চরিত্র পর্যালোচনা : ফেলুদা :- HS BENGALI PROJECT : FELUDA .
HS BENGALI PROJECT : FELUDA .
উচ্চমাধ্যমিক প্রকল্প : চরিত্র পর্যালোচনা : ফেলুদা :-
নির্বাচিত সাহিত্য সৃষ্ট চরিত্রের জীবনী নির্মাণ : ফেলুদা - সত্যজিৎ রায়।
ভূমিকা :-
বাংলা সাহিত্যে সত্যজিৎ রায় কর্তৃক সৃষ্ট ফেলুদা চরিত্রটি একটি অবিস্মরণীয় ও অমর চরিত্র। আদ্যপান্ত বাঙালিয়ানা , প্রখর মগজাস্ত্রের প্রয়োগ , রক্তপাতহীন সত্যান্মেশন , চারিত্রিক দৃঢ়তা , অজানা জ্ঞানের সমাবেশ , সাহিত্যিক উৎকর্ষতা - ইত্যাদি বিভিন্ন বৈশিষ্টের জন্য ফেলুদা চরিত্রটি বাঙালির হৃদয়ে , মননে , সাহিত্যচর্চায় , সাংস্কৃতিক জীবনে গভীরভাবে অঙ্গীভূত হয়েছে। ফেলুদার গল্পগুলি বাঙালির আঙিনা ছাড়িয়ে আজ সর্বভারতীয় স্তরে প্রসারিত হয়েছে। সার্বিক পাঠক মহলে ফেলুদার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বেড়েই চলেছে। সাহিত্য জগতের বাইরেও বিভিন্ন চলচ্চিত্র , সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এবং দূরদর্শনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফেলুদার গল্পগুলির সার্থক প্রয়োগ ঘটেছে।
বর্তমান প্রকল্পটিতে ফেলুদা চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে সত্যজিৎ রায়ের লেখা বিভিন্ন গল্প ও উপন্যাস , ফেলুদার চারিত্রিক বৈশিষ্ট , ফেলুদার গল্পগুলিতে গল্পকার সত্যজিৎ রায়ের রচনাশৈলী , চলচ্চিত্রে ফেলুদার প্রভাব , বর্তমান সময়কালে ফেলুদার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা - ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা উপস্থাপন করা হয়েছে।
যেসকল উদ্দেশ্যগুলিকে সামনে রেখে প্রকল্পটি রচনা করা হয়েছে , সেগুলি হল -
১. ফেলুদা চরিত্রটি কেন্দ্র করে সত্যজিৎ রায়ের লেখা বিভিন্ন গল্প ও উপন্যাসগুলি সম্পর্কে জানা।
২. ফেলুদার গল্পে গল্পকার সত্যজিৎ রায়ের রচনাশৈলী বিচার করা।
৩. ফেলুদার গল্পগুলি বাংলা সাহিত্যের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। প্রকল্পটির মাধ্যমে গল্পগুলির উৎকর্ষতা বিচার করা।
৪. চলচ্চিত্রে , সামাজিক মাধ্যমগুলিতে ফেলুদার গল্পগুলিকে কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে - সে সম্পর্কে আলোচনা করা।
৫. বর্তমান কালে পাঠকবৃন্দের মধ্যে ফেলুদার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা।
৬. শিক্ষর্থীরা গল্পগুলির দ্বারা কতটা প্রভাবিত - সে সম্পর্কে আলোচনা করা।
৭. পাঠকবর্গ ও শিক্ষার্থীদের উপর গল্পগুলির মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পর্যালোচনা করা।
৮. বৃহত্তর আঙিনায় ফেলুদার গল্পগুলির প্রাসঙ্গিকতা বিচার করা।
৯. সর্বোপরি , সত্যজিৎ রায়ের লেখনী ও ফেলুদার গল্পগুলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী করে তোলা।
প্রকল্পের গুরুত্ব :-
যেসকল কারণে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে পারে , সেগুলি হল -
১. প্রকল্পটির মাধ্যমে ফেলুদাকে নিয়ে লেখা সত্যজিৎ রায়ের বিভিন্ন সাহিত্যকীর্তিগুলি সম্পর্কে জানা সম্ভব।
২. প্রকল্পটির মাধ্যমে গল্পগুলির রচনাশৈলী সম্পর্কে জানা যায়।
৩. ফেলুদার গল্পগুলি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে সেই সকল গল্প ও চলচ্চিত্রগুলি সম্পর্কে জানা যায়।
৪. বর্তমান সময়কালে ফেলুদা চরিত্রটি পাঠকমহলে কতটা জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য - সে সম্পর্কে জানতেও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ।
