Pages

Powered by Blogger.

Pages

Pages

Pages

facebook twitter instagram pinterest bloglovin Email
Career CLASS 11 (XI) Class XI 1st Semester CLASS XI 2nd Semester H.S. 3rd SEM H.S. EDUCATION H.S. HISTORY HS SOCIOLOGY HS SUGGESTION INDIAN HISTORY NCERT POLITY PROJECT Sociological Studies Teaching & Education TEST PAPERS SOLVE TEST PAPERS SOLVE 2020 WORLD HISTORY XI EDUCATION XI HISTORY XI POL SC XI SOCIOLOGY XII Bengali XII Sanskrit

Pages

Nandan Dutta

School project and education news.

Pages

তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের নাট্যরূপ। 

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের নাট্যরূপ। 




প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত '' তেলেনাপোতা আবিষ্কার '' গল্পের নাট্যরূপ প্রকাশিত হল। নাট্যরূপ প্রদানের প্রয়োজনে গল্পের কিছু দৃশ্য , বর্ণনা - ইত্যাদির পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে চরিত্র এবং গল্পের মূল ঘটনাপ্রবাহ অপরিবর্তিত রয়েছে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রকল্প এবং বি এ বাংলা বিভাগের অ্যাসাইনমেন্টের কাজে এই নাট্যরূপ সহায়ক হতে পারে। 

নাট্যরূপ : তেলেনাপোতা আবিষ্কার [ লেখক : প্রেমেন্দ্র মিত্র ] 


চরিত্রবর্গ :- 
তিন বন্ধু 
যামিনী 
যামিনীর মা 
ডাক্তারবাবু  

প্রথম দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : মঞ্চে আলো খুব কম থাকবে। মঞ্চের তিনদিকের দেওয়ালে কাপড় , পর্দা ও আলো দিয়ে খুব পুরোনো ও ভাঙাচোরা একটি ঘরের আবহ তৈরী করতে হবে। দৃশ্যটিকে যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলতে প্রয়োজনে কার্ড বোর্ড বা থার্মোকল সিটের ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের মধ্যে একটি লণ্ঠন জ্বলবে। তবে মঞ্চে আলোর ব্যবস্থা এমনভাবে করতে হবে যাতে মঞ্চে উপস্থিত তিনজনকে স্পষ্ট দেখা যায়। এক্ষেত্রে আলোর ফোকাসের ব্যবস্থা করতে হবে। 

[ তিন বন্ধু ঘরে প্রবেশ করল। প্রত্যেকের হাতে একটি করে স্যুটকেস বা ঐধরণের ব্যাগ থাকবে। মঞ্চে প্রবেশ করে তিনজন তাদের হাতের ব্যাগ লণ্ঠনের একপাশে রাখবে। ] 

প্রথম বন্ধু : [ রুমাল দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে ] যাক শেষ পর্যন্ত তেলেনাপোতায় এসে পৌঁছলাম। 

দ্বিতীয় বন্ধু : [ খুব ক্লান্ত ভঙ্গিমায় ] যেভাবে আমরা এলাম , তাতে পৌঁছতে পারবোনা বলেই ভেবেছিলাম। 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , প্রথমে বাস , আর তারপর সেই গরুর গাড়ি ! ওফফ , যা গেল কয়েকটা ঘন্টা ! মনে হচ্ছে কত যুগ যেন পার করে এসেছি ! 

প্রথম বন্ধু : ঠিক তাই। যেমন ছিল গরুগুলো , তেমনি ছিল গাড়িটা ! দুটোই যেন কোনো বামন দেশ থেকে উঠে এসেছে। 

[ তিনজনই হেঁসে উঠল। ] 

দ্বিতীয় বন্ধু : যাক , তেলেনাপোতায় যখন এসে পৌঁচেছি , তখন আরাম করে প্রচুর মাছ ধরবো আর খাবো। 

[ আবার সকলে হেঁসে উঠল। ] 

প্রথম বন্ধু : এই তোরা ছিপ - টিপগুলো ঠিকমত নিয়ে এসেছিস তো ? 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , হ্যাঁ ; এই তো ঘরের বাইরে রেখে এলাম। 

[ তিন বন্ধু কথা বলতে বলতে মাঝে মাঝেই মশা তাড়ানোর অঙ্গভঙ্গি করছে। ] 

দ্বিতীয় বন্ধু : ঘরটার অবস্থা দেখ। 

প্রথম বন্ধু : হ্যাঁ , একেবারে ধ্বংসপ্রাপ্ত। তাও ও গরুর গাড়ির গাড়োয়ান ছিল বলে রক্ষে। কমসেকম এই জলের কলসি আর লণ্ঠনটাতো দিয়ে গেল। 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , এটাই অনেক। তবে ঘরে কিন্তু মশা অনেক। 

প্রথম বন্ধু : কি আর করা যাবে ! এক কাজ কর , চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড় , রাত অনেক হয়েছে। 

দ্বিতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , সেই ভালো। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

