Dramatisation - Varatbarsa
নাট্যরূপ - ভারতবর্ষ
HS Bengali project Dramatisation of Varatbarsa / Bharatbarsa
নাট্যরূপ - ভারতবর্ষ
মূল গল্প - ভারতবর্ষ - সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
চরিত্রবর্গ :-
বুড়ি - থুত্থুরে কুঁজো এক ভিখিরি বুড়ি। রাক্ষুসী চেহারা। একমাথা সাদা চুল। ছেঁড়া নোংরা একটা কাপড় পরনে , গায়ে জড়ানো একটা শতছিন্ন নোংরা কম্বল। হাতে একটা বেঁটে লাঠি।
চা ওয়ালা জগা - গ্রাম্য একজন সাধারণ চা বিক্রেতা ; সাধারণ পোশাক।
জনৈক ব্যাক্তিবর্গ - ৬/৭ জন।
জনৈক মুসলিম ব্যাক্তিবর্গ - ৬/৭ জন।
চৌকিদার - নীল উর্দি পরিহিত ; হাতে লাঠি।
মোল্লাসাহেব - মুসলিম ধর্মীয় পোশাক পরিহিত।
ভট্টাচার্যমশাই - হিন্দু ধর্মীয় পোশাক পরিহিত।
নকড়ি নাপিত
ফজলু শেখ
নিবারণ বাগদি
করিম ফরাজি
দৃশ্য ১
মঞ্চ পরিকল্পনা - মঞ্চকে একটি বাজারের রূপ দিতে হবে। এবং তার একদিকে থাকবে একটি ছোট চায়ের দোকান ও একপাশে থাকবে একটি বড় বটগাছ।নেপথ্যে বৃষ্টির ও বাজ পড়ার শব্দ ইত্যাদি আবহ তৈরী করা যেতে পারে। দৃশ্যটি ফুটিয়ে তুলতে হবে একটি বৃষ্টির দিনের প্রেক্ষাপটে। এর জন্য বিভিন্ন বড় পোস্টার বা ছবির ব্যবহার করা যেতে পারে। চায়ের দোকানে একটি ছোট টেবিল থাকবে এবং তাতে কিছু চায়ের গ্লাস , কেটলি - ইত্যাদি চায়ের সরঞ্জাম থাকবে। সেই দোকানে কিছু সাধারণ চেয়ার বা বেঞ্চ থাকবে। প্রথম দৃশ্যের শুরুতেই চা ওয়ালা চা তৈরিতে ব্যাস্ত থাকবে এবং দোকানে ৫-৬ জন মানুষ গল্প , তর্কাতর্কি ইত্যাদিতে ব্যাস্ত থাকবে।সকলের গায়েই শীতের পোশাক।
জনৈক ব্যাক্তি ১ - ( চা পান করতে করতে ) রাঢ়বাংলার শীত এমনিতেই খুব জাঁকালো ; বৃষ্টিতে তা হলো ধারালো। আর তার সঙ্গে সঙ্গে বাতাস জোরালো হয়ে শুরু হলো - ফাঁপি। খুব সমস্যায় পড়লাম দেখছি।
জনৈক ব্যাক্তি ২ - এই অকাল দুর্যোগে ধানের ক্ষতি হবে প্রচন্ড।
জনৈক ব্যাক্তি ৩ - আমরা আর কি করতে পারি বল ; আমরা সকলেই চাষা - ভুষো মানুষ ; আমরা তো সবাই ভগবানের কাছ থেকে আসা করছি রোদ ঝলমলে একটা সুন্দর দিনের।
জনৈক ব্যাক্তি ৪ - রাখো তোমার সুন্দর দিন ; শোনোনি ডাকপুরুষের পুরোনো বচন - শনিতে সাত , মঙ্গলে পাঁচ , বুধে তিন , বাকি সব দিন দিন। এ ফাঁপি লেগেছে মঙ্গলবার , পাঁচ দিনের আগে ছাড়বে না।
জনৈক ব্যাক্তি ৫ - মাথার ওপর আর কেউ নেই রে কেউ নেই।
জনৈক ব্যাক্তি ২ - আল্লা , ভগবান কেউ নেই।
জনৈক ব্যাক্তি ১ - ও ভাই জগা , আর এক পেয়ালা চা দাও দেখি। হিসেবে খাতায় লিখে রাখো। ফসল ঘরে তোলা হলে সব শোধ দিয়ে দেব।
চা ওয়ালা - ( এক পেয়ালা চা তাকে দিয়ে ) - সে ভরসাতেই তো আছি।
[ এইসব কথাবার্তা যখন চলছে তখন দোকানের অপর পাশের প্রবেশ পথ দিয়ে প্রবেশ করলো বুড়ি। তার সারা গা বৃষ্টিতে ভেজা। সে ধীর পায়ে হাতের ছোট লাঠিটির ওপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে আসছে। দোকানে বসা ব্যাক্তিরা গল্প - তর্ক থামিয়ে সকলেই সেই বুড়ির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বুড়ি ধীরে ধীরে চায়ের দোকানে আসলো ; এক পেয়ালা চা চাইলো ; চা ওয়ালা তাকে এক পেয়ালা চা দিলো ; বুড়ি চা হাতে নিয়ে পরম তৃপ্তিতে তা পান করতে লাগলো।সকলেই অবাক দৃষ্টিতে বুড়ির চা পান করা দেখতে লাগলো। বুড়ি দু একবার চায়ের পাত্রে চুমুক দেওয়ার পর সকলের দিকে তাকালো। ]
জনৈক ব্যাক্তি ১ - ও বুড়ি এই দুর্যোগের দিনে তুমি কিভাবে বেঁচে-বর্তে চায়ের দোকানে আসতে পারলে সেটাই আমাদের সকলকে অবাক করছে। ও বুড়ি , তুমি এলে কোত্থেকে ?
বুড়ি ( ঝাঁঝিয়ে উঠে ) - সে কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা ?
জনৈক ব্যাক্তি ২,৩ ও ৪ একসঙ্গে - ওরে বাবা !
জনৈক ব্যাক্তি ৫ - ভারি তেজ দেখছি ! এই বাদলায় তেজি টাট্টু ঘোড়ার মত বেরিয়ে পড়েছো।
বুড়ি ( খেপে উঠে ) - তোমাদের কত্তাবাবা টাট্টু ! খবর্দার , অকথা কুকথা বোলো না। আমি যেখান থেকেই আসি , লোকের কি ?
জনৈক ব্যাক্তি ১ ( ঠান্ডা গলায় ) - ও বুড়ি , তুমি থাকো কোথায় , তাই জিজ্ঞেস করছে এরা।
বুড়ি - তোমাদের মাথায়।
[ এরপর বুড়ি তার কম্বলের ভেতর থেকে একটা ন্যাকরায় বাঁধা পয়সা খুলতে লাগলো। তারপর চায়ের দোকানে পয়সা দিয়ে পিছন ফিরে আবার হাঁটা শুরু করলো। ]
জনৈক ব্যাক্তি ২ - মরবে রে , নির্ঘাত মরবে বুড়িটা !
বুড়ি ( তাদের দিকে ফিরে অত্যন্ত রাগত স্বরে ) - তোরা মর , তোদের শতগুষ্টি মরুক।
[ এরপর বুড়ি হাঁটতে হাঁটতে উল্টোদিকের বটতলায় গেল। তারপর গাছের গুড়ির কাছে একটা মোটা শেকড়ে বসে পড়লো। শেকড়টার পেছনে গুঁড়ির গায়ে খোঁদল আছে। সেখানে পিঠ ঠেকিয়ে পা ছড়িয়ে বসে পড়লো সে। ]
জনৈক ব্যাক্তি ৩ - বরং বারোয়াড়িতলায় গেলেই পারতো !
জনৈক ব্যাক্তি ৪ - নির্ঘাত মরে যাবে বুড়িটা !
জনৈক ব্যাক্তি ৫- বাদ দাও আমরা আর কী করতে পারি ! তার চেয়ে বরং আর এক পেয়ালা করে চা খাওয়া যাক।
জনৈক ব্যাক্তি ৪ - সেই ভালো।
[ সকলেই আবার চায়ের দোকানের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। আলো ধীরে ধীরে কমে এলো। ]
Dramatisation - Varatbarsa
HS Bengali project Dramatisation of Varatbarsa / Bharatbarsa
নাট্যরূপ - ভারতবর্ষ
দৃশ্য ২
মঞ্চ পরিকল্পনা - প্রথম দৃশ্যের অনুকরণে। তবে এবার মঞ্চে উজ্জ্বল আলো থাকবে। নেপথ্যে পাখির ডাক ইত্যাদি আবহ তৈরী করা যেতে পারে। মঞ্চটি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে যেন মনে হয় একটি উজ্জ্বল সূর্যালোক যুক্ত দিন। বুড়ি একই ভাবে পা ছড়িয়ে বসে আছে। নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ নেই। একজন দুজন করে লোক সামনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে আর বুড়ির দিকে তাকাচ্ছে। তারপর চা ওয়ালা এলো এবং দোকান খুলতে শুরু করলো ; আর বারবার বুড়ির দিকে দেখতে লাগলো। এরপর আরো ২/৩ জন তারপর ৪/৫ জন জড়ো হয়ে পড়লো তারপর বটগাছের পাশে একটা জটলা তৈরী হলো। জটলা দেখে চা ওয়ালা সেদিকে এগিয়ে এলো। ভালো করে বুড়িকে দেখার পর -
চা ওয়ালা জগা - নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা।
জনৈক ব্যাক্তি - সর্বনাশ , তাহলে শ্যাল - কুকুরে ছিঁড়ে খাবে যে ! গন্ধে টেকা যাবে !
[ ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে লাগলো। তারপর ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন বুড়ির দিকে এগিয়ে গেল। তার কপাল ছুঁলো। তারপর কবজি ধরে পরীক্ষা করে বললো -]
জনৈক ব্যাক্তি - না ! মরে গেছে , কোনো স্পন্দন নেই। অতএব মড়াই বটে !
অপর ব্যাক্তি - তাহলে তো থানায় খবর দিতে হবে। চলো আগে চৌকিদার দা কে জানাই।
চৌকিদার ( ভিড়ের মধ্যে থেকে এগিয়ে এসে ) আমি এখানেই আছি। শোনো সকলে থানায় খবর দিতে হবে না ; থানায় খবর দিয়ে কি হবে ? ফাঁপিতে এক ভিখিরি পটল তুলেছে , তার আবার থানা - পুলিশ ! পাঁচ কোশ দূরে থানায় খবর দাও , তারপর ওনার আসতে আসতে রাত - দুপুর। ততক্ষনে গন্ধ ছুটবে। কবে মরেছে হিসেবে আছে নাকি ? দেখছো না ফুলে ঢোল হয়েছে কেমন।
জনৈক ব্যাক্তি - তাহলে কী করবো চৌকিদার দা ?
চৌকিদার - লদীতে ফেলে দিয়ে এসো ! ঠিক গতি হয়ে যাবে - যা হবার !
সকলে - সেই ভালো , সেই ভালো। .........
Dramatisation - Varatbarsa
HS Bengali project Dramatisation of Varatbarsa / Bharatbarsa
নাট্যরূপ - ভারতবর্ষ
দৃশ্য ৩মঞ্চ পরিকল্পনা - প্রথম দৃশ্যের অনুকরণে। তবে এবার গাছতলার বুড়িটি আর নেই। মঞ্চে কিছু লোক উপস্থিত। ২ নং দৃশ্যে যেরকম উজ্জ্বল আলো ছিল - তার উজ্জ্বলতা কিছুটা কম। বিকালের পরিবেশ। মঞ্চের সকলেই মাঝে মধ্যে কপালে হাত রেখে আকাশের দিকে কিছু একটা দেখার চেষ্টা করছে।
জনৈক ব্যাক্তি ১ - ভালোই হলো বলো ; বিজ্ঞ চৌকিদার দার পরামর্শ মানা হলো ; পুলিশে খবর দিলে অনেক ঝামেলায় পড়তে হতো। কিন্তু ( আবার কপালে হাত রেখে ) কিন্তু শকুন গুলোকে তো এখনো নামতে দেখছি না !