৫. ফেলুদা চরিত্রটি বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য নিদর্শন। ফেলুদার সেইসকল চারিত্রিক বৈশিষ্ট সম্পর্কে জানতেও প্রকল্পটি কার্যকরী।
৬. বাঙালির জীবন , সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ফেলুদা চরিত্রটি কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে - তার আলোচনা প্রকল্পটিতে বর্তমান।
৭. সর্বোপরি , সত্যজিৎ রায়ের সাহিত্যকীর্তি ও ফেলুদা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী করে তুলতে প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ফেলুদা : বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য ও ব্যতিক্রমী চরিত্র।
প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প '' ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি '' - র প্রথমভাগ প্রকাশিত হয়, যা পরের আরো দুইটি সংখ্যার মাধ্যমে শেষ হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ফেলুদার প্রধান সহকারী তার খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি (ছদ্মনাম জটায়ু)। ফেলুদার চরিত্র নির্মাণে সত্যজিৎ রায় তার ছোটবেলায় পড়া শার্লক হোমস এর গোয়েন্দা গল্পের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাই ফেলুদার চরিত্রের সাথে অনেক জায়গায় আমরা হোমসের আর ফেলুদার ভাই ও সহকারী তোপসের সাথে হোমসের সহকারী ওয়াটসনের মিল পাই। নিজের লেখা অধিকাংশ গল্পের বইয়ের মতই ফেলুদার বইতেও সত্যজিৎ রায় নিজেই প্রচ্ছদ ও অলংকরণ করতেন। সত্যজিৎ রায় ফেলুদার সোনার কেল্লা ও জয় বাবা ফেলুনাথ উপন্যাসদুটিকে চলচ্চিত্রায়িত করেন।
ফেলুদার ব্যক্তিত্ব ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট :-
ফেলুদার গল্পে তার চরিত্রকে আঁকা হয়েছে প্রায় ২৭ বছর বয়সী একজন যুবক হিসেবে, যার উচ্চতা ৬'২''। ফেলুদা মার্শাল আর্টে বিশেষ দক্ষ। যদিও অসম্ভব ভালো বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষনের ক্ষমতার ওপরেই যে কোনও রহস্যের সমাধানে সে আস্থা রাখতে ভালোবাসে। তার এই বিশেষ ক্ষমতাকে সে মজা করে বলে থাকে মগজাস্ত্র। যদিও বাড়তি সতর্কতার জন্য তার নিজস্ব পয়েন্ট থ্রি টু কোল্ট রিভলভার রয়েছে। রিভলভার থেকে গুলি চালাতে ফেলুদাকে খুব কম গল্পেই দেখা যায় । যদিও সাম্প্রতিককালে কয়েকটি চলচ্চিত্রে ফেলুদাকে গুলি চালাতে দেখা গেছে।
ফেলুদা সম্পর্কে কিছু ব্যক্তিগত তথ্য :-
মাত্র নয় বছর বয়সে মা বাবা মারা যাওয়ায় ফেলুদা তার বাবার ছোটো ভাইয়ের কাছেই মানুষ হয়েছেন। ফেলুদার বাবা জয়কৃষ্ণ মিত্র ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে গণিত ও সংস্কৃতের শিক্ষক ছিলেন। ফেলুদা পেশায় গোয়েন্দা হলেও, এটা নেশাও বটে। গোয়েন্দা হিসেবে সত্যান্মেশন শুরুর আগে ফেলুদাও একটি বেসরকারি অফিসে কিছুদিন চাকরি করেছেন। তোপসে তার সহকারী হলেও সম্পর্কে তার কাকাতো ভাই । তার নেশা বলতে সিগারেট। সিগারেটের প্রিয় ব্র্যান্ড চারমিনার। ফেলুদা প্রতিদিন সকালে নিয়মিত শরীরচর্চা ও যোগব্যায়ামে অভ্যস্ত। প্রচুর বই পড়া ও সাম্প্রতিক তথ্য সম্পর্কে অত্যন্ত সজাগ থাকা গোয়েন্দা হিসেবে পেশাগত দিক দিয়েও তাকে অনেক এগিয়ে রাখে।
বিভিন্ন গল্প ও উপন্যাস :-
ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি , বাদশাহী আংটি , কৈলাস চৌধুরীর পাথর , শেয়াল দেবতা রহস্য , গ্যাংটকে গন্ডগোল , সোনার কেল্লা , বাক্স রহস্য , কৈলাসে কেলেঙ্কারি , সমাদ্দারের চাবি , রয়েল বেঙ্গল রহস্য , ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা , জয় বাবা ফেলুনাথ , বোম্বাইয়ের বোম্বেটে , গোঁসাইপুর সরগরম , গোরস্থানে সাবধান , ছিন্নমস্তার অভিশাপ , হত্যাপুরী , গোলোকধাম রহস্য , যত কান্ড কাঠমান্ডুতে , নেপোলিয়নের চিঠি , টিনটারেটোর যীশু , অম্বর সেন অন্তর্ধান রহস্য , জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা , এবার কান্ড কেদারনাথে , বোসপুকুরে খুনখারাপি , দার্জিলিং জমজমাট , অপ্সরা থিয়েটার মামলা , ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর , শকুন্তলার কণ্ঠহার , গোলাপি মুক্তা রহস্য - ইত্যাদি।
চলচ্চিত্র ও দূরদর্শনের পর্দায় ফেলুদা :-
এখন পর্যন্ত ফেলুদার এগারোটি কাহিনী চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় সোনার কেল্লা এবং জয় বাবা ফেলুনাথ এবং সত্যজিতের পুত্র সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় বাক্স রহস্য (১৯৯৬), বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (২০০৩), কৈলাসে কেলেঙ্কারী (২০০৭), টিনটোরেটোর যীশু (২০০৮), গোরস্থানে সাবধান (২০১০), রয়েল বেঙ্গল রহস্য (২০১১), বাদশাহী আংটি(২০১৪), ডবল ফেলুদা (২০১৬) । ডবল ফেলুদা চলচ্চিত্রটি ‘সমাদ্দারের চাবি’ আর ‘গোলকধাম রহস্য’ - এই দুইটি উপন্যাস নিয়ে একসাথে করা হয়েছে। পরবর্তীতে সৃজিত মুখোপাধ্যায় ফেলুদার উপর এক ওয়েবসিরিজের নির্মাণ করছেন। ছিন্নমস্তার অভিশাপ এবং যত কাণ্ড কাঠমান্ডুতে কাহিনির উপর ফেলুদা ফেরত নামের এই ওয়েবসিরিজ নির্মাণ করবেন।
উপরোক্ত তথ্যগুলিকে নীচে বিশ্লেষণ আকারে উপস্থাপন করা হল।
প্রথমতঃ সত্যজিৎ রায়ের একটি কিংবদন্তী গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা। চরিত্রটি সকল শ্র্রেণির , সকল বর্গের পাঠকদের মধ্যে সর্বকালে জনপ্রিয়। প্রথম গল্প প্রকাশের পর থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত তাঁর জনপ্রিয়তা অটুট ও ক্রমবর্ধমান।
দ্বিতীয়তঃ ফেলুদা চরিত্রটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালিয়ানার পরিচায়ক। চলনে - বলনে , খাদ্যাভ্যাস , অনুসন্ধিৎসা - ইত্যাদি সমস্ত বৈশিষ্ট একজন আদ্যপান্ত বাঙালির পরিচয় প্রদান করে।
তৃতীয়তঃ সত্যজিৎ রায় ফেলুদা চরিত্রটি নির্মাণের সময় স্যার আর্থার কোনান ডয়েল দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন - এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সত্যজিৎ রায় ফেলুদা চরিত্রকে নির্মাণ করেছেন সম্পূর্ণ বাঙালি হিসেবে। এমনকি স্যার আর্থার কোনান ডয়েল কর্তৃক সৃষ্ট চরিত্র শার্লক হোমসের সহকারী হিসেবে ওয়াটসন - এর অনুরূপে ফেলুদার সহকারী হিসেবে তোপসে চরিত্রটিকে স্থান দিয়েছেন।
চতুর্থতঃ ফেলুদাকে নিয়ে লেখা গল্পগুলি উন্নত সংস্কৃতি ও রুচিবোধের পরিচায়ক। কোনো গল্পেই অশ্লীলতা , চটুলটা , প্রাপ্ত - বয়স্ক সংক্রান্ত বিষয় - ইত্যাদি কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। তাই যেকোনো বয়সের পাঠকদের জন্য গল্পগুলি উপযুক্ত।
পঞ্চমতঃ ফেলুদাকে নিয়ে শুধুমাত্র যে বাংলা ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে - এমনটা নয়। হিন্দি ভাষাতেও ফেলুদার গল্পের উপর চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।
ষষ্ঠতঃ ফেলুদার চরিত্রের একটি বিশেষ দিক হল - বর্তমান ঘটনা , আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ , বিজ্ঞান সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসা - ইত্যাদি সম্পর্কে ফেলুদার অগাধ কৌতূহল ছিল। ফেলুদার চরিত্রের এই বিশেষ দিকটি সমসাময়িক ঘটনা ও বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে পাঠকবর্গকে অনুপ্রাণিত করে।