[ তিনজনে মিলে ব্যাগ থেকে কিছু চাদর ইত্যাদি বের করে শোয়ার উপক্রম করতে শুরু করল। তারপর তিনজনই শুয়ে পড়ল। মঞ্চের আলো আরো কমে এল। লণ্ঠনটি এখনো জ্বলছে। নেপথ্যে ঝিঁঝি পোকার ডাক। এই রকম ভাবে ১০ - ১৫ সেকেন্ড কাটবে। তারপর হঠাৎ প্রথম বন্ধু মশার আক্রমণে ব্যাস্ত হয়ে উঠে পড়বে। ] 

প্রথম বন্ধু [ উঠে পড়ে এবং মশা তাড়ানোর অঙ্গভঙ্গি করতে করতে ] : বাপ রে বাপ ! এত মশা এখানে ! ( হঠাৎ যেন একটি মশাকে ধরেছে এমন ভঙ্গি করে ) বাব্বাঃ , এতো মশাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো কুলীন , ম্যালেরিয়া দেবীর অদ্বিতীয় বাহন অ্যানোফিলিস ! ( একটু থেমে ) নাহঃ , আর এভাবে শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে না ; একটু হাঁটাহাঁটি করি  ............ 

[ প্রথম বন্ধু উঠে পড়ল এবং মঞ্চের মধ্যেই ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করল। ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে প্রথম বন্ধু মঞ্চের সামনে এসে দাঁড়াবে। এমনভাবে দাঁড়াবে যাতে প্রথম বন্ধুর মুখ মঞ্চের উত্তরে বা দক্ষিণে থাকে এবং প্রথম বন্ধু হঠাৎ করে মঞ্চের পেছনে অর্থাৎ পশ্চিমে তাকাবে। ] 

প্রথম বন্ধু : [ একটু অবাক , কিছুটা আশ্চর্য ] কী ওটা ? একটা বাড়ি না ? ইশ , একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়িটার জানলাগুলোকে মনে হচ্ছে চক্ষুহীন কোটর। 

[ এইবার মঞ্চের পিছনের পর্দায় অর্থাৎ পশ্চিমে ধীরে ধীরে একজন নারীর আবছা ছায়াময় অবয়ব দেখা যাবে। প্রথম বন্ধু সেটি দেখে সচকিত হয়ে উঠবে। নেপথ্যে ভয়ের আবহসঙ্গীত। ] 

প্রথম বন্ধু : কে ? কে ওখানে ? কে ওখানে ? 

[ এই কথা বলতে বলতেই ছায়ামূর্তিটি পর্দা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে। ] 

প্রথম বন্ধু : এইখানেও মানুষ থাকে ! এই ধ্বংসপ্রাপ্ত , জীর্ণ অট্টালিকাতেও মানুষ ! একজন নারী ! 

[ ধীরে ধীরে আলো নিভে এল। ]  

দ্বিতীয় দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : এবার মঞ্চে দিনের উজ্জ্বল আলো। নেপথ্যে পাখির কিচির - মিচির শব্দ। এবার ঘরে কিছু ভাঙাচোরা আসবাব দেখা যাবে। 

[ তিন বন্ধু চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। প্রথম বন্ধুর ঘুম ভেঙে গেল। সে আড়মোড়া ভাঙলো। তারপর একটু সচকিত হয়ে গতরাতে যেখানে একজন নারীর আবছায়া অবয়ব দেখা গিয়েছিল - সেদিকে একবার তাকালো। তারপর বন্ধুদের দিকে ফিরে তাদেরকে ঘুম থেকে তুলতে শুরু করল। একটু ডাকাডাকিতে বাকি দুই বন্ধু ঘুম থেকে উঠল। তারাও আড়মোড়া ভাঙলো। ] 

তৃতীয় বন্ধু [ একটু ঘুমের ঝোঁক এখনও আছে ] : তবে তোরা যাই বল , শেষ পর্যন্ত ঘুমটা খারাপ হয়নি। 

প্রথম বন্ধু : হ্যাঁ , যা খাটনি গেছে গতকাল ! ঘুম তো ভালো হওয়ারই ছিল। ....... ( একটু থেমে ) ....... জানিস কাল একটা আশ্চর্য ব্যাপার ঘটেছে ! 

দ্বিতীয় বন্ধু : কখন ? 

প্রথম বন্ধু : এই  .......... তোরা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর। 

তৃতীয় বন্ধু : সে'কি , তুই তারপরে ঘুমোসনি ? 

প্রথম বন্ধু : না রে , ঘুম আসছিল না। ওই সামনের দিকে একটু পায়চারি করছিলাম। হঠাৎ একটা আশ্চর্য ব্যাপার লক্ষ্য করলাম।  

তৃতীয় বন্ধু : আশ্চর্য ব্যাপার ! সেটা কী ? 

প্রথম বন্ধু : ওই উল্টোদিকের ভাঙাচোরা বাড়ির জানলাটায় হঠাৎ দেখি একটা আবছায়াযুক্ত নারী অবয়ব ! 

