অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের অবদান ।

by - September 03, 2022

অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের অবদান । 

অতীত ইতিহাস সংরক্ষণ ও পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা। 

উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাস প্রকল্প : অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের অবদান । 



অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের অবদান ।  


ভূমিকা :- 
সাধারণভাবে বলা যায় , জাদুঘর হল বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা , যেখানে ঐতিহাসিক , সাংস্কৃতিক , বৈজ্ঞানিক , শিল্প - বিষয়ক প্রভৃতি বিভিন্ন ধরণের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করে এবং তা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এক কথায় , বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে সেগুলি যেসব প্রতিষ্ঠান বা ভবনে সংরক্ষণ করে রাখা হয় - সেসব প্রতিষ্ঠানকে জাদুঘর বলে। 

জাদুঘর শুধুমাত্র একটি দর্শনীয় স্থান হিসাবেই বিবেচিত হয়না। অতীত সংগঠিত করার ক্ষেত্রে বা পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম। অন্যভাবে বলা যেতে পারে , অতীত ও বর্তমানের মধ্যে জাদুঘর একটি সংযোগসূত্র হিসাবে কাজ করে। বর্তমান প্রতিবেদনমূলক প্রকল্পটিতে অতীত ইতিহাস জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে ও অতীত সংগঠিত করার প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। 

যেসকল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্পটি রূপায়ণ করা হয়েছে সেগুলি হল - 
১. জাদুঘর সম্পর্কে সাধারণ ধারণা অর্জন। 
২. অতীত ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে জাদুঘরের ভূমিকা কতটা - সে সম্পর্কে জানা। 
৩. অতীত ও বর্তমানের মধ্যে যোগসূত্ররক্ষাকারী হিসাবে জাদুঘরের ভূমিকা পর্যালোচনা করা। 
৪. ইতিহাস চর্চার একটি উপাদান ও মাধ্যম হিসাবে জাদুঘরের ভূমিকা আলোচনা করা। 
৫. সর্বোপরি , জাদুঘর সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী করে তোলা। 

প্রকল্পটির গুরুত্ব :- 
যেসকল কারণে প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হতে পারে , সেগুলি হল - 
১. প্রকল্পটির মাধ্যমে অতীতের সাংগঠনিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। 
২. প্রকল্পটির মাধ্যমে জাদুঘর সম্পর্কে সাধারণ ধারণা অর্জন সম্ভব। 
৩. ইতিহাস চর্চার একটি মাধ্যম হিসাবে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কে জানা যাবে। 
৪. অতীত সমাজ ও সভ্যতার ধারণা দানে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কে জ্ঞানলাভ সম্ভব। 
৫. জনসচেতনতা ও জ্ঞানের প্রসারে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা গঠন সম্ভব। 
৬. সর্বোপরি , প্রকল্পটির মাধ্যমে জাদুঘর সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সহজেই কৌতূহলী করে তোলা সম্ভব। 

কর্মপরিকল্পনা / পদ্ধতিগত দিক :- 

প্রকল্পটি নির্মাণ করতে যেসকল পদ্ধতি ও পরিকল্পনা অনুসরণ করা হয়েছে সেগুলি হল -   

>> বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিষয়ের মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকা X মহাশয় / মহাশয়া কর্তৃক প্রকল্পের বিষয়বস্তু নির্বাচন। 

>> বিষয় নির্বাচনের পর মাননীয় শিক্ষক মহাশয় / মাননীয়া শিক্ষিকা মহাশয়া - প্রকল্প রূপায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগত দিকগুলি সম্পর্কে আলোকপাত করেন। 

>> মাননীয় শিক্ষক মহাশয় / মাননীয়া শিক্ষিকা মহাশয়া - র নির্দেশমত বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠ করে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। 

>> সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া প্রতিবেদন রচনা করে সেটি মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নিকট উপস্থাপন করা হয় এবং তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধনের নির্দেশ প্রদান করেন। 

>> মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নির্দেশমত প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর পুনরায় প্রকল্পটি প্রস্তুত করা হয়। 

>> প্রয়োজনীয় চিত্র সংগ্রহ করে সেগুলি প্রতিবেদনে সংযোজিত করা হয়। 

>> পূর্ণাঙ্গ প্রকল্পটি বিদ্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। 


তথ্য সংগ্রহ / পরীক্ষামূলক উপাদান :- 

প্রকল্পটির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ইতিহাস বিষয়ের মাননীয় শিক্ষক / মাননীয়া শিক্ষিকার নির্দেশমত বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠ করে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যগুলিকে সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করা হল। 

সংস্কৃতি হল একটি সমষ্টিগত আচরণ , অনুষ্ঠান , রীতিনীতি পালন , বিশ্বাস , বসবাস , ব্যবহার্য বস্তু , পোশাক , শিল্প , পেশা - ইত্যাদির ধারণ ও ব্যবহারের রূপ। একটি জাতি কতটা উন্নত - তা তার সংস্কৃতি থেকেই বোঝা যায়। 