সপ্তমতঃ চলচ্চিত্র ছাড়াও বর্তমান সামাজিক মাধমের যুগে সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদাকে নিয়ে লেখা গল্পগুলি অডিও রূপান্তর করা হচ্ছে এবং এই প্রয়াস সাহিত্যিক ও বাণিজ্যিক দিক দিয়ে অত্যন্ত সফল হয়েছে।
অষ্টমতঃ ফেলুদার গল্পগুলি বেশিরভাগ রক্তপাত , হিংসা বর্জিত হয়েও রহস্য রোমাঞ্চে ও টানটান উত্তেজনায় ভরপুর। অন্যদিকে বর্তমান প্রজন্মের চলচ্চিত্র ও অন্যান্য সৃজনশীল রচনায় হিংসার বিপুল সমাবেশ ঘটতে দেখা যায়। তাই ফেলুদার গল্পগুলি এই প্রসঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
নবমতঃ ফেলুদার গল্পগুলির মধ্যে এক বিশেষ ধরণের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। শিক্ষা , সংস্কৃতি , রহস্য সমাধানে মগজাস্ত্রের প্রয়োগ , আদর্শ জীবনযাত্রা , মার্জিত চলন - ইত্যাদি বিষয়গুলি পাঠকবর্গের মধ্যে এক মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া তৈরী করে এবং পাঠকবর্গকে রুচিসম্পন্ন ও আদর্শযুক্ত জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত করে।
দশমতঃ সত্যজিৎ রায় ফেলুদার গল্পগুলিকে কখনোই একই ধরণের গল্পের মড়কে প্রকাশ করেননি। গল্পগুলিতে শুধুমাত্র যে রহস্যের উপস্থাপনা রয়েছে - তা নয়। প্রতিটি গল্পের ভিন্নতা , ভ্রমণ , ভিন্ন ভিন্ন স্থান - কালের পরিপ্রেক্ষিত , বৈচিত্রময় ঘটনাপ্রবাহ - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় ফেলুদার গল্পগুলিতে এক অতিরিক্ত মাত্রা যোগ করে।
উপসংহার :-
বাংলা সাহিত্যে যেসকল গোয়েন্দা চরিত্র বর্তমান - তাদের মধ্যে জনপ্রিয়তার নিরিখে ফেলুদার স্থান যে সর্বোচ্চে - তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে ফেলুদা চরিত্রটি নিয়ে সত্যজিৎ রায়ের গল্পগুলি বিশেষকরে তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে , গল্পগুলি শুধুমাত্র গোয়েন্দা গল্পের শ্রেণি - বিভাজনে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে সাহিত্যের বৃহৎ আঙিনায় সমানভাবে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
প্রকল্পটির সীমাবদ্ধতা :-
প্রকল্পটি রূপায়নকালে এবং রূপায়ণের পর যেসকল ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতাগুলি দৃষ্টিগোচর হয়েছে , সেগুলি হল -
১. প্রকল্পটিতে ফেলুদা সম্পর্কিত গল্প ও উপন্যাসগুলোর কোনো সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নেই।
২. ফেলুদার গল্পগুলির ওপর ভিত্তি করে বহু চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে এবং সেই সকল চলচ্চিত্রগুলিতে করেছেন কিছু মহান অভিনেতাগণ। প্রকল্পটিতে সে বিষয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি।
৩. ফেলুদার প্রতিটি গল্পে যে বৈচিত্রতা লক্ষ্য করা যায় - প্রকল্পটিতে সে সম্পর্কে কোনো আলোচনা নেই।
৪. সত্যজিৎ রায়ের অন্যান্য সাহিত্যকীর্তিগুলির উল্লেখ করা হয়নি।
৫. সর্বোপরি , প্রকল্প রচনার সংক্ষিপ্ত পরিসরে ফেলুদা চরিত্রটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব হয়নি।
গ্রন্থপঞ্জি :-
যেসকল গ্রন্থগুলি থেকে প্রকল্প রচনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে , সেগুলি হল -
১. বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি : একাদশ শ্রেণি - পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
২. বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস : দ্বাদশ শ্রেণি - পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
৩. ফেলুদা রচনা সমগ্র - আনন্দ পাবলিশার্স।
0 comments