দ্বিতীয় বন্ধু : [ অত্যন্ত অবাক ] তাই না'কি ! [ ভয় পেয়ে ] ভুত নয়তো ? চল চল , আমরা আজকেই এখান থেকে চলে যাই। ভুতের খপ্পরে পড়ে কী লাভ ! 

তৃতীয় বন্ধু [ যেন অপর দুই বন্ধুর কথায় খুব মজা পেয়েছে। হো হো করে হাঁসতে হাঁসতে ] : আরে ভুত নয় রে ভুত নয়। ও যামিনী ছিল। 

প্রথম বন্ধু [ আরো বেশি অবাক ] : যামিনী ! কে যামিনী ? 

তৃতীয় বন্ধু : ওই সামনের বাড়িতে থাকে। আমারই দূর সম্পর্কের জ্ঞাতি। আমাকে মণিদা বলে ডাকে। ও আর ওর মা এই সামনের ভাঙাচোরা বাড়িটাতে থাকে। বড় দুঃখী মেয়ে। 

প্রথম বন্ধু : কেন ! দুঃখী কেন ? 

তৃতীয় বন্ধু : ছোটবেলাতেই ওর বাবা মারা যায়। তারপর থেকে মা'ও শয্যাশায়ী। যামিনী একার হাতেই সংসার চালায়। বিয়ের বয়স অনেকদিন আগেই হয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ে হয়নি। বুড়ি , মানে যামিনীর মা , নিরঞ্জন নামে তাঁর এক দূরসম্পর্কের বোনপোর সঙ্গে যামিনীর বিয়ে দিতে চেয়েছিল। ছেলেটার নাম নিরঞ্জন। সে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। বিদেশে চাকরি করতে যাচ্ছি বলে পালিয়েছে। কিন্তু বুড়ি এখনো সেই আসতেই বসে আছে যে , নিরঞ্জন এসে তাঁর মেয়েকে বিয়ে করবে। 

[ সকলেই কিছুক্ষন চুপচাপ ] 

তৃতীয় বন্ধু : বাদ দে এসব কথা , আজ যে যা পারিস মাছ ধরে নে ; তেলেনাপোতায় এসেছিস যখন ; তখন কি আর মাছ না ধরলে চলে ! আর কাল দুপুরে কোথাও যাওয়া হবে না , যামিনীর বাড়িতে দুপুরের খাওয়ার নেমন্তন্ন আছে। 

প্রথম বন্ধু : তাই নাকি ! যাবি তুই ? 

তৃতীয় বন্ধু : যাবো না তো কি এমনি বলছি ? সবারই নেমন্তন্ন আছে ; সবাইকেই যেতে হবে। 

[ আলো ধীরে ধীরে নিভে এল। ] 

তৃতীয় দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : এই দৃশ্যে দিনের উজ্জ্বল আলো থাকবে। মঞ্চের মধ্যে কোনোপ্রকার আসবাব থাকবে না। মঞ্চে বিভিন্ন গাছপালার ব্যবস্থা করতে পারলে ভাল হয়। নেপথ্যে পাখির কিচির - মিচির আর মাঝে মাঝে উদাস ঘুঘুর ডাক। প্রথম বন্ধু যখন যখন জলে ছিপ ফেলবে তখন জলে ছলাৎ ছলাৎ শব্দের ব্যবস্থা নেপথ্যে রাখতে হবে। 

[ প্রথম বন্ধু মঞ্চে প্রবেশ করল। হাতে ছিপ ; অপর হাতে একটি ব্যাগ। চারদিক দেখতে দেখতে সে মঞ্চে প্রবেশ করবে। তারপর একটি জায়গা হঠাৎ পছন্দ হয়ে গেছে এমন ভঙ্গি করবে। ] 

প্রথম বন্ধু : যাক , এই একটা ভালো জায়গা পেলাম। মাছ ধরার জন্য এই জায়গাটা উপযুক্ত। 

[ এই বলে প্রথম বন্ধু দর্শকদের দিকে মুখ করে মঞ্চের একেবারে সামনের দিকে বসে পড়বে। ছিপ তৈরী করবে। ব্যাগ থেকে টোপ বের করে বঁড়শিতে গাঁথার ভঙ্গি করবে। তারপর ছিপের বঁড়শিটিকে মঞ্চের নীচে এমনভাবে ফেলবে যেন মনে হবে সে ছিপ জলে ফেলেছে। ] 

প্রথম বন্ধু : [ উৎসাহিত ] এই তো মাছ টোপ গিলেছে। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

[ এই বলে সে ছিপটাকে টান দেবে ; কিন্তু মাছ উঠবে না। এই একই প্রক্রিয়া আরও দুই - তিন বার চলবে। কিন্তু কোনোবারই মাছ উঠবে না। ] 

