উপায় তো নেই। যাই , কর্মভোগ সেরে আসি। 

[ তৃতীয় বন্ধু যামিনীর মায়ের দিকে পা বাড়াবে। সেই মুহূর্তে হঠাৎ প্রথম বন্ধু উঠে দাঁড়াবে। ]

প্রথম বন্ধু : চলো , আমিও যাব। 

তৃতীয় বন্ধু ( অবাক হয়ে প্রথম বন্ধুর দিকে ফিরে চেয়ে ) : তুমি যাবে !

প্রথম বন্ধু : হ্যাঁ , কোনো আপত্তি আছে গেলে ? 

তৃতীয় বন্ধু : না , আপত্তি কীসের ! 

[ প্রথম বন্ধু ও তৃতীয় বন্ধু যামিনীর মায়ের দিকে এগিয়ে যাবে। ধীরে ধীরে তারা যামিনীর মায়ের কাছে আসবে। এইবার আলোর ফোকাস যামিনীর মা , প্রথম ও তৃতীয় বন্ধু এবং যামিনীর উপর। যামিনীর মা একটি খাটিয়ায় শুয়ে আছেন। অত্যন্ত জীর্ণ অবস্থা। একপাশে যামিনী পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে। ] 

যামিনী : মা , মণিদা এসেছেন। 

যামিনীর মা : ( রুগ্ন কণ্ঠে ) : কে , ও মণি ! [ প্রথম বন্ধুর উদ্দেশ্যে ] আর ও কে ? নিরঞ্জন ! নিরঞ্জন এলি না'কি বাবা ! অভাগী মাসিকে এতদিনে মনে পড়ল বাবা ? তুই আসবি বলে প্রাণটা যে আমার কন্ঠায় এসে আটকে আছে। কিছুতেই নিশ্চিন্তি হয়ে মরতে পারছিলাম না। এবার তো আর অমন করে পালাবি না ? 

[ তৃতীয় বন্ধু যামিনীর মা'কে কিছু একটা বলতে যাবে ; এমন সময় হঠাৎ প্রথম বন্ধু যামিনীর মায়ের হাতটা আস্বস্ত করার ভঙ্গিতে ধরে ফেলবে। ] 

প্রথম বন্ধু : না মাসিমা , আর পালাব না। 

[ তৃতীয় বন্ধু ও যামিনীর মুখে বিস্ময়ের প্রতিক্রিয়া। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বন্ধুও সেখানে উঠে এসেছে। সেও অবাক। ] 

যামিনীর মা : ( উচ্ছসিত কণ্ঠ ) আমি জানতাম , তুই না এসে পারবি না বাবা। তাই তো অমন করে এই প্রেতপুরী পাহারা দিয়ে দিন গুনছি। 

[ সকলে এখনো অবাক হয়েই আছে। কেবল যামিনীর মুখে যেন একটু আলোর আভাস। ] 

যামিনীর মা : যামিনীকে নিয়ে তুই সুখী হবি বাবা। আমার পেটে হয়েছে বলে বলছি না , এমন হয় না। শোকে - তাপে বুড়ো হয়ে মাথার ঠিক নেই , রাতদিন খিটখিট করে মেয়েটাকে যে কত যন্ত্রণা দিই , তা কি আমি জানি না। তবু মুখে ওর রা নেই। এই শ্মশানের দেশ , দশটা বাড়ি খুঁজলে একটা পুরুষ মেলে না। আমার মতো ঘাটের মড়ারা শুধু ভাঙা ইঁট আঁকড়ে এখানে - সেখানে ধুঁকছে , এর মধ্যে একাধারে মেয়ে পুরুষ হয়ে ও কী না করেছে ! [ কিছুক্ষন সকলে চুপ। ] 

যামিনীর মা ( নীরবতা ভঙ্গ করে ) : যামিনীকে তুই নিবি তো বাবা ? তোর শেষ কথা না পেলে আমি মরেও শান্তি পাব না। 

প্রথম বন্ধু ( একটু ধরা গলায় ) : আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা। আমার কথার নড়চড় হবে না। 

[ প্রথম বন্ধু ও যামিনীর মুখে হালকা হাসির ঝিলিক। বাকীরা সকলেই অবাক। আলো ধীরে ধীরে কমে এল। ] 

পঞ্চম দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : প্রথম দৃশ্যের অনুরূপ। 

[ মঞ্চে তিনবন্ধু উপস্থিত। সকলেই ব্যাস্তভাবে জামাকাপড় ইত্যাদি নিজের নিজের বাক্স , ব্যাগ ইত্যাদিতে গুছিয়ে নিচ্ছে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : গরুর গাড়িটা ঠিক সময়ে আসলে হয়। 

দ্বিতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , নাহলে তো আবার শেষ বাসটা পাব না। 

তৃতীয় বন্ধু : নে নে , তাড়াতাড়ি কর। অনেকটা দেরি হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। 

প্রথম বন্ধু : কী যেন একটা ভুলে যাচ্ছি ! 

তৃতীয় বন্ধু : কী ভুললি আবার ! 

[ মঞ্চে যামিনীর প্রবেশ। সকলে যামিনীর দিকে ফিরে চাইল। ] 

যামিনী : আজই চলে যাচ্ছ মণিদা ? 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ রে যামিনী , না গিয়ে আর উপায় আছে ! 

যামিনী : মাছ ধরতে এসেছিলে , মাছ তো সেরকম পেলেই না।  

তৃতীয় বন্ধু : দেখি , আরেকবার আসতে হবে। 

[ এদিকে ব্যাগ গোছানো হয়ে গেছে। সকলে নিজের নিজের ব্যাগ নিয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ] 

তৃতীয় বন্ধু : তাহলে যামিনী , আসি এবার ? 

যামিনী ( প্রথম বন্ধুর উদ্দেশ্যে ) : আপনার ছিপটিপ যে পড়ে রইল ! 

প্রথম বন্ধু ( একটু হেসে প্রত্যয়ের সঙ্গে ) : থাক - না। এবারে পারিনি বলে তেলেনাপোতার মাছ কি বারবার ফাঁকি দিতে পারবে ? 

[ যামিনী ও প্রথম বন্ধু উভয়ে উভয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে। দুজনের মুখেই স্মিত হাসি। কয়েক সেকেন্ড পর তিনবন্ধু মঞ্চ থেকে প্রস্থান করল। যামিনী দাঁড়িয়েই রইল। মুখে সেই স্মিত হাসি লেগেই রয়েছে। আলো ধীরে ধীরে কমে এল। ] 

ষষ্ঠ দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : এই দৃশ্যে মঞ্চ পূর্ববর্তী দৃশ্যগুলির তুলনায় সম্পূর্ণরূপে পাল্টে যাবে। মঞ্চে একটি খাট বা চৌকি। একটি টেবিল ; তাতে কিছু বইপত্র। পাশে দু - তিনটি চেয়ার। শয্যায় চাদরমুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে প্রথম বন্ধু। 

প্রথম বন্ধু ( জ্বরের ঘোরে , গোঙানির স্বরে ) : ফিরে আসব যামিনী , আমি ফিরে আসব। 

[ হন্তদন্ত হয়ে বাকী দুই বন্ধু ও ডাক্তারবাবুর প্রবেশ। ডাক্তারবাবুর পোশাক ও সজ্জা এমন হবে যাতে তাকে দেখলেই ডাক্তারবাবু মনে হয়। গায়ে অ্যাপ্রন , গলায় স্টেথোস্কোপ। ] 

তৃতীয় বন্ধু : আসুন আসুন ডাক্তারবাবু , এইখানে। 

[ সকলে গিয়ে পৌঁছল প্রথম বন্ধুর শয্যার কাছে। ডাকরবাবু গলা থেকে স্টেথোস্কোপ খুললেন এবং তারপর প্রথম বন্ধুকে পরীক্ষা করতে শুরু করলেন। ] 

ডাক্তারবাবু ( গম্ভীর মুখে ) : হুঁম , এক শত পাঁচ ডিগ্রি  ................ তা ম্যালেরিয়াটি কোথা থেকে বাগালেন ? 

তৃতীয় বন্ধু : দেখুন না কয়েকদিন থেকেই বেশ জ্বর। আমরা কতবার বলছি ডাক্তার দেখাতে , কিন্তু দেখায় না। গত দুদিন থেকে শয্যাশায়ী। আমরা জানতে পেরে আপনাকে ডেকে এনেছি। 

ডাক্তারবাবু : আমি কয়েকটি ঔষধ লিখে দিচ্ছি। এখন থেকেই খাওয়াতে শুরু করুন। একটি ডোজও যেন বাদ না পড়ে। সাতদিন পর আরেকবার রক্তপরীক্ষা করাতে হবে। আজ চলি। 

[ ডাক্তারবাবু উঠে পড়লেন। তার সঙ্গে দুই বন্ধুও প্রস্থান করল। কিছুক্ষন পর প্রথম বন্ধু খুব ধীরে ধীরে নিজের শয্যায় উঠে বসল। অত্যন্ত অসুস্থ থাকার অভিনয় করতে হবে। গলার স্বরেও অসুস্থতা ধরা পড়বে। ] 

প্রথম বন্ধু ( স্বগতোক্তি / দর্শকদের উদ্দেশ্যে ) : সবকিছু কেমন কেমন ঝাপসা ঝাপসা অলীক স্মৃতির মত লাগছে। স্মৃতির অনেক ধোয়া - মোছা যেন হয়ে গিয়েছে। তেলেনাপোতার স্মৃতি আমার কাছে যেন আজ যেন একটা অস্ত যাওয়া তারা , যেন একটা স্বপ্ন। সত্যিই কি তেলেনাপোতা বলে কোথাও কিছু নেই ? আর যামিনী !  ................... সবই কি আমার দুর্বল মুহূর্তের অবাস্তব কুয়াশার কল্পনা মাত্র। 

[ প্রথম বন্ধু একদৃষ্টে দর্শকদের দিকে তাকিয়ে থাকল। পর্দা ধীরে ধীরে নেমে এল। ]   

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।     
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : বাংলা ভাষায় ধ্বনিতত্ত্বের ব্যবহার। 


ভূমিকা : - 

[ সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের ১১৪ পৃষ্ঠার প্রথম Stanza থেকে দ্বিতীয় Stanza - র '' আলোচনার নাম ধ্বনিতত্ত্ব '' পর্যন্ত লিখতে হবে। ] 
+ 
বর্তমান প্রতিবেদনমূলক প্রকল্পটিতে ধ্বনিতত্ত্বের বিভিন্ন রূপ , সমাবেশ , বৈচিত্র , বৈশিষ্ট এবং ব্যবহার সম্পর্কে উদাহরণসহ আলোচনা করা হয়েছে। 

প্রকল্পের উদ্দেশ্য :-
যেসকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি রচনা করা হয়েছে , সেগুলি হল - 
(ক ) বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত ও প্রাসঙ্গিক জ্ঞান অর্জন করা। 
(খ ) বাংলা ভাষায় ধ্বনিতত্ত্বের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা। 
(গ ) বিভিন্ন প্রকার ধ্বনিগুলির উচ্চারণ স্থান ও সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের উচ্চারণ গুলি জানা। 
(ঘ ) ধ্বনিমূল ও সহধ্বনির সম্পর্ক সম্বন্ধে উপযুক্ত ধারণা অর্জন করা। 
(ঙ ) ধ্বনিমূলের বিভিন্ন প্রকার অবস্থান ও তাদের ব্যবহার সম্পর্কে অবগত হওয়া। 
(চ ) সর্বপরি , ধ্বনিতত্ত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে তোলা। 

প্রকল্পের গুরুত্ব :-
যেসকল কারণে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে পারে , সেগুলি হল - 
(ক ) প্রকল্পটির মাধ্যমে বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। 
(খ ) বাংলা ভাষায় ধ্বনিতত্ত্বের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে প্রকল্পটি কার্যকর। 
(গ ) প্রকল্পটির মাধ্যমে ধ্বনিতত্ত্বের বিভিন্ন বিষয় ; যেমন - ধ্বনিমূল , সহধ্বনি , ধ্বনির বৈচিত্র ও বৈশিষ্ট - ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন সম্ভব। 
(ঘ ) ধ্বনির বিভিন্ন প্রকার সমাবেশ সম্পর্কে জানতে প্রকল্পটি কার্যকর। 
(ঙ ) সর্বপরি , প্রকল্পটির মাধ্যমে ধ্বনিতত্ত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী করে তোলা যেতে পারে। 

LIST OF ALL PROJECTS.

তথ্য সংগ্রহ / পরীক্ষামূলক উপাদান :-  

[ সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের ১১৫ পৃষ্ঠার প্রথম Stanza থেকে দ্বিতীয় Stanza - র টেবিল সহ তার নীচের দুই লাইন ( সুরতরঙ্গ পর্যন্ত ) লিখতে হবে। ] 

প্রকল্পের বর্ণনা / তথ্য বিশ্লেষণ :- 

[ সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের ১১৬ পৃষ্ঠার ধ্বনিমূল ও সহধ্বনি + ১১৭ পৃষ্ঠার ধ্বনিমূল ও সহধ্বনির সম্পর্ক + ১২০ ও ১২১ পৃষ্ঠার ধ্বনির সমাবেশ , গুচ্ছধ্বনি , মুক্তধ্বনি , ও বিভিন্ন অবিভাজ্য ধ্বনিগুলি যেমন - শ্বাসাঘাত , দৈর্ঘ্য , যতি , সুরতরঙ্গ - ইত্যাদি সম্পর্কে সংক্ষেপে উদাহরণসহ লিখতে হবে। ] 

উপসংহার :- 
ধ্বনিতত্ত্ব শুধুমাত্র উচ্চারণগত ধ্বনি সম্পর্কে আলোচনা করে। আমাদের কথা বলবার প্রতিটি মুহূর্তে ধ্বনিতত্ত্বের বিভিন্ন বৈচিত্র ও বৈশিষ্ট আমাদের বাগযন্ত্র দ্বারা উচ্চারিত হয়। ধ্বনিতত্ত্বের সার্বিক আলোচনার মাধ্যমে আমরা ধ্বনির সেই ব্যাবহারগুলি সম্পর্কে অবগত হতে পারি এবং ধ্বনির বৈচিত্রময় জগৎ আমাদের সামনে উন্মোচিত হয়। 

সীমাবদ্ধতা :- 
প্রকল্পটি রচনাকালে এবং রূপায়িত হওয়ার পর যেসকল ত্রুটি বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতা দৃষ্টিগোচর হয়েছে , সেগুলি হল - 

(ক ) ধ্বনি তত্ত্বের আলোচনা একটি সার্বিকভাবে আলোচনার বিষয়। প্রকল্প রচনার সংক্ষিপ্ত পরিসরে ধ্বনি তত্ত্বের সামগ্রিক আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। 
(খ ) সময়াভাবে কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থ ছাড়া অন্য কোনো গ্রন্থ থেকে তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। 
(গ ) ধ্বনির বিভিন্ন রূপভেদ ও বৈচিত্রগুলিকে সামগ্রিকভাবে আলোচনা না করে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা হয়েছে। 

গ্রন্থপঞ্জি :- 
প্রকল্পটি রচনা করতে যেসকল গ্রন্থের সহায়তা নেওয়া হয়েছে , সেগুলি হল - 
বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস - দ্বাদশ শ্রেণী - পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।   

LIST OF ALL PROJECTS. 
Share
Tweet
Pin
Share
No comments

কাতুকুতু বুড়োর সাথে কাটানো একদিনের অভিজ্ঞতা।

বাংলা প্রকল্প : কাতুকুতু বুড়োর সাথে কাটানো একদিনের অভিজ্ঞতা।



কাতুকুতু বুড়োর সাথে কাটানো একদিনের অভিজ্ঞতা।

বাংলা প্রকল্প : কাতুকুতু বুড়োর সাথে কাটানো একদিনের অভিজ্ঞতা।

ভূমিকা :- 
কাতুকুতু বুড়ো সুকুমার রায়ের এক অবিস্মরণীয় চরিত্র। এই চরিত্রটি একদিকে যেমন মনের মধ্যে হাসির উদ্রেক জোগায়, তেমনই অন্যদিকে সুকুমার রায়ের লিখনশৈলীর গভীরতার পরিচয় প্রকাশ করে।বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের প্রকল্প হিসাবে সুকুমার রায়ের যে কোনও একটি চরিত্রের সঙ্গে কদিনের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে বলা হয়েছে। এই প্রকল্পে সুকুমার রায় কর্তৃক সৃষ্ট অমর চরিত্র কাতুকুতু বুড়োর সাথে কল্পনিকভাবে কাটানো একদিনের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেওয়া হল।

XI - XII Online MCQ : CLICK HERE

LIST OF ALL PROJECTS.

প্রকল্পের উদ্দেশ্য :- 

যেসকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি রচনা করা হয়েছে , সেগুলি হল - 
(ক ) শিক্ষার্থীর কল্পনা দক্ষতার বিকাশ ঘটানো। 
(খ ) সুকুমার রায়ের অমর চরিত্র কাতুকুতু বুড়ো সম্পর্কে আলোচনা। 
(গ ) কাতুকুতু বুড়োর চারিত্রিক বৈশিষ্টগুলি প্রকল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা। 
(ঘ ) নিপাট - নিৰ্ভেজাল হাস্যরস সৃষ্টিতে সুকুমার রায়ের দক্ষতার উপর আলোকপাত করা। 
(ঙ ) সর্বপরি , সুকুমার রায়ের অমর সৃষ্টি কাতুকুতু বুড়ো চরিত্রটি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী ও উৎসাহিত করে তোলা। 

প্রকল্পের গুরুত্ব :- 

যেসকল কারণে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে পারে , সেগুলি হল - 
(ক ) প্রকল্পটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কল্পনাশক্তির বিস্তার ঘটানো সম্ভব। 
(খ ) সুকুমার রায় হাস্যরস সৃষ্টিতে কতটা দক্ষ ছিলেন - তা এই প্রকল্পের মাধ্যমে সহজেই জানা যেতে পারে। 
(গ ) কাতুকুতু বুড়ো ছড়াটি সকলেই পড়েছে। এই চির পরিচিত চরিত্রটি সম্পর্কে প্রকল্পটিতে সারগর্ভ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 
(ঘ ) বাংলা সাহিত্যের উৎকর্ষতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবলোকন করাতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ। 
(ঙ ) কাতুকুতু বুড়ো নামক অমর চরিত্রটি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা কৌতূহলী হয়ে উঠবে। 

কর্ম পরিকল্পনা / পদ্ধতিগত দিক :- 

প্রকল্পটি রূপায়ণ করতে যেসকল পদ্ধতি ও পরিকল্পনা অনুসরণ করা হয়েছে - সেগুলি নিম্নরূপ। 

>> বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকা প্রকল্পের জন্য বিষয় নির্বাচন করলেন। 

>> বিষয় নির্বাচনের পর মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকা প্রকল্প রূপায়ণের বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিকের উপর আলোকপাত করেন। 

>> বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হল। 

>> সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রতিবেদন রচনা করা হল। 

>> খসড়া প্রতিবেদনটি মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নিকট উপস্থাপন করলে তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধনের নির্দেশ প্রদান করেন। 

>> মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকা - র নির্দেশমত প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর পুনরায় প্রতিবেদনটি লিপিবদ্ধ করা হল। 

>> প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় চিত্র সংযোজিত করা হল। 

>> পূর্ণাঙ্গ প্রকল্পটি বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া হল।    

তথ্য সংগ্রহ / পরীক্ষামূলক উপাদান / উপকরণ :- 

[ এখানে '' কাতুকুতু বুড়ো '' ছড়াটি লিখতে হবে। ] 

XI - XII Online MCQ : CLICK HERE

LIST OF ALL PROJECTS.

তথ্য - বিশ্লেষণ / প্রকল্পের বর্ণনা :-        

কাতুকুতু বুড়োর সাথে কাটানো একদিনের অভিজ্ঞতা।

গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম কাতুকুতু বুড়োর বাড়ি। তাঁর বাড়ি গিয়ে তার সঙ্গে দেখাও হল ; কিন্তু যা অভিজ্ঞতা হল , তাতে মনে হচ্ছে এরপর থেকে সপ্তসাগর পার গেলেও কাতুকুতু বুড়োর বাড়ি আর যাবো না। না , সেই অভিজ্ঞতা বিষাদ বা কষ্টের নয় ; বরং সে অভিজ্ঞতা হল এক তীব্র হাসির। এবং এই হাসির বহর এতটাই তীব্র যে হাসির ঠেলায় প্রাণ প্রায় বেরিয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল। সে বৃদ্ধ বড়ই সর্বনেশে। তার কাতুকুতুর চোটে পেটের নাড়ি যেন ছিঁড়ে যায়। 

সকাল সকাল কাতুকুতু বুড়োর বাড়ি পৌঁছে দরজায় কড়া নাড়লাম। তিনি নিজেই অভ্যর্থনা জানালেন এবং তাঁর এই অভ্যর্থনা জানানোর বিষয়টি বড়ই চমকপ্রদ ও অভিনব। তিনি আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন কাতুকুতু দিয়ে। সেই শুরু হল তাঁর কাতুকুতু দেওয়া ; তারপর থেকে কথায় কথায় , যেকোনো অজুহাতে তিনি আমাকে কাতুকুতু দিয়েই চললেন। তার এই কাতুকুতু দেওয়াটা এমন বিচিত্র ভঙ্গিতে যে - তার থেকে না যায় পালানো না যায় তাকে ছাড়ানো। 

কাতুকুতু বুড়োর বাড়ি কোথায় তা কেউ জানে না। কিন্তু আমি হঠাৎ করে তাঁর বাড়ির ঠিকানা কীভাবে পেয়ে গেলাম - তা আমি নিজেও জানি না। সম্ভবতঃ সুকুমার রায় তার কোনো জাদুবলে সে ঠিকানা আমার অজান্তেই আমাকে জানিয়েছিলেন। যাইহোক , কাতুকুতু খেয়ে অভ্যর্থনা লাভের পর আমি তাঁর বসার ঘরে প্রবেশ করলাম। সেখানে তিনি একের পর এক বিদঘুটে গল্প বলতে শুরু করলেন। কোন দেশের সেই গল্পগুলো - তা আমি জানিনা। তবে গল্পগুলো শুনে হাসির চেয়ে কান্না আসছিল বেশি ; কেননা , সেই গল্পের তীব্র হাসির উপাদানে প্রভাবিত হয়ে হাসতে হাসতে আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। যদিও গল্পগুলোর কোনো মাথা মুন্ডু নেই , তবুও কাতুকুতু বুড়োর সামনে সেগুলি মন দিয়ে শুনতে হত এবং বুড়োর দিকে তাকিয়ে থাকতে হত।       

শুধু যদি তিনি গল্প বলতেন তাও নাহয় রক্ষে ছিল ; গল্পের সঙ্গে চলতো গায়ের উপর সুড়সুড়ি দেওয়া। গল্প বলতে বলতে কাতুকুতু বুড়ো একটি লম্বা পালক দিয়ে সুড়সুড়ি দিতেন। একদিকে তার কাতুকুতু , তারপর তার বিদঘুটে গল্প , তার উপর সুড়সুড়ি - এই তিনের সম্মিলিত আক্রমণে আমি রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। তাঁর গল্পগুলো কতটা উদ্ভট ছিল তা তাঁর একটি গল্প শুনলেই বোঝা যায়। গল্পটি হল কেষ্টদাসের পিসির গল্প। কেষ্টদাসের পিসি নাকি কুমড়ো , কচু , হাঁসের ডিম আর তিসি বিক্রি করত। ডিমগুলো ছিল লম্বা , কুমড়োগুলো ছিল বাঁকা , আর কচুর গায়ে রং বেরঙের আলপনা আঁকা থাকতো। সেই পিসি নাকি অষ্টপ্রহর মিহি আওয়াজে '' ম্যাও ম্যাও ম্যাও বাকুম বাকুম ভৌ ভৌ ভৌ চিঁহি '' - গানটি করত। কাতুকুতু বুড়োর কাছে এইরকম পিসির বর্ণনা শুনে আর তার গানের কথা শুনে তো হাসতে হাসতে পেটের সমস্ত নাড়ি জড়িয়ে যাবেই। 

একটু আগে পর্যন্ত কাতুকুতু বুড়ো আমাকে কাতুকুতু দিয়েছিলেন , সুড়সুড়ি দিয়েছিলেন আর উদ্ভট গল্প শুনিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর হাসির অত্যাচার এখানেই শেষ হয়নি। কেষ্টদাসের পিসির গল্প শেষ করে তিনি তিনি আমার ঘাড়ে একটি জোরালো চিমটি কাটলেন। এখানেই শেষ নয়। তারপর তিনি তাঁর খ্যাংরা কাঠির মত আঙুল দিয়ে আমার পাঁজর ও হাড়ে খোঁচা দিতে শুরু করলেন। কাতুকুতু বুড়োর এই সাঁড়াশি আক্রমণ চলতেই থাকল যতক্ষণ না আমি হেসে লুটোপুটি খেলাম। হাসতে হাসতে যখন প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হল - তখন আমার ছুটি হল। 

যাইহোক , সারাটা দুপুর কাতুকুতু বুড়োর সঙ্গে কাটালাম এবং হাসির তীব্রতায় প্রানটাকে কোনমতে বাঁচিয়ে ঘরে ফিরে এলাম। তাই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছি যে , আর যেখানেই যাই না কেন , কাতুকুতু বুড়োর কাছে আর কখনই যাব না। বাড়ি ফিরে এসেই আমি আমার পরিচিত সকলকেই কাতুকুতু বুড়োর কাছে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু সকলেই তো দেখছি হাসতে ভালোবাসে ; তারা সকলেই কাতুকুতু বুড়োর কাছে যেতে চায়। এখন তারা সকলেই আমার কাছে কাতুকুতু বুড়োর ঠিকানা চাইছে ; কিন্তু তাঁর ঠিকানা এই মুহূর্তে আমার মনে নেই। সুকুমার রায় যদি আবার আমাকে কাতুকুতু বুড়োর ঠিকানা বলে দেন , তাহলে আমি সকলকে সেই ঠিকানা দেব।   

উপসংহার :- 
বাংলা সাহিত্যের সুবর্ণ সম্ভারের মধ্যে একটি অন্যতম সৃষ্টি হল কাতুকুতু বুড়ো। কাল্পনিক সৃষ্টিশীলতায় কাতুকুতু বুড়ো এক অনন্য চরিত্র। তাঁর চরিত্রের মধ্যে সংযোজিত হয়েছে বিচিত্র বৈশিষ্টের সমাবেশ। কাতুকুতু বুড়োর সঙ্গে একটি দিন কাটানোর কাল্পনিক অভিজ্ঞতা - র বিষয়ে প্রকল্প রচনা শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীলতাকে ডানা মেলে উড়ে যেতে সাহায্য করে।         

গ্রন্থপঞ্জি :- 

সুকুমার সাহিত্য সমগ্র ( প্রথম খন্ড ) - প্রকাশক : সত্যজিৎ রায়।   

XI - XII Online MCQ : CLICK HERE

LIST OF ALL PROJECTS.
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Older Posts

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hellow viewers, myself Nandan Dutta reside at Maheshpur ,Malda, West Bengal, India.

My intent to make the website is to share my view and knowledge to the HS students. They can easily find projects, HS suggestion and many more here.


Categories

  • Career (2)
  • CLASS 11 (XI) (1)
  • Class XI 1st Semester (7)
  • CLASS XI 2nd Semester (16)
  • H.S. 3rd SEM (9)
  • H.S. 4th SEM (6)
  • H.S. EDUCATION (5)
  • H.S. HISTORY (1)
  • HS SOCIOLOGY (2)
  • HS SUGGESTION (1)
  • INDIAN HISTORY (35)
  • NCERT (1)
  • POLITY (61)
  • PROJECT (96)
  • Sociological Studies (79)
  • Teaching & Education (128)
  • TEST PAPERS SOLVE (11)
  • TEST PAPERS SOLVE 2020 (7)
  • WORLD HISTORY (53)
  • XI EDUCATION (7)
  • XI HISTORY (3)
  • XI POL SC (1)
  • XI SOCIOLOGY (1)
  • XII Bengali (1)
  • XII Sanskrit (1)

recent posts

Sponsor

Facebook

Blog Archive

  • September 2025 (1)
  • August 2025 (10)
  • July 2025 (14)
  • June 2025 (4)
  • May 2025 (23)
  • April 2025 (75)
  • March 2025 (32)
  • December 2024 (5)
  • November 2024 (70)
  • October 2024 (1)
  • September 2024 (1)
  • July 2024 (5)
  • June 2024 (3)
  • April 2024 (2)
  • March 2024 (3)
  • February 2024 (11)
  • January 2024 (1)
  • November 2023 (4)
  • October 2023 (8)
  • September 2023 (10)
  • April 2023 (9)
  • March 2023 (18)
  • February 2023 (2)
  • January 2023 (1)
  • December 2022 (3)
  • November 2022 (3)
  • October 2022 (4)
  • September 2022 (16)
  • August 2022 (3)
  • July 2022 (5)
  • June 2022 (5)
  • April 2022 (23)
  • March 2022 (10)
  • February 2022 (18)
  • January 2022 (30)
  • December 2021 (8)
  • November 2021 (12)
  • October 2021 (2)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (2)
  • July 2021 (2)
  • June 2021 (5)
  • May 2021 (1)
  • April 2021 (2)
  • November 2020 (1)
  • October 2020 (1)
  • August 2020 (2)
  • June 2020 (3)
  • May 2020 (1)
  • October 2019 (3)
  • September 2019 (5)
  • August 2019 (3)
  • June 2019 (3)
  • May 2019 (3)
  • April 2019 (1)
  • March 2019 (2)
  • February 2019 (3)
  • December 2018 (1)
  • November 2018 (3)
  • October 2018 (4)
  • August 2018 (1)

Total Pageviews

Report Abuse

About Me

subhankar dutta
View my complete profile

Sponsor

Pages

  • Home
  • Project
  • জাতীয় শিক্ষানীতি 1986 SAQ
  • EDU FINAL A 2020
  • Class XI ( Class 11 ) Sociology chapter wise MCQ &...
  • Class 12 (H.S.) History Chapter Wise MCQ & SAQ
  • Class 11 (XI) Sociology 1st chapter MCQ & SAQ
  • H.S. Sociology notes .
  • H.S. Sociology 1st chapter MCQ & SAQ ( only reduce...
  • H.S. Education 10th chapter SAQ & MCQ
  • H.S. Education 10th chapter MCQ & SAQ
  • CLASS 12 SOCIOLOGY 4TH CHAPTER SAQ WITH ANSWER

Pages

  • About Me
  • Contact
  • Privacy Policy
  • Disclaimer

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates