শিক্ষাবিজ্ঞান প্রকল্প : বাল্যের চাহিদা।
শিক্ষাবিজ্ঞান প্রকল্প : বাল্যের চাহিদা।
শিক্ষাবিজ্ঞান প্রকল্প : বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদার পর্যবেক্ষণ।
Class 11 Education Project.
HS Education Project.
শিক্ষাবিজ্ঞান প্রকল্প : বাল্যের চাহিদা।
শিক্ষাবিজ্ঞান প্রকল্প : বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদার পর্যবেক্ষণ।
ভূমিকা : -
বাল্যের প্রকৃত সময়সীমা বা স্তরভেদ সম্পর্কে মনোবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যায়। তবে সাধারণভাবে মনে করা হয় - বাল্যের সময়সীমা হল ৬ থেকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত। জীবন বিকাশের অন্যতম এই প্রধান স্তরেই শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন রকম চাহিদা দেখা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে - '' চাহিদা '' - নামক অনুভূতির উৎপত্তি অভাববোধ থেকে। সুতরাং বাল্যের প্রতিটি চাহিদার মধ্যেই লুকিয়ে আছে অভাববোধ।
বর্তমান প্রকল্পটিতে বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলি পর্যবেক্ষণ করে তাঁদের চাহিদার গতিপ্রকৃতি অনুধাবন করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদা , সেগুলির প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট , চাহিদাগুলির উৎপত্তির কারণ এবং শিক্ষা কীভাবে এই চাহিদাগুলিকে ইতিবাচকভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে প্রতিবেদনমূলক আলোচনা উপস্থাপন করা হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য :-
যেসকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি রূপায়ণ করা হয়েছে , সেগুলি হল -
১. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলি সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন।
২. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলির গতিপ্রকৃতি অনুধাবন করা।
৩. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলির উৎস বা কারণ অনুসন্ধান করা।
৪. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলিকে শিক্ষা কীভাবে ইতিবাচকভাবে পরিচালনা করতে পারে - সে বিষয়ে আলোচনা করা।
৫. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলি শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করে - সে বিষয়ে আলোকপাত করা।
৬. সর্বোপরি , বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উৎসাহী ও কৌতূহলী করে তোলা।
প্রকল্পের গুরুত্ব :-
যেসকল কারণে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে পারে , সেগুলি হল -
১. প্রকল্পটির মাধ্যমে বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলি সম্পর্কে ধারণা অর্জন সম্ভব।
২. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলির গতিপ্রকৃতি অনুধাবন করতে প্রকল্পটি কার্যকর।
৩. শিক্ষার মাধ্যমে কীভাবে বাল্যের বিভিন্ন চাহিদাগুলিকে ইতিবাচকভাবে পরিচালিত করা যায় - সে সম্পর্কে জানতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ।
৪. বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলির কারণ সম্পর্কে জানতে প্রকল্পটি বিশেষভাবে সহায়ক।
৫. সর্বোপরি , শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে কৌতূহলী করে তুলতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
পদ্ধতিগত দিক / কর্মপরিকল্পনা :-
প্রকল্পটি রূপায়ণ করতে যেসকল পদ্ধতি ও পরিকল্পনা অনুসরণ করা হয়েছে তা পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হল।
দিবস ১ - বিদ্যালয়ের শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ের মাননীয় শিক্ষক মহাশয় / মাননীয়া শিক্ষিকা মহাশয়া প্রকল্পের জন্য '' বাল্যের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদার পর্যবেক্ষণ '' বিষয়টিকে নির্বাচন করলেন।
দিবস ২ - বিষয় সম্পর্কে মাননীয় শিক্ষক মহাশয় / মাননীয়া শিক্ষিকা মহাশয়া - বিস্তারিত আলোচনা করলেন এবং প্রকল্প রচনার বিভিন্ন দিকগুলি সম্পর্কে আলোকপাত করলেন।
দিবস ৩ - বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক ও সহায়ক গ্রন্থ পাঠ করে প্রকল্পের বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হল।
দিবস ৪ - সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রতিবেদন রচনা করা হল।
দিবস ৫ - খসড়া প্রতিবেদনটি মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকা - র নিকট উপস্থাপন করা হলে তিনি প্রতিবেদনটিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনের নির্দেশ প্রদান করলেন।
দিবস ৬ - মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকা - র নির্দেশমত প্রয়োজনীয় সংশোধন করে প্রতিবেদনটিকে পুনরায় লিপিবদ্ধ করা হল।
দিবস ৭ - প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে চিত্র সংযোজন করা হল।
দিবস ৮ - পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া হল।
তথ্য সংগ্রহ / পরীক্ষামূলক উপাদান :-
[ এই অংশে একাদশ শ্রেণীর শিক্ষাবিজ্ঞান পাঠ্যবই বা নোট বইয়ের পঞ্চম অধ্যায় থেকে
১. প্রারম্ভিক বাল্যের চাহিদা
২. প্রান্তীয় বাল্যের চাহিদা
- এই দুটি পয়েন্ট বিস্তারিতভাবে ৩-৫ পৃষ্ঠার মধ্যে লিখতে হবে। ]
প্রকল্পের বর্ণনা : তথ্য বিশ্লেষণ :-
বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদা : পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা।
(i) বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট হল প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষাকে দুইভাগে ভাগ করা যায় - নিম্নপ্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিক। নিম্নপ্রাথমিক স্তরে ৬ থেকে ৯ বছর পর্যন্ত বা প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত এবং উচ্চপ্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা রয়েছে।
(ii) বাল্যের একটি অন্যতম চাহিদা হল শারীরিক বিকাশ। এই চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রমে শরীরচর্চা , ব্যায়াম , খেলাধুলা - ইত্যাদি অঙ্গসঞ্চালনামূলক বিষয়কে পাঠক্রমে স্থান দেওয়া হয়েছে।
(iii) বাল্যের অপর একটি উল্লেখযোগ্য চাহিদা হল - মানসিক বিকাশ। এই চাহিদা পরিতৃপ্ত করতে প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তির বিকাশ , বিচারক্ষমতার দক্ষতা বৃদ্ধি , সৃজনশীলতার বিকাশ - ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
(iv) বাল্যের শিক্ষার্থীদের সামাজিকতার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সমাজকল্যাণমূলক ও সামাজিকীকরণের শিক্ষা দেওয়া হয়।
(v) বাল্যের শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন ধরণের বিদ্যালয়গুলি হল - সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় , বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , বুনিয়াদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান , একক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - ইত্যাদি।
(vi) প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে তাদের উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলে।
(vii) পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন বাল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা। এই চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যে পাঠক্রমে পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা সংযোজিত হয় ; পরিবেশকে শিক্ষার্থীদের সামনে সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়।
(viii) বাল্য স্তরের প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থী নিজেদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে চায়। এই উদ্দেশ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠক্রম ও বিভিন্ন সহপাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও নান্দনিক কাজে উৎসাহ দেওয়া হয়।
(ix) বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলিকে যদি অবদমিত করে দেওয়া হয় তাহলে তা তার বিকাশের ক্ষেত্রে নেতিবাচক ফল প্রদান করে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা বাল্যের চাহিদাগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে সেগুলি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পরিচালনা করে।
(x) বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদাগুলি তাদের পরবর্তী জীবনের সোপান রচনা করে। তাই এই চাহিদাগুলিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য।
উপসংহার / সিদ্ধান্তগ্রহণ :-
বাল্যকাল হল মানুষের জীবনবিকাশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। যেহেতু বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা , সেহেতু প্রাথমিক শিক্ষা বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের চাহিদাগুলিকে যথাযথভাবে অনুধাবন করে এবং শিক্ষার্থীদের সেই চাহিদাগুলিকে পূরণ করতে সহায়তা করে। বাল্য স্তরের বিভিন্ন শিশুদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা লক্ষ্য করা যেতে পারে আবার এই ভিন্নতার মধ্যে দিয়ে একটি সাধারণ সূত্র প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই সাধারণ সূত্র শিক্ষার্থীদের চাহিদা , পঠন - পাঠন , জীবন শৈলী - ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।
প্রকল্পের সীমাবদ্ধতা :-
প্রতিবেদনটি রূপায়নকালে এবং রূপায়িত হওয়ার পর যেসকল ত্রুটি - বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতা দৃষ্টিগোচর হয়েছে - সেগুলি হল -
(ক ) বাল্য স্তরের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মতামত প্রতিবেদনে সংযোজিত করা হয়নি।
(খ ) বাল্য স্তরের বিকাশমূলক বৈশিষ্টগুলি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
(গ ) পূর্বে এই ধরণের প্রতিবেদনমূলক প্রকল্প রূপায়ণের অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রতিবেদনটি অনভিজ্ঞতার দোষে দুষ্ট।
(ঘ ) পাঠ্যপুস্তক ও সহায়ক গ্রন্থগুলিতে বিষয় সম্পর্কে আলোচনা সংক্ষিপ্ত থাকার কারণে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
(ঙ ) প্রতিবেদন রচনার সংক্ষিপ্ত পরিসরে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব হয়নি।
গ্রন্থপঞ্জি :-
প্রতিবেদনটি রচনায় যেসকল গ্রন্থের সহায়তা নেওয়া হয়েছে , সেগুলি হল -
১. শিক্ষাবিজ্ঞান - একাদশ শ্রেণী - ডক্টর দেবাশীষ পাল ও ডক্টর সুশান্ত কুমার সাহু।
২. বি এ শিক্ষাতত্ত্ব - সুশীল রায়।
৩. বি এ শিক্ষাবিজ্ঞান - অধ্যাপক কে ব্যানার্জি।
৪. শিক্ষাবিজ্ঞান - শ্রীনিবাস ভট্টাচার্য্য।
৫. শিশু মনস্তত্ব ও শিক্ষাবিজ্ঞান - ডক্টর দেবাশীষ পাল।
0 comments