প্রথম বন্ধু : [ হতাশ ] শুনেছিলাম , তেলেনাপোতায় মাছের না'কি ধরা দেওয়ার জন্য বসে থাকে ! এখানে তো দেখছি তার উল্টো। মাছগুলো বড়ই চালাক। শুধু শুধু টোপ খেয়ে পালাচ্ছে। 

[ এই কথা চলতে চলতেই মঞ্চে যামিনী প্রবেশ করবে। কোমরে ধরা আছে একটি পেতলের কলসি। যামিনী মঞ্চে প্রবেশ করেই প্রথম বন্ধুর অসফল মাছ ধরা ও হতাশ অঙ্গভঙ্গি দেখে মুচকি মুচকি হেসে প্রথম বন্ধুর দিকে তাকাতে তাকাতেই মঞ্চের একেবারে সামনের দিকে চলে আসবে। তার অবস্থান এখন প্রথম বন্ধুর সমান্তরালে। যামিনী কলসিটি নিয়ে পুকুর থেকে জল নেওয়ার ভঙ্গি করবে। ঠিক এই সময় প্রথম বন্ধু যামিনীকে দেখতে পাবে। ঠিক সেই সঙ্গে সঙ্গেই নেপথ্যে মিষ্টি সুর বেজে উঠবে। প্রথম বন্ধু যামিনীর দিকে অবাক চোখে হাঁ করে তাকিয়ে আছে। ] 

যামিনী : [ একটু হাসি , একটু চটুলতা। প্রথম বন্ধুর ছিপের দিকে তাকিয়ে ] : বসে আছেন কেন , টান দিন ! 

[ প্রথম বন্ধু এই কথা শুনে তাড়াহুড়ো করে ছিপে টান দেয় এবং এবারও বঁড়শিতে কোনো মাছ ছিল না। তার অবস্থা দেখে যামিনী খিলখিল করে হেসে ওঠে এবং চলে যাওয়ার উপক্রম করে। প্রথম বন্ধু আরও অবাক হয়ে যামিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে। তার চলে যাওয়াটাও হাঁ করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। নেপথ্যে মিষ্টি সুর বাজতেই থাকে। আলো ধীরে ধীরে নিভে আসে। ]   

চতুর্থ দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : মঞ্চে মাঝারি আলো। ঘরে কিছু সাধারণ ভাঙাচোরা আসবাব। এই দৃশ্যে অবশ্যই আলোর ফোকাস ব্যবহার করতে হবে।  

[ মঞ্চে তিনবন্ধু উপস্থিত। তারা সকলেই খেতে বসেছে। যামিনী খাবার পরিবেশন করছে। মঞ্চের অন্য এক দিকে একটি খাটিয়া। তাতে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে যামিনীর মা। আলোর ফোকাস তিনবন্ধু এবং যামিনীর দিকে। এখন কোনো অবস্থাতেই যামিনীর মায়ের দিকে আলোর ফোকাস যাবে না। যতক্ষণ খাবার পর্ব চলবে ততক্ষন মঞ্চে যামিনীর মায়ের উপস্থিতি টেরই পাওয়া যাবে না। খাওয়া - দাওয়া চলছে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : তা হ্যাঁ রে যামিনী , হঠাৎ আজ আমাদের নেমন্তন্ন কেন ? বিশেষ কিছু আছে না'কি ? 

যামিনী : না মণিদা , বিশেষ কিছুই নেই ; তুমি এতদিন পর এখানে এলে তাই সামান্য একটু সেবা করার সুযোগ পেলাম। 

[ তৃতীয় বন্ধু এবং যামিনীর কথোপকথনের সময় তৃতীয় বন্ধু খেতে খেতেই যামিনীর সঙ্গে কথা বলবে , দ্বিতীয় বন্ধু কোনো দিকে না তাকিয়ে খেয়েই যাবে। কিন্তু প্রথম বন্ধু খাবে খুব ধীর গতিতে। সে খেতে খেতে তৃতীয় বন্ধু ও যামিনীর কথোপকথন মনোযোগ দিয়ে শুনবে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : তা যামিনী , মাসিমা এখন কেমন আছেন ? 

যামিনী : [ হতাশ ও উদাস ] ওই  ............ একই রকম। সবসময় আমার বিয়ে হল না - এই চিন্তাই তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এখনো নিরঞ্জনের আশায় বসে আছেন। 

[ এই সময় হঠাৎ যামিনীর মায়ের কাতর ও করুন স্বর শোনা যাবে। তিনি যামিনীকে কাতরভাবে ডাকছেন। তার ডাক শোনার পর যামিনী সচকিত হয়ে ওঠে। ] 

