উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : ক্ষেত্র সমীক্ষা।

by - September 04, 2022

উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : ক্ষেত্র সমীক্ষা। 



উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রকল্প : ক্ষেত্র সমীক্ষা। 


ভূমিকা :- 
পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের বাংলা বিষয়ের প্রকল্পকর্মগুলির মধ্যে একটি হল ক্ষেত্র সমীক্ষা। ক্ষেত্র সমীক্ষার মাধ্যমে একটি বিশেষ ও নির্দিষ্ট অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিচয় , মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রা , প্রচলিত সংস্কৃতি , শিক্ষার পরিবেশ , স্বাস্থ্য , রুজি - রোজগার , ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা , রাজনীতি , বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান , কৃষিজ ও শিল্পজাত উৎপাদন - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে সম্যক ধারণালাভ করা যায়। 

বর্তমান প্রকল্পটিতে মালদা জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের অন্তর্গত যদুপুর - ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেশপুর গ্রামের ক্ষেত্র সমীক্ষা প্রস্তুত করা হয়েছে। 

যেসকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ক্ষেত্র - সমীক্ষা প্রকল্পকর্মটি রূপায়িত হয়েছে , সেগুলি হল - 
১. গ্রামটির ভৌগোলিক পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা অর্জন। 
২. গ্রামটির মানুষের জীবনযাত্রা , রুজি - রোজগার , সাংস্কৃতিক পরিবেশ , ধর্মবিশ্বাস , রাজনীতি , সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করা। 
৩. গ্রামটির সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ , বিদ্যালয়ের সংখ্যা - ইত্যাদি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে গ্রামটির মানুষের শিক্ষা সচেতনতা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা। 
৪. গ্রামটির মানুষদের জীবনযাত্রার বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিকের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। 
৫. গ্রামটির সার্বিক উন্নয়নের হার তুলে ধরা। 
৬. গ্রামটির বিভিন্ন সমস্যাগুলি তুলে ধরা। 
৭. গ্রামটির ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কুসংস্কারাচ্ছন্নতার পরিমাপ করা। 

প্রকল্পটির গুরুত্ব :- 
যেসকল কারণে সমীক্ষাপত্রটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে পারে , সেগুলি হল - 
১. সমীক্ষাপত্রটির মাধ্যমে গ্রামটির ভৌগোলিক পরিবেশ , সামাজিক পরিবেশ - শিক্ষা , স্বাস্থ্য , জীবিকা , ধর্মবিশ্বাস , উৎপাদন পদ্ধতি ও উৎপাদিত ফসল - ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা সম্ভব। 
২. সমীক্ষাপত্রটির মাধ্যমে গ্রামটির জীবনধারণের বিভিন্ন সুযোগ - সুবিধা কতটা বর্তমান এবং গ্রামটিতে প্রচলিত সমস্যা সম্পর্কে জানা সম্ভব। 
৩. এই সমীক্ষাপত্রটির মাধ্যমে শুধুমাত্র একটি গ্রাম সম্পর্কেই জানা যাবে - এমনটা নয় ; একটি গ্রাম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো ও পরিবেশকে জানতে সমীক্ষাপত্রটি বিশেষভাবে কার্যকরী হতে পারে। 

কর্মপরিকল্পনা / পদ্ধতিগত দিক :- 

সমীক্ষাপত্রটি নির্মাণ করতে যেসকল পদ্ধতি ও পরিকল্পনার নীতি অনুসৃত হয়েছে - সেগুলি হল - 

>> বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের মাননীয় শিক্ষক X মহাশয় / মাননীয়া শিক্ষিকা X মহাশয়া কর্তৃক বাংলা বিষয়ে প্রকল্পের জন্য বিষয়বস্তু নির্বাচন। 

>> বিষয়বস্তু নির্বাচনের পর মাননীয় শিক্ষক মহাশয় / মাননীয়া শিক্ষিকা মহাশয়া সমীক্ষাপত্রটি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিকের উপর আলোকপাত করেন। 

>> মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নির্দেশমত সমীক্ষাপত্রটি সাফল্যের সঙ্গে রূপায়িত করতে এবং গ্রামটিকে বিশেষভাবে জানার জন্য কিছু প্রশ্ন ও জানার বিষয়গুলি নির্দিষ্টকরণ করা হল। 

>> নির্দিষ্ট গ্রামটিতে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হল। 

>> সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রতিবেদন রচনা করে সেটি মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নিকট উপস্থাপন করা হয় এবং তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধনের নির্দেশ প্রদান করেন। 

>> মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নির্দেশমত প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর পুনরায় প্রকল্পটি প্রস্তুত করা হয়। 

>> প্রয়োজনীয় চিত্র সংগ্রহ করে সেগুলি প্রতিবেদনে সংযোজিত করা হয়। 

>> পূর্ণাঙ্গ প্রকল্পটি বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।  


তথ্য সংগ্রহ / পরীক্ষামূলক উপাদান :- 

সমীক্ষাপত্র :- 

গ্রাম পরিচিতি :- 

গ্রামের নাম : মহেশপুর। 

ব্লক : ইংরেজবাজার। 

জেলা : মালদা। 

মোট জনসংখ্যা : ৫০০০ 

নারী - পুরুষের অনুপাত : ৯৪০ : ১০০০ 

শিক্ষা :- 

শিক্ষার হার : ৭৮ % 

পুরুষদের শিক্ষার হার : ৮২%  

নারীশিক্ষার হার : ৭৪% 

গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ১ টি। 

গ্রামে বেসরকারি প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ১ টি। 

গ্রামে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ০ 

গ্রামে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা : ০ 

গ্রামে মহাবিদ্যালয়ের সংখ্যা : ০ 

গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা : ২ টি। 

বিদ্যালয়ের পরিবেশ :- 

বিদ্যালয়ে ছায়া প্রদানকারী গাছপালা আছে কি'না : আছে। 

বিদ্যালয়ে শৌচালয় আছে কি'না : আছে। 

বিদ্যালয়ে সকল ঋতুতে ব্যাবহারযোগ্য শ্রেণিকক্ষ আছে কি'না : আছে। 

বিদ্যালয়ের আশেপাশে যানবাহন চলাচলের মাত্রা : মাঝারি। 

বিদ্যালয়ের চারপাশের রাস্তা : আংশিক পাকা। 

বিদ্যালয়ের নিজস্ব খেলার মাঠ : আছে। 

বিদ্যালয়ের কাছাকাছি কোনো চিকিৎসাকেন্দ্র : নেই। 

বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় কি'না : হয়। 

বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ : নেই। 

বিদ্যালয়ে ইকো ক্লাব : আছে। 

বিদ্যালয়ের আশেপাশে অন্য কোনো বিদ্যালয় : নেই। 

বিদ্যালয়ে সাহিত্যসভার আয়োজন : হয়না। 

বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান প্রদর্শনী : হয়না। 

স্বাস্থ্য :- 

প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা : ১ টি। 

পোলিও ও অন্যান্য টীকাকরণ কর্মসূচি নিয়মিত পালিত হয় কি'না : হয়। 

পঞ্চায়েতের তরফে বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে সচেতনতা শিবির পরিচালিত হয় কি'না : হয়। 

পঞ্চায়েতের তরফে স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি পালিত হয় কি'না : হয়। 

পানীয় জল :- 

পানীয় জলের উৎস : কূপ , নলকূপ ও পঞ্চায়েত কর্তৃক টাইম কলের জল। 

কূপের সংখ্যা : ৫ টি। 

নলকূপের সংখ্যা : প্রায় ৫০ টি। 

প্রাকৃতিক সম্পদ :- 

গ্রামটির সঙ্গে নদীর যোগাযোগ আছে কি'না : হ্যাঁ , আছে ; মহানন্দা। 

পুকুরের সংখ্যা : ৩ টি। 

জলাভূমি : নেই। 

সর্বসাধারণের জন্য পশুচারণের জমি : আছে। 

বনভূমি : আছে , মোট এলাকার প্রায় ৩৫ শতাংশ। 

কৃষিজমি : মোট এলাকার প্রায় ৫০ শতাংশ। 

খেলার মাঠ : আছে , ২ টি।  

মানব সম্পদ :- 

হিন্দু : ৮০% 

মুসলিম : ১৭% 

অন্যান্য : ৩% 

কৃষিজীবী : প্রায় ৭৫% 

শ্রমিক ও মজুর : ১০% 

সরকারি চাকুরে : ৪% 

বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত : ৪% 

ছোট ব্যবসায়ী , দোকানদার : ৪% 

নিজস্ব উদ্যোগ : ৩% 

কাঁচাবাড়ি : ৫০% 

আংশিক কাঁচাবাড়ি : ২০% 

সম্পূর্ণ পাকাবাড়ি : ৩০% 

শৌচালয় : ৮০% বাড়িতে শৌচালয় আছে। এছাড়া পঞ্চায়েতের দ্বারা নির্মিত সর্বসাধারণের জন্য শৌচালয়ের সংখ্যা ২ টি। 