জনৈক ব্যাক্তি ২ - কেন দাদা শকুন নামবে কেন ?
জনৈক ব্যাক্তি ১ - আরে বুঝলে না , আমরা তো বুড়িকে লদীর ধারে ফেলে দিয়ে এসেছি। সেখানে শকুন নেমে বুড়ির সদগতি করবে না !
[ সকলেই কপালের ওপরের দিকে হাত রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা দেখার চেষ্টা করতে লাগলো। কয়েক মুহূর্ত পর হঠাৎ নেপথ্যে আরবি মন্ত্র পাঠের শব্দ শোনা যেতে লাগলো। মঞ্চের লোকেরা অবাক ও ব্যাস্ত হয়ে উঠলো। আরবি মন্ত্র আরো জোরালো হতে হতে মঞ্চে প্রবেশ করলো একদল মুসলমান ব্যাক্তি। তাদের ৪ জনের কাঁধে একটা মাচা এবং তাতে সেই বুড়ি শুয়ে আছে। তারপর তারা আরবি মন্ত্র পাঠ করতে করতে মঞ্চের ঠিক মাঝখানে এসে সেই মাচাটা নামিয়ে রাখলো। মাচার একদিকে মুসলিম ব্যাক্তিগণ ও অপর দিকে মঞ্চে আগে থেকে থাকা হিন্দু ব্যাক্তিবর্গ।
হিন্দুদের দিক থেকে জনৈক ব্যাক্তি - কী ব্যাপার , এটা কী হলো , তোমরা বুড়ির মরাটাকে নদী থেকে উঠিয়ে নিয়ে এলে কেন ?
মুসলিমদের দিক থেকে জনৈক ব্যাক্তি - কেন আনবো না ; বুড়ি তো মুসলমান।
হিন্দু জনৈক ব্যাক্তি - প্রমান ?
মুসলিম জনৈক ব্যাক্তি - প্রমান অনেক। অনেকে তাকে শুনেছে বিড়বিড় করে আল্লা বা বিসমিল্লা বলতে।
[ এমন সময় হিন্দুদের ভিড়ের মধ্যে থেকে এগিয়ে এলেন ভট্টাচার্য মশাই ও মুসলিমদের ভিড়ের মধ্যে থেকে এগিয়ে এলেন মোল্লাসাহেব। ]
মোল্লাসাহেব - আজ ফজরে যখন নমাজ সেরে এদিকে বাস ধরতে আসছি , তখনিই বুড়ি মারা যাচ্ছিল। ওকে স্পষ্ট কলমা পড়তে শুনলাম। তা - কে জানে , বুড়ি মরছে ? আমি যাচ্ছি শহরে - মামলার দিন। তাই দেখা হলো না ব্যাপারটা। ফিরে এসে শুনি ওকে নদীতে ফেলে দিয়েছে। তৌবা ! তৌবা ! তা কি হয় আমরা বেঁচে থাকতে ? তাই কবরে দেবার ব্যবস্থা করলাম।
ভট্টাচার্য মশাই ( হঠাৎ করে এগিয়ে এসে ) - অসম্ভব। আমিও তো মোল্লার সাথে একই বাসে আজ শহরে গিয়েছিলুম। আমি স্পষ্ট শুনেছি বুড়ি বলছিলো শ্রীহরি শ্রীহরি শ্রীহরি। ... আর আমি প্রমাণও দিতে পারবো। .... নকরি নাপিত .. ...... নকরি ...... এই নকরি কোথায় তুই , সামনে এগিয়ে আয় হতভাগা।
[ ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন এগিয়ে এলো ]
নকরি নাপিত - আমি দিব্যি করে বলছি - কাল আমি কমাতে বসবো বলে বটতলায় এসেছিলাম। দেখলাম বসা যাবে না। তখন বুড়িকে স্পষ্ট বলতে শুনেছি আপন মনে বলছে - হরিবোল , হরিবোল !