যামিনী : তোমরা খাও মণিদা ; আমি এক্ষুনি আসছি। 

[ এই বলে যামিনী সেখান থেকে চলে যাওয়ার উপক্রম করে। যামিনী ধীরে ধীরে মঞ্চের সেই দিকে হাঁটতে থাকে যেদিকে একটি খাটিয়ার উপর তার মা শুয়ে আছে। যামিনীর হেঁটে যাওয়ার সময় আলোর ফোকাস যামিনীকে অনুসরণ করবে। যামিনী তার মায়ের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলার অঙ্গভঙ্গি করবে। এখানে কোনো সংলাপের প্রয়োজন নেই। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে যামিনী আবার ফিরে যেতে শুরু করবে তিন বন্ধুর দিকে। আলোর ফোকাস এবারও যামিনীকে অনুসরণ করবে। যামিনী আবার তিন বন্ধুর সামনে এসে দাঁড়াবে। এবার তার মুখ উদ্বিগ্ন। ] 

যামিনী : মণিদা , একটু এখানে শুনে যাও। 

[ যামিনী তিন বন্ধুর থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াবে। তার মুখ অনেকটা দর্শকদের দিকে ফেরানো। মণিদা অর্থাৎ তৃতীয় বন্ধু খাওয়া ছেড়ে যামিনীর দিকে এগিয়ে যাবে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : কী হয়েছে যামিনী ? 

যামিনী : [ কাতর এবং বিপন্ন স্বর ] : মা তো কিছুতেই শুনছেন না। তোমাদের আসার খবর পাওয়া অবধি কী যে অস্থির হয়ে উঠেছেন কী বলব ! 

তৃতীয় বন্ধু : [ একটু অবাক একটু বিরক্তি ] : ওঃ , সেই খেয়াল এখনো ! নিরঞ্জন এসেছে , ভাবছেন বুঝি ? 

যামিনী : হ্যাঁ , কেবলই বলছেন , সে নিশ্চই এসেছে। শুধু লজ্জায় আমার সঙ্গে দেখা করতে পারছে না , আমি জানি। তাকে ডেকে দে। কেন তুই আমার কাছে লুকোচ্ছিস ! 

তৃতীয় বন্ধু : সত্যি , ভাবা যায়না। 

যামিনী : কী যে আমি করব ভেবে পাচ্ছি না। অন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে আজকাল এত অধৈর্যতা বেড়েছে যে , কোনো কথা বোঝালে বোঝেন না , রেগে মাথা খুঁড়ে এমন কান্ড করেন যে , তখন ওঁর প্রাণ বাঁচানো দায় হয়ে ওঠে ! 

তৃতীয় বন্ধু : হুঁম , এ তো বড় মুশকিল দেখছি। চোখ থাকলেও নাহয় দেখিয়ে দিতাম যে , যারা এসেছে তাদের কেউ নিরঞ্জন নয়। 

[ হঠাৎ যামিনীর মায়ের তীব্র চিৎকার ; চিৎকার করে তিনি যামিনীকে ডাকছেন। তাঁর ডাক শুনে যামিনী ও তৃতীয় বন্ধু দুজনেই চমকে ওঠে। ] 

যামিনী [ কাতর অনুরোধ ] : তুমি একবারটি চলো মণিদা , যদি একটু বুঝিয়ে - শুঝিয়ে ঠান্ডা করতে পার। 

তৃতীয় বন্ধু : আচ্ছা , তুই যা , আমি আসছি। 

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।

[ এবার যামিনী ধীরে ধীরে তার মায়ের দিকে ফিরে যাবে। কিন্তু আলোর ফোকাস এবার থাকবে তৃতীয় বন্ধুর উপর। তৃতীয় বন্ধু অপর দুই বন্ধুর কাছে আসলো। আলোর ফোকাস তিন বন্ধুর উপর। ] 

প্রথম বন্ধু : [ উদ্বিগ্ন ] কী হয়েছে রে ? 

তৃতীয় বন্ধু : কী আবার হবে ! ....................... এ এক আচ্ছা জ্বালা হয়েছে যা হোক। বুড়ির হাত - পা পড়ে গেছে , চোখ নেই , তবু বুড়ি পণ করে বসে আছে কিছুতেই মরবে না। 

প্রথম বন্ধু : ব্যাপারটা কী ? 

তৃতীয় বন্ধু : ব্যাপার আর কী ! নিরঞ্জন বলে যে ছেলেটার কথা তোদের বলেছিলাম , মানে মাসির ওই দূর সম্পর্কের বোনপো , তার সঙ্গে বুড়ি ছেলেবেলায় যামিনীর সম্বন্ধ ঠিক করেছিলেন। বছর চারেক আগেও সে ছোকরা এসে ওঁকে বলে গিয়েছিল বিদেশের চাকরি থেকে ফিরে ওঁর মেয়েকে সে বিয়ে করবে। সেই থেকে বুড়ি এই অজগর - পুরীর ভেতর বসে সেই আশায় দিন গুনছে। 

প্রথম বন্ধু : নিরঞ্জন কি এখনো বিদেশ থেকে ফেরেনি ? 

তৃতীয় বন্ধু : আরে , সে বিদেশে গিয়েছিল কবে যে ফিরবে ! নেহাত বুড়ি নাছোড়বান্দা বলে তাঁকে এই ধাপ্পা দিয়ে গিয়েছিল। এমন ঘুঁটে - কুড়ুনীর মেয়েকে উদ্ধার করতে তার দায় পড়েছে ! সে কবে বিয়ে - থা করে দিব্যি সংসার করছে। কিন্তু সেকথা বুড়িকে বলে কে ? বললে বিশ্বাসই করবেন না , আর - বিশ্বাস যদি করেন তা হলে এখুনি তো দম ছুটে অক্কা ! কে মিছিমিছি পাতকের ভাগী হবে ? 

প্রথম বন্ধু : যামিনী নিরঞ্জনের কথা জানে ? 

তৃতীয় বন্ধু : তা আর জানে না ! কিন্তু মা'র কাছে বলবার উপায় তো নেই। যাই , কর্মভোগ সেরে আসি। 

[ তৃতীয় বন্ধু যামিনীর মায়ের দিকে পা বাড়াবে। সেই মুহূর্তে হঠাৎ প্রথম বন্ধু উঠে দাঁড়াবে। ]

প্রথম বন্ধু : চলো , আমিও যাব। 

তৃতীয় বন্ধু ( অবাক হয়ে প্রথম বন্ধুর দিকে ফিরে চেয়ে ) : তুমি যাবে !

প্রথম বন্ধু : হ্যাঁ , কোনো আপত্তি আছে গেলে ? 

তৃতীয় বন্ধু : না , আপত্তি কীসের ! 

[ প্রথম বন্ধু ও তৃতীয় বন্ধু যামিনীর মায়ের দিকে এগিয়ে যাবে। ধীরে ধীরে তারা যামিনীর মায়ের কাছে আসবে। এইবার আলোর ফোকাস যামিনীর মা , প্রথম ও তৃতীয় বন্ধু এবং যামিনীর উপর। যামিনীর মা একটি খাটিয়ায় শুয়ে আছেন। অত্যন্ত জীর্ণ অবস্থা। একপাশে যামিনী পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে। ] 

যামিনী : মা , মণিদা এসেছেন। 

যামিনীর মা : ( রুগ্ন কণ্ঠে ) : কে , ও মণি ! [ প্রথম বন্ধুর উদ্দেশ্যে ] আর ও কে ? নিরঞ্জন ! নিরঞ্জন এলি না'কি বাবা ! অভাগী মাসিকে এতদিনে মনে পড়ল বাবা ? তুই আসবি বলে প্রাণটা যে আমার কন্ঠায় এসে আটকে আছে। কিছুতেই নিশ্চিন্তি হয়ে মরতে পারছিলাম না। এবার তো আর অমন করে পালাবি না ? 

[ তৃতীয় বন্ধু যামিনীর মা'কে কিছু একটা বলতে যাবে ; এমন সময় হঠাৎ প্রথম বন্ধু যামিনীর মায়ের হাতটা আস্বস্ত করার ভঙ্গিতে ধরে ফেলবে। ] 

প্রথম বন্ধু : না মাসিমা , আর পালাব না। 

[ তৃতীয় বন্ধু ও যামিনীর মুখে বিস্ময়ের প্রতিক্রিয়া। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বন্ধুও সেখানে উঠে এসেছে। সেও অবাক। ] 

যামিনীর মা : ( উচ্ছসিত কণ্ঠ ) আমি জানতাম , তুই না এসে পারবি না বাবা। তাই তো অমন করে এই প্রেতপুরী পাহারা দিয়ে দিন গুনছি। 

[ সকলে এখনো অবাক হয়েই আছে। কেবল যামিনীর মুখে যেন একটু আলোর আভাস। ] 

যামিনীর মা : যামিনীকে নিয়ে তুই সুখী হবি বাবা। আমার পেটে হয়েছে বলে বলছি না , এমন হয় না। শোকে - তাপে বুড়ো হয়ে মাথার ঠিক নেই , রাতদিন খিটখিট করে মেয়েটাকে যে কত যন্ত্রণা দিই , তা কি আমি জানি না। তবু মুখে ওর রা নেই। এই শ্মশানের দেশ , দশটা বাড়ি খুঁজলে একটা পুরুষ মেলে না। আমার মতো ঘাটের মড়ারা শুধু ভাঙা ইঁট আঁকড়ে এখানে - সেখানে ধুঁকছে , এর মধ্যে একাধারে মেয়ে পুরুষ হয়ে ও কী না করেছে ! [ কিছুক্ষন সকলে চুপ। ] 

যামিনীর মা ( নীরবতা ভঙ্গ করে ) : যামিনীকে তুই নিবি তো বাবা ? তোর শেষ কথা না পেলে আমি মরেও শান্তি পাব না। 

প্রথম বন্ধু ( একটু ধরা গলায় ) : আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা। আমার কথার নড়চড় হবে না। 

[ প্রথম বন্ধু ও যামিনীর মুখে হালকা হাসির ঝিলিক। বাকীরা সকলেই অবাক। আলো ধীরে ধীরে কমে এল। ] 

পঞ্চম দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : প্রথম দৃশ্যের অনুরূপ। 

[ মঞ্চে তিনবন্ধু উপস্থিত। সকলেই ব্যাস্তভাবে জামাকাপড় ইত্যাদি নিজের নিজের বাক্স , ব্যাগ ইত্যাদিতে গুছিয়ে নিচ্ছে। ] 

তৃতীয় বন্ধু : গরুর গাড়িটা ঠিক সময়ে আসলে হয়। 

দ্বিতীয় বন্ধু : হ্যাঁ , নাহলে তো আবার শেষ বাসটা পাব না। 

তৃতীয় বন্ধু : নে নে , তাড়াতাড়ি কর। অনেকটা দেরি হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। 

প্রথম বন্ধু : কী যেন একটা ভুলে যাচ্ছি ! 