আবার , সংস্কৃতির একটি বিশেষ উপাদান হল ইতিহাস। এটি জাতির পূর্বপুরুষদের সকল সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। আমরা ইতিহাস থেকে সে সকল বিষয় জানতে ও ধারণ করতে পারি। এর ফলেই আমাদের বংশমর্যাদা , গৌরব , প্রথা - ইত্যাদি ফুটে ওঠে। আর এই ইতিহাসকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধারণ করে জাদুঘর। জাদুঘরেই রক্ষিত থাকে পূর্বপুরুষদের স্থাপনা , সমাজচিত্র ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। 

তাই আমাদের বর্তমান সভ্যতা ও সংস্কৃতির উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে , বর্তমান সভ্যতার আদিরূপ কেমন ছিল , সভ্যতার বিবর্তন - তা আমরা জাদুঘরের মাধ্যমেই জানতে পারি। জাদুঘর থেকে পাওয়া এই জ্ঞান আমাদের ভবিষ্যত গতিপথকে নির্দেশনা দিতে সাহায্য করে। এইভাবে আমাদের সার্বিক বর্তমান ও ভবিষ্যতের সাংস্কৃতিক উপাদান ঐতিহ্য নিরুপনে সাহায্য করে জাদুঘর। শাসন , বিচার , সামাজিক ও রাজনৈতিক দর্শন , আদর্শ - ইত্যাদির ধারণা আমরা জাদুঘর থেকে পাই - যা আমাদের বর্তমান সভ্যতার ধারক ও বাহক হয়ে ওঠে। 

অতীত পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কিত প্রতিবেদন রচনার জন্য তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে মূলতঃ তিন ধরনের তথ্য সংগ্রহের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। যেমন - 
(ক ) জাদুঘরের উৎপত্তি ও বিকাশ। 
(খ ) জাদুঘরের শ্রেণীভাগ। 
(গ ) জাদুঘরের কার্যাবলী। 

তথ্য বিশ্লেষণ / প্রকল্পের বর্ণনা / প্রকল্পের ব্যাখ্যা :- 

[ এই অংশে যেকোনো পাঠ্যবই বা নোটবই থেকে তিনটি টপিক লিখতে হবে -  (ক ) জাদুঘরের উৎপত্তি ও বিকাশ , (খ ) জাদুঘরের শ্রেণীভাগ ,  (গ ) জাদুঘরের কার্যাবলী। যেকোনো ইতিহাস পাঠ্যবই বা নোট বইয়ের প্রথম অধ্যায়ের শেষের দিকে পেয়ে যাবে। ] 

সিদ্ধান্তগ্রহণ / উপসংহার :- 
উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে , জাদুঘর হল অতীত ইতিহাস , সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। জাদুঘর অতীত ঐতিহ্য ও বর্তমানের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে ও ভবিষ্যতের পথ নির্দেশ করে। তাই জাদুঘর কেবলমাত্র দর্শনীয় স্থান নয় ; এটি ইতিহাসের অন্যতম উপাদান হিসাবে বিবেচিত। তাই জাদুঘর সম্পর্কে এবং তার ভূমিকা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন প্রতিটি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে আবশ্যিক। 

পাঠের সীমাবদ্ধতা :- 
প্রকল্পটি রূপায়নকালে এবং রূপায়িত হওয়ার পর যেসকল ত্রুটি - বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতা দৃষ্টিগোচর হয়েছে - সেগুলি হল - 
(ক ) জাদুঘর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন ছিল। 
(খ ) ইতিহাসের উপাদান হিসাবে জাদুঘরের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। 
(গ ) বিভিন্ন প্রকার জাদুঘরের দৃষ্টান্তগুলি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করা হয়েছে। 
(ঘ ) শিক্ষার্থীদের ইতিহাস জানার পিপাসা জাদুঘর কীভাবে চরিতার্থ করে - সে সম্পর্কে প্রতিবেদনটিতে আলোচনা অনুপস্থিত। 
(ঙ ) স্থানীয় এলাকার জাদুঘরগুলির উল্লেখ প্রকল্পে নেই। 
(চ ) অতীত সংরক্ষণ ও পুনর্গঠনে জাদুঘরের ভূমিকা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিকদের কোনো মতামত প্রকল্পটিতে লিপিবদ্ধ হয়নি। 

গ্রন্থপঞ্জি :- 
যেসকল গ্রন্থগুলি থেকে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে - সেগুলি হল - 
১. ভারত ও বিশ্বের ইতিহাস - জীবন মুখোপাধ্যায় ও ডক্টর সুভাষ বিশ্বাস। 
২. ভারতের ইতিহাস - অতুল চন্দ্র রায়। 
৩. ভারতের ইতিহাস ( স্নাতক ) - জীবন মুখোপাধ্যায়। 

    

You May Also Like

0 comments