পঞ্চায়েত পরিসেবা :- 

নিকাশি ব্যবস্থা : মোটামুটি। 

জলসেচ : উন্নত। 

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা : নিম্নমানের। 

বিদ্যুৎ সংযোগ : ১০০% গৃহে বিদ্যুতের সংযোগ আছে। 

রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা : নেই। 

বেকারদের প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা : আছে।  

উৎসব - অনুষ্ঠান ও সংস্কৃতি ও খেলাধুলা :- 

প্রধান উৎসব : দুর্গাপূজা ও ইদ। 

মেলার সংখ্যা : ২ টি। বছরে ২ বার। 

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : স্বাধীনতা দিবস পালন , রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন , হস্তশিল্প মেলা , বিজয়া দশমীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান - ইত্যাদি। 

প্রচলিত খেলাধুলা : ক্রিকেট , ফুটবল , ভলিবল - ইত্যাদি। 

[ এছাড়াও যারা আরো বেশি তথ্য উপস্থাপন করতে চাও তারা পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত '' বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস ( দ্বাদশ শ্রেণি ) '' বইয়ের প্রথম প্রকল্পটি দেখতে পারো ; পৃষ্ঠা ১৪৬ ] 

মালদা জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের অন্তর্গত যদুপুর -২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেশপুর গ্রাম সম্পর্কে সমীক্ষাপত্রটি নির্মিত হয়েছে। সংগৃহিত উপরোক্ত তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামটি সম্পর্কে নিম্নলিখিত আলোচনা উপস্থাপন করা হল।   
A. গ্রামটির জনসংখ্যা বহুলতার দিকে হলেও গ্রামটিতে পুরুষের তুলনায় নারীর আনুপাতিক হার কম। 
B. শিক্ষাক্ষেত্রে সার্বিক সাক্ষরতার হার উল্লেখযোগ্য হলেও সর্বজনীন সাক্ষরতার নিশ্চয়তা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। 
C. গ্রামটিতে নারীশিক্ষা সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই। তবে খুব কম সংখ্যক মেয়েরাই বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পড়াশোনা করেছে বা করছে। 
D. গ্রামটিতে কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। এটি মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। তবে মাধ্যমিক পার্শ্ববর্তি গ্রামেই রয়েছে এবং সেখানেই এই গ্রামের শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করে। 
E. স্বাস্থ্য বিষয়ক ক্ষেত্রে গ্রামটি উন্নত। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত কর্মসূচিই গ্রামটিতে পালিত হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বিভিন্ন টীকাকরণ কর্মসূচি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচীগুলি পালিত হয়। 
F. পানীয় জলের ক্ষেত্রে গ্রামটিতে মিশ্র চিত্র চোখে পড়ে। পানীয় জলের ক্ষেত্রে গ্রামবাসীরা কূপ , নলকূপ ও পঞ্চায়েত কর্তৃক প্রদত্ত টাইমে কলের জল একমাত্র ভরসা। তবে গ্রামটিতে আর্সেনিকমুক্ত জলের কোনো ব্যবস্থা নেই। 
G. গ্রামটি প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ। নদী , পুকুর , কৃষিজমি , বনভূমি - ইত্যাদি সকলই গ্রামটিতে রয়েছে। বনভূমি বলতে মূলতঃ উদ্যানপালনের কথা বলা যায়। আম , লিচু , কলা , কাঁঠাল - এগুলির মধ্যে প্রধান। 
H. গ্রামে দুটি বড় আকৃতির খেলার মাঠ থাকার জন্য শিশু ও কিশোরদের খেলাধুলা বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই এবং গ্রামটিতে প্রতিনিয়ত ক্রিকেট , ফুটবল - ইত্যাদি খেলার চল আছে। 
I. গ্রামটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ হিন্দু হলেও বহুসংখ্যক মুসলিম পরিবারও বসবাস করেন এবং গ্রামটিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে বজায় আছে। 
J. গ্রামটিতে বেশিরভাগ মানুষ , প্রায় তিন - চতুর্থাংশ , কৃষিজীবী। এদের মধ্যে বহু মানুষের নিজেদের জমি নেই , তারা অপরের জমিতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। 
K. গ্রামটিতে প্রায় ১০% মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। এরা মূলতঃ অপরের জমিতে কাজ করেন বা শ্রমিকের কাজ করেন। কিন্তু সারা বছর হাতে কাজ না থাকায় তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হয়না। 
L. তবে যাদের নিজেদের কৃষিজমি আছে , যাঁরা নিজ উদ্যোগে হস্তশিল্প বা কুটির শিল্প স্থাপন করেছেন , যারা বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং যারা চাকুরীজীবি - তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা স্বচ্ছল। 
M. গ্রামটিতে পঞ্চায়েত পরিসেবার মিশ্র চিত্র দেখা যায়। জলসেচ ব্যবস্থা খুব উন্নতমানের হলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। 
N. গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও সন্ধ্যার পর রাস্তায় আলোর কোনো ব্যবস্থা পঞ্চায়েত থেকে করা হয়নি। ফলে সন্ধ্যার পর গ্রামের মানুষের চলাফেরার ক্ষেত্রে বিশেষ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। 
O. তবে বেকারদের জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য গ্রামের বেকার যুবক - যুবতীদের সচেতন ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েতটি এগিয়ে আছে। বিভিন্ন হস্তশিল্প , খাদ্য - প্রক্রিয়াকরণ - ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। 
P. সন্তানসম্ভবা স্ত্রীদের জন্য এবং মায়েদের জন্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করার ব্যবস্থা রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে করা হয়। 
Q. গ্রামের হিন্দু - মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের মানুষেরাই গ্রামের বিভিন্ন উৎসব - অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকর্মে অংশগ্রহণ করেন। 
R. গ্রামে প্রধান দুটি মেলা হয় যা গ্রামটির অর্থনীতির একটি মূল স্তম্ভ। এই দুটি মেলা বছরে দুবার করে অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলাগুলিতে প্রচুর কেনাকাটা হয় ; বিশেষ করে হস্তশিল্প ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের বিভিন্ন পণ্য প্রচুর পরিমানে ক্রয় - বিক্রয় করা হয়। 
S. এছাড়াও গ্রামের মানুষ ও পঞ্চায়েতের তরফে মন্দির উন্নয়ন , রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপন - ইত্যাদি কর্মকান্ডের ব্যবস্থা করা হয়। 
T. গ্রামে মোট দুটি বড় ক্লাব রয়েছে। এই ক্লাবের তরফে প্রতি বছর বিভিন্ন খেলার আয়োজন , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , বৃক্ষরোপন , নাটক - অভিনয় - ইত্যাদির আয়োজন করা হয়। 