মোল্লাসাহেব - সেরকম প্রমান তো আমাদেরও অনেক আছে। এই ফজলু ...... ফজলু শেখ সামনে আয় ; বল তুই কি শুনেছিস।
[ মুসলিমদের ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন এগিয়ে এলো। ]
ফজলু শেখ - নকরি তুই ভুল শুনেছিস। আমি স্বকর্ণে শুনেছি , বুড়ি লাইলাহা ইল্লাহ বলছে !
[ হিন্দুদের ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন দশাসই চেহারার লোক বেরিয়ে এলো। ]
নিবারণ বাগদি - ( গর্জন করে ) আমি নিবারণ বাগদি , একসময়ের দাগি ডাকাত , আমি বলছি তোমরা ( মুসলিমদের নির্দিষ্ট করে ) যা বলছো সব মিথ্যে।
[ এবার মুসলিমদের মধ্যে থেকেও একজন দশাসই চেহারার লোক বেরিয়ে এলো ]
করিম ফরাজী - আমি করিম ফরাজি ; এখন একজন বান্দা মানুষ , কিন্তু একসময়ের পেশাদার লাঠিয়াল। তোমাদের ( হিন্দুদের নির্দিষ্ট করে ) চ্যাঁচানি আমি বরদাস্ত করবো না ; খবরদার !
[ এরপর অতি শীঘ্র দুই দলের মধ্যে তর্কাতর্কি খুব বেড়ে গেল। নীল উর্দি পরা চৌকিদার হাতে একটি লাঠি নিয়ে উভয় পক্ষকে সামাল দিতে লাগলো। ইতিমধ্যে দুই দল অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করে ফেললো। একদল অপর দলকে অস্ত্র দেখিয়ে ভীতি প্রদর্শন করতে লাগলো। দুই দল রণমূর্তি ধারণ করে একে অপরের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। মাঝখানে বুড়ির মাচা। চৌকিদার লাঠি ঠুকে ঠুকে আপ্রাণ চেষ্টা করছে সংঘর্ষ থামানোর।
হঠাৎ বুড়ির মরাটা নড়তে শুরু করলো। নড়তে নড়তে উঠে বসবার চেষ্টা করছে। সবাই আস্ফালন থামিয়ে অবাক হয়ে বুড়ির দিকে দেখছে। তারপর বুড়ি উঠলো। উঠে দু দিকে তাকালো। বুড়ির মুখটা বিকৃত হয়ে উঠলো। তারপর সেই বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হাসতে লাগলো। ]
চৌকিদার ( অবাক হয়ে ) - বুড়িমা তুমি মরনি !
বুড়ি ( প্রচন্ড রেগে ) - মর , তুই মর। তোর শতগুষ্টি মরুক !
[ দুদিকের ভিড়ও চ্যাঁচিয়ে বলে উঠলো ]
ভিড় - বুড়ি তুমি মরনি !
বুড়ি - ( রাগত স্বরে ) - তোরা মর। তোরা মর মুখপোড়ারা !
চৌকিদার - বুড়ি , তুমি হিন্দু না মুসলমান ?
বুড়ি ( অত্যন্ত রেগে ) - চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা ? দেখতে পাচ্ছিস নে ? ওরে নরকখেকোরা , ওরে শকুনচোখারা। আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে ? চোখ গেলে দেব - যা , যা , পালাঃ।
[ এই বলে বুড়ি ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালো এবং নড়বড় করে রাস্তা ধরে চলতে লাগলো। ভিড় সরে তাকে পথ করে দিল। সবাই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। ]
চৌকিদার ( সামনের দিকে এগিয়ে এসে দর্শকদের মুখোমুখি ) এই আমাদের ভারতবর্ষ। আমরা সকলেই নিজের করতে চাই। অন্য কারো অধিকার স্বীকার করি না। কিন্তু ভুলে যাই ভারতবর্ষ আমাদের মা , আমরা তার সন্তান ; তাই মায়ের প্রতি সকল সন্তানের অধিকার সমান।
[ ধীরে ধীরে আলো কমে এলো ; পর্দা নেমে এলো। ]
XI - XII Online MCQ : CLICK HERE