তৃতীয় বন্ধু : কী ভুললি আবার ! 

[ মঞ্চে যামিনীর প্রবেশ। সকলে যামিনীর দিকে ফিরে চাইল। ] 

যামিনী : আজই চলে যাচ্ছ মণিদা ? 

তৃতীয় বন্ধু : হ্যাঁ রে যামিনী , না গিয়ে আর উপায় আছে ! 

যামিনী : মাছ ধরতে এসেছিলে , মাছ তো সেরকম পেলেই না।  

তৃতীয় বন্ধু : দেখি , আরেকবার আসতে হবে। 

[ এদিকে ব্যাগ গোছানো হয়ে গেছে। সকলে নিজের নিজের ব্যাগ নিয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ] 

তৃতীয় বন্ধু : তাহলে যামিনী , আসি এবার ? 

যামিনী ( প্রথম বন্ধুর উদ্দেশ্যে ) : আপনার ছিপটিপ যে পড়ে রইল ! 

প্রথম বন্ধু ( একটু হেসে প্রত্যয়ের সঙ্গে ) : থাক - না। এবারে পারিনি বলে তেলেনাপোতার মাছ কি বারবার ফাঁকি দিতে পারবে ? 

[ যামিনী ও প্রথম বন্ধু উভয়ে উভয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে। দুজনের মুখেই স্মিত হাসি। কয়েক সেকেন্ড পর তিনবন্ধু মঞ্চ থেকে প্রস্থান করল। যামিনী দাঁড়িয়েই রইল। মুখে সেই স্মিত হাসি লেগেই রয়েছে। আলো ধীরে ধীরে কমে এল। ] 

ষষ্ঠ দৃশ্য :- 

মঞ্চসজ্জা : এই দৃশ্যে মঞ্চ পূর্ববর্তী দৃশ্যগুলির তুলনায় সম্পূর্ণরূপে পাল্টে যাবে। মঞ্চে একটি খাট বা চৌকি। একটি টেবিল ; তাতে কিছু বইপত্র। পাশে দু - তিনটি চেয়ার। শয্যায় চাদরমুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে প্রথম বন্ধু। 

প্রথম বন্ধু ( জ্বরের ঘোরে , গোঙানির স্বরে ) : ফিরে আসব যামিনী , আমি ফিরে আসব। 

[ হন্তদন্ত হয়ে বাকী দুই বন্ধু ও ডাক্তারবাবুর প্রবেশ। ডাক্তারবাবুর পোশাক ও সজ্জা এমন হবে যাতে তাকে দেখলেই ডাক্তারবাবু মনে হয়। গায়ে অ্যাপ্রন , গলায় স্টেথোস্কোপ। ] 

তৃতীয় বন্ধু : আসুন আসুন ডাক্তারবাবু , এইখানে। 

[ সকলে গিয়ে পৌঁছল প্রথম বন্ধুর শয্যার কাছে। ডাকরবাবু গলা থেকে স্টেথোস্কোপ খুললেন এবং তারপর প্রথম বন্ধুকে পরীক্ষা করতে শুরু করলেন। ] 

ডাক্তারবাবু ( গম্ভীর মুখে ) : হুঁম , এক শত পাঁচ ডিগ্রি  ................ তা ম্যালেরিয়াটি কোথা থেকে বাগালেন ? 

তৃতীয় বন্ধু : দেখুন না কয়েকদিন থেকেই বেশ জ্বর। আমরা কতবার বলছি ডাক্তার দেখাতে , কিন্তু দেখায় না। গত দুদিন থেকে শয্যাশায়ী। আমরা জানতে পেরে আপনাকে ডেকে এনেছি। 

ডাক্তারবাবু : আমি কয়েকটি ঔষধ লিখে দিচ্ছি। এখন থেকেই খাওয়াতে শুরু করুন। একটি ডোজও যেন বাদ না পড়ে। সাতদিন পর আরেকবার রক্তপরীক্ষা করাতে হবে। আজ চলি। 

[ ডাক্তারবাবু উঠে পড়লেন। তার সঙ্গে দুই বন্ধুও প্রস্থান করল। কিছুক্ষন পর প্রথম বন্ধু খুব ধীরে ধীরে নিজের শয্যায় উঠে বসল। অত্যন্ত অসুস্থ থাকার অভিনয় করতে হবে। গলার স্বরেও অসুস্থতা ধরা পড়বে। ] 

প্রথম বন্ধু ( স্বগতোক্তি / দর্শকদের উদ্দেশ্যে ) : সবকিছু কেমন কেমন ঝাপসা ঝাপসা অলীক স্মৃতির মত লাগছে। স্মৃতির অনেক ধোয়া - মোছা যেন হয়ে গিয়েছে। তেলেনাপোতার স্মৃতি আমার কাছে যেন আজ যেন একটা অস্ত যাওয়া তারা , যেন একটা স্বপ্ন। সত্যিই কি তেলেনাপোতা বলে কোথাও কিছু নেই ? আর যামিনী !  ................... সবই কি আমার দুর্বল মুহূর্তের অবাস্তব কুয়াশার কল্পনা মাত্র। 

[ প্রথম বন্ধু একদৃষ্টে দর্শকদের দিকে তাকিয়ে থাকল। পর্দা ধীরে ধীরে নেমে এল। ]   

সকল প্রকল্পের তালিকা পেতে এখানে CLICK কর।     
Share
Tweet
Pin
Share
No comments
Newer Posts
Older Posts

Contact Form

Name

Email *

Message *

About me

Hellow viewers, myself Nandan Dutta reside at Maheshpur ,Malda, West Bengal, India.

My intent to make the website is to share my view and knowledge to the HS students. They can easily find projects, HS suggestion and many more here.


Categories

  • Career (2)
  • CLASS 11 (XI) (1)
  • Class XI 1st Semester (7)
  • CLASS XI 2nd Semester (16)
  • H.S. 3rd SEM (9)
  • H.S. EDUCATION (5)
  • H.S. HISTORY (1)
  • HS SOCIOLOGY (2)
  • HS SUGGESTION (1)
  • INDIAN HISTORY (30)
  • NCERT (1)
  • POLITY (61)
  • PROJECT (96)
  • Sociological Studies (79)
  • Teaching & Education (128)
  • TEST PAPERS SOLVE (11)
  • TEST PAPERS SOLVE 2020 (7)
  • WORLD HISTORY (53)
  • XI EDUCATION (7)
  • XI HISTORY (3)
  • XI POL SC (1)
  • XI SOCIOLOGY (1)
  • XII Bengali (1)
  • XII Sanskrit (1)

recent posts

Sponsor

Facebook

Blog Archive

  • July 2025 (14)
  • June 2025 (4)
  • May 2025 (23)
  • April 2025 (75)
  • March 2025 (32)
  • December 2024 (5)
  • November 2024 (70)
  • October 2024 (1)
  • September 2024 (1)
  • July 2024 (5)
  • June 2024 (3)
  • April 2024 (2)
  • March 2024 (3)
  • February 2024 (11)
  • January 2024 (1)
  • November 2023 (4)
  • October 2023 (8)
  • September 2023 (10)
  • April 2023 (9)
  • March 2023 (18)
  • February 2023 (2)
  • January 2023 (1)
  • December 2022 (3)
  • November 2022 (3)
  • October 2022 (4)
  • September 2022 (16)
  • August 2022 (3)
  • July 2022 (5)
  • June 2022 (5)
  • April 2022 (23)
  • March 2022 (10)
  • February 2022 (18)
  • January 2022 (30)
  • December 2021 (8)
  • November 2021 (12)
  • October 2021 (2)
  • September 2021 (5)
  • August 2021 (2)
  • July 2021 (2)
  • June 2021 (5)
  • May 2021 (1)
  • April 2021 (2)
  • November 2020 (1)
  • October 2020 (1)
  • August 2020 (2)
  • June 2020 (3)
  • May 2020 (1)
  • October 2019 (3)
  • September 2019 (5)
  • August 2019 (3)
  • June 2019 (3)
  • May 2019 (3)
  • April 2019 (1)
  • March 2019 (2)
  • February 2019 (3)
  • December 2018 (1)
  • November 2018 (3)
  • October 2018 (4)
  • August 2018 (1)

Total Pageviews

Report Abuse

About Me

subhankar dutta
View my complete profile

Sponsor

Pages

  • Home
  • Project
  • জাতীয় শিক্ষানীতি 1986 SAQ
  • EDU FINAL A 2020
  • Class XI ( Class 11 ) Sociology chapter wise MCQ &...
  • Class 12 (H.S.) History Chapter Wise MCQ & SAQ
  • Class 11 (XI) Sociology 1st chapter MCQ & SAQ
  • H.S. Sociology notes .
  • H.S. Sociology 1st chapter MCQ & SAQ ( only reduce...
  • H.S. Education 10th chapter SAQ & MCQ
  • H.S. Education 10th chapter MCQ & SAQ
  • CLASS 12 SOCIOLOGY 4TH CHAPTER SAQ WITH ANSWER

Pages

  • About Me
  • Contact
  • Privacy Policy
  • Disclaimer

Created with by ThemeXpose | Distributed by Blogger Templates