উপসংহার :- 
উক্ত সমীক্ষাপত্রটির মাধ্যমে গ্রামটি সম্পর্কে বিস্তারিত চিত্র পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় গ্রামটি বর্ধিষ্ণু এবং দু - একটি ক্ষেত্র বাদ দিলে গ্রামটি উন্নত। বিশেষ করে শিক্ষা , সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি , শিশু ও নারী স্বাস্থ্য , কর্মসংস্থান বিষয়ে প্রশিক্ষণ - ইত্যাদি ক্ষেত্রে গ্রামটি কৃতিত্বের দাবী রাখে। 

সীমাবদ্ধতা :- 
সমীক্ষাপত্রটি রূপায়নকালে এবং রূপায়িত হওয়ার পর যেসকল ত্রুটি - বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতা দৃষ্টিগোচর হয়েছে - সেগুলি হল - 
১. সমীক্ষাপত্রটি রূপায়নকালে মাত্র ৫০ জন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সমীক্ষাপত্রটি আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলতে আরো বেশি সংখ্যক মানুষের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। 
২. সমীক্ষাপত্র রচনার সংক্ষিপ্ত পরিসরে একটি গ্রাম সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পরিবেশন ও তা বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি। 
৩. গ্রামবাসী কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য থেকেই সমীক্ষাপত্রটি রচিত হয়েছে। যদি সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ কোনো ভুল তথ্য প্রদান করে থাকেন , সেক্ষেত্রে সমীক্ষাপত্রটিও সেই দোষে দুষ্ট হতে বাধ্য। 

গ্রন্থপঞ্জি :- 
সমীক্ষাপত্রটি রচনা করা হয়েছে গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে এবং গ্রামটিকে পর্যবেক্ষণ করে। তবে সমীক্ষাপত্র নির্মাণের জন্য ধারণালাভের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত '' বাংলা ভাষা ও শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস ( দ্বাদশ শ্রেণি ) '' বিশেষভাবে সহায়ক হয়েছে।   

[ এখানে একটি নমুনা সমীক্ষাপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজের জন্য যারা সমীক্ষাপত্র নির্মাণ করতে চাও - তারা এই প্রকল্পটির সাহায্যে গ্রামের নাম ও অন্যান্য তথ্যের পরিবর্তন করে খুব সহজেই সমীক্ষাপত্র রচনা করতে পারো। ]     





You May Also Like